প্রতীকী ছবি।
উপলক্ষ, দুর্গাপুরের বীরভানপুর শ্মশানের বেহাল বৈদ্যুতিক চুল্লি। তা সংস্কারে দুর্গাপুর পুরসভার মেয়র দিলীপ অগস্তির ‘সদিচ্ছার অভাব’ দেখা যাচ্ছে বলে সংবাদমাধ্যমের কাছে প্রকাশ্যেই তোপ দেগেছেন পুরসভারই ৪ নম্বর বরো চেয়ারম্যান চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়। এই চাপান-উতোরের মধ্যে তৃণমূলের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা দলীয় ‘কোন্দলের’ ছায়া দেখছেন। তবে প্রকাশ্যে দুই নেতাই দ্বন্দ্বের অভিযোগ মানেননি।
পুরসভা সূত্রে জানা যায়, শ্মশানে থাকা একটি চুল্লি দীর্ঘদিন ধরে খারাপ পড়ে রয়েছে। অন্যটিতে দাহ হলেও প্রায়ই সেটিও বিকল হয়ে যায় বলে অভিযোগ শ্মশানযাত্রীদের। অথচ, সেখানে দিনে গড়ে ১২-১৪টি দেহ দাহ হয়। কিন্তু শ্মশানকর্মীদের একাংশ জানান, মাসে গড়ে এক দিন করে চুল্লি বিকল থাকে। তখন কাঠের চিতায় দাহ করতে হয়। কিন্তু তাতে দূষণ ছড়ানোর অভিযোগ ওঠে। বাড়ে শবদাহের খরচও। চলতি বছরেই ৮ ও ২৩ ফেব্রুয়ারি, ১০ এপ্রিল, ১৫ মে, ১৫ ও ১৮ জুন এবং ২৬ জুলাই এক বেলা করে চুল্লিটি বিকল পড়েছিল। শ্মশান পরিচালন কমিটির সম্পাদক শ্যামল আচার্য বিষয়টি পুরসভাকে জানিয়েছেন বলে জানান।
এই পরিস্থিতিতে বরো চেয়ারম্যান চন্দ্রশেখরবাবু জানান, সাত লক্ষ টাকা ব্যয় করে মেরামতি করলে একটি চুল্লি চালু হয়ে যাবে। দু’টি চুল্লি ঠিক ভাবে মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ৩২ লক্ষ টাকা প্রয়োজন। কিন্তু তাঁর অভিযোগ, ‘‘যখনই চুল্লি ও শ্মশান সংস্কারের কথা বলি, মেয়র কোনও না কোনও অছিলায় দেরি করেন বলে আমার মনে হয়। অথচ, এটা অত্যন্ত জরুরি একটা কাজ। বিশেষ করে এই পরিস্থিতিতে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে চরম সঙ্কট হতে পারে। দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার। আমি এ বিষয়ে মেয়রের সদিচ্ছার অভাব দেখছি।’’
যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মেয়র দিলীপবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘গুরুত্বের সঙ্গেই শ্মশান সংস্কারের বিষয়টি ভাবা হয়েছে। প্রয়োজনীয় অর্থ রাজ্য সরকার দেবে। ইতিমধ্যেই সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে।’’ এর পরেই নাম না করে তাঁর তোপ, ‘‘কেউ যদি কিছু না জেনে উল্টোপাল্টা মন্তব্য করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চান তা হলে কিছু বলার নেই। আমার বিরুদ্ধে দলভারী করে কোনও লাভ হবে না।’’
এই টানাপড়েনের মধ্যে তৃণমূলের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের একাংশ কোন্দলের ছায়া দেখছেন। তাঁদের মতে, দলের কাউন্সিলরদের মধ্যেও বিভাজন দেখা যাচ