সরু রাস্তায় চলছে ট্রাক। তার মধ্যেই রাস্তার অর্ধেক জুড়ে বসেছে বাজার। ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়।
• বিদ্যুৎ চলে গেলে পানীয় জলও মেলে না বললেই চলে। ফলে রোজই সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এ ছাড়াও দাঁইহাট শহরে এলাকা খুবই কম। পুরসভা বাঁচাতে গেলে এলাকা বাড়ানো দরকার বলে মনে হয়।
সন্দীপ দাস, সমাজবাটি পাড়া
পুরপ্রধান: বিদ্যুৎ চলে গেলে পানীয় জলের সমস্যা চিরন্তন। তবে আগের থেকে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা উন্নতির জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ করা হয়েছে। পরিকাঠামো বাড়ানোর জন্য একটি জলাধার ও দুটি পাম্প বসানোর অনুমতি চাওয়া হয়েছে। আর এলাকা বাড়ানোর জন্য একটা প্রস্তাব আগেই পাঠানো হয়েছিল। ফের উদ্যোগী হব।
• সম্প্রতি পুরসভার উদ্যোগে নাগরিক কনভেনশন হয়েছিল। সেখানে জানা গিয়েছে, পুরসভার আয়ের থেকে ব্যয় বেশি। আবার আয়ের একটা বড় অংশ নানা কর্মীদের মাইনে দিতে চলে যাচ্ছে। এর জন্য কী পুর-উন্নয়ন ব্যহত হচ্ছে না?
সুজিত কুণ্ডু, কাঁসারিপাড়া
পুরপ্রধান: আপনার বক্তব্যের সারবত্তা রয়েছে। উন্নয়নের টাকার বেশির ভাগটাই বেতন দিতে গিয়ে চলে যাচ্ছে। নানা সমস্যার মধ্যে আমাদের চলতে হচ্ছে। প্রচুর টাকা দেনা নিয়ে পুরসভা চালাতে হচ্ছে।
• পুরসভা আয় বাড়াতে জলের প্ল্যান্ট করুক। এতে এক দিকে আয় বাড়বে, তেমনি কর্মসংস্থানও হবে। এ ছাড়া পুরসভা আবর্জনা নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলছে না বলে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। কিছু ভেবেছেন?
দেবু পোদ্দার, সুভাষ রোড
পুরপ্রধান: আপনার প্রস্তাবটা সত্যিই অসাধারণ। এ নিয়ে আমরা চিন্তা ভাবনা করব। আর দ্বিতীয় প্রশ্নের ক্ষেত্রে বলব, পুরসভার নিজস্ব কোনও জায়গা নেই। আবার কিছু সমস্যা থাকায় রাজ্য সরকার থেকে পাওয়া একটা যন্ত্র ব্যবহার করতে পারছি না। ওই যন্ত্র চালাতে প্রচুর খরচ। আমাদের মতো ছোট পুরসভার ওই খরচ করার সামর্থ্য নেই।
• দাঁইহাট পুরনো ও ঐতিহাসিক শহর। শহরের প্রাচীনত্ব বজায় রাখার জন্য বিভিন্ন সৌধগুলিকে সংস্কার করা প্রয়োজন। পর্যটন শিল্পের উন্নতি হলে শহরের অর্থনৈতিক হালও ফিরবে বলে মনে হয়।
অশোক কয়াল, শবশিব তলা
পুরপ্রধান: বছর দশেক আগে পুরসভার হাত ধরে ওই সব সৌধ সংস্কার করা হয়েছিল। গড়ে তোলা হয়েছিল হেরিটেজ কমিটি। এখন অবশ্য তা থমকে গিয়েছে। খুব ভাল প্রশ্ন করেছেন। আমাদের আর্থিক সমস্যা রয়েছে, কিন্তু তার মধ্যেও দাঁইহাটকে বাঁচাতে উদ্যোগী হব।
