—প্রতীকী চিত্র।
দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন (ডিভিসি) অন্ডালে কয়লা ব্লক নিতে আগ্রহী। ইসিএল সূত্রে খবর, অন্ডালের কাজোড়া এলাকায় অন্ডাল-বাবুইশোল কয়লা ব্লকে প্রায় ১০ কোটি টন কয়লা মজুত রয়েছে। প্রায় ৯০০ হেক্টর এলাকা জুড়ে এই ব্লক রয়েছে। এখান থেকে কয়েক দশক ধরে কয়লা উৎপাদন হবে বলে ধারণা। ডিভিসি-র চেয়ারম্যান এস সুরেশ কুমার শুক্রবার এলাকা পরিদর্শন করেন।
কয়লা উৎপাদন ও পরিবহণ নিয়ন্ত্রণে রেখে কয়লা বাবদ ব্যয় কমিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচ কমাতে চায় ডিভিসি। সে জন্য নিজস্ব খনির ব্যবস্থা করতে চায় সংস্থা। কোল ইন্ডিয়ার আওতার বাইরে থাকা খনির খোঁজ চলছে। শুক্রবার সংস্থার টেকনিক্যাল সদস্য এম রঘুরাম, সিজিএম সুশীলকুমার ঝা, প্রযুক্তিগত উপদেষ্টা সুভাষ সিংহকে নিয়ে কাজোড়ার ওই কয়লা ব্লক পরিদর্শন করেন ডিভিসি-র চেয়ারম্যান। সেখানে ইসিএলের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর (অপারেশন) নীলাদ্রি রায়, কাজোড়া কোলিয়ারি কর্তৃপক্ষ কয়লা ব্লক সম্পর্কে তাঁদের প্রয়োজনীয় তথ্য দেন। জানা গিয়েছে, এখান থেকে খোলামুখ এবং ভূগর্ভস্থ উত্তোলন, দু’রকমই করা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্ডাল-বাবুইশোল কয়লা ব্লক আগে ইসিএলের অধীনে ছিল। এখানে ইসিএলের ঘনশ্যাম কোলিয়ারি ছিল, যেখান থেকে বিভিন্ন পর্যায়ে কিছুটা কয়লা উৎপাদন হয়েছিল। তবে সেই খনি ২০০১ সাল থেকে বন্ধ রয়েছে। ২০১৪ সালে এই কয়লা ব্লকের এলাকা কয়লা মন্ত্রকের অধীনে চলে যায়। এখন কোল ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষ এই কয়লা ব্লক স্বাধীন ভাবে কোনও সংস্থার কাছে হস্তান্তরের জন্য তৈরি। শুক্রবার ডিভিসির চেয়ারম্যান দুর্গাপুর সফরে এসে এই কয়লা ব্লক পরিদর্শনের কাজও সারেন। পরে তিনি জানান, ঝাড়খণ্ডে ডিভিসির একটি কয়লা ব্লক রয়েছে। অন্ডালেও একটি ব্লক দেখা হয়েছে। এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কিছু হয়নি। এখানে দু’টি স্তর পর্যন্ত খোলামুখ খনির মাধ্যমে কয়লা উৎপাদন করা যাবে। তার নীচের কয়লা তুলতে গেলে ভূগর্ভস্থ খনির মাধ্যমে উৎপাদন করতে হবে। তিনি বলেন, ‘‘এই কয়লা ব্লক পেলে পরিবহণের খরচ কমবে। স্বাভাবিক ভাবেই বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচও কমবে।’’
অন্ডালের ডিএসটিপিএসে দু’টি ৫০০ মেগাওয়াটের ইউনিট রয়েছে। মেজিয়া ও রঘুনাথপুরে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে। এ ছাড়া, দুর্গাপুরের ডিটিপিএসে ৮০০ মেগাওয়াটের নতুন ইউনিট নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। ফলে, কয়লার চাহিদা আরও বাড়বে। এখন মূলত কোল ইন্ডিয়ার বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে কয়লা সংগ্রহ করে কাজ চালায় ডিভিসি। অন্ডাল-বাবুইশোল কয়লা ব্লক পাওয়া গেলে সেখান থেকে এই সব তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের দূরত্ব খুব বেশি নয়। তা ছাড়া, এই কয়লা ব্লক জাতীয় সড়ক থেকে কয়েকশো মিটার দূরে হওয়ায় পরিবহণেরও সুবিধা হবে।
ইসিএলের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর (অপারেশন) নীলাদ্রি বলেন, ‘‘কয়লা ব্লকটি প্রায় ৯০০ হেক্টর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। প্রায় ১০ কোটি টন কয়লা মজুত রয়েছে। আগামী ৪০-৫০ বছর ধরে এখান থেকে কয়লা উৎপাদন হতে পারে। ডিভিসি-র চেয়ারম্যান বিশদ তথ্য নিয়েছেন।’’