• পুরসভার জলস্তর দিন দিন কমছে। তার মধ্যে জল নষ্ট করার প্রবণতা বাড়ছে। দাঁইহাটের পাশে বেশ কয়েকটি ব্লকে আর্সেনিক রয়েছে। এই প্রবণতা বন্ধ না হলে আমাদের এখানেও আর্সেনিক দেখা দিতে পারে।
দেবীপ্রসন্ন বন্দ্যোপাধ্যায়, বাগটিকরা
পুরপ্রধান: আমরাও এখন আর্সেনিক আতঙ্কে ভুগছি। জলের অপচয় বন্ধ করার জন্য শহরবাসীকে সচেতন করতে হবে। প্রয়োজনে কঠোরও হব আমরা। আর আমাদের শহরকে কেন্দ্রীয় সরকারের যাতে ‘গঙ্গা অ্যাকশন প্লানে’র মধ্যে নিয়ে যেতে পারি, তার জন্য চেষ্টা করছি।
• দাসপাড়ার রাস্তা দীর্ঘদিন ধরে খারাপ। যাতায়াত করা যায় না। মোটরবাইক, সাইকেল নিয়ে যাতায়াতেও দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। রাস্তা সারাতে বালি-পাথর পড়েছিল। কিন্তু কাজ হয়নি।
নবদ্বীপ সরকার, মল্লিকবাটি
পুরপ্রধান: ওই রাস্তা কংক্রিট করার জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এলাকাবাসী দাবি তোলেন, পিচ রাস্তা করতে হবে। সে জন্য ঠিকাদার নির্মাণ সামগ্রী তুলে নিতে বাধ্য হন। এলাকার মানুষের দাবি অনুযায়ী, পিচ রাস্তা তৈরির চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।
• শহরের রাস্তা দিন দিন দখল হয়ে যাচ্ছে। বাজারের ভিতর জায়গা থাকার পরেও ব্যবসায়ীরা জিনিসপত্র নিয়ে রাস্তায় উঠে আসছেন। পাশাপাশি দোকানদারেরা রাস্তায় সামগ্রী রেখে রাস্তা দখল করছেন। ফলে যানজট আমাদের নিত্য সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর থেকে বেড়িয়ে আসার কী কোনও উপায় নেই। আরেকটি বড় সমস্যা হল, স্বাস্থ্য পরিকাঠামো একেবারেই নেই শহরে। দুপুর বেলাতেও ওষুধের দোকান বন্ধ থাকে। মুশকিলে পড়তে হয়।
বলরাম চট্টরাজ, রামসীতা পাড়া
পুরপ্রধান: একা পুরসভার পক্ষে এই সমস্যা মেটানো সম্ভব নয়। প্রতিটি স্তরের মানুষের সহযোগিতা প্রয়োজন। প্রশাসনকেও পাশে পেতে হবে। ব্যবসায়ীর সমিতির সঙ্গে যৌথ ভাবে অভিযান করা যায় কি না দেখতে হবে। ওষুধের দোকান দিনের বেলায় খুলে রাখার ব্যাপারে এবং রাতে অন্তত একটি দোকান খুলে রাখা যায় কি না তা নিয়ে বিসিডিএ-র সঙ্গে কথা বলব।
• শহরের নিকাশি ব্যবস্থা খুবই খারাপ। বৃ্ষ্টির জল নর্দমা উপচে পড়ে।
তপন রক্ষিত, কালীতলা
পুরপ্রধান: নিকাশি নিয়ে সমীক্ষা করা হয়েছে। ২ কোটি টাকার একটা প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।
• জলাধার বাড়ানো দরকার। এত দিনেও আমরা পরিস্রুত পানীয় জল পাচ্ছি না।
মিনতি মণ্ডল, পুরনো বিডিও অফিস পাড়া
পুরপ্রধান: জলের সমস্যা মেটানোর আপ্রাণ চেষ্টা করছি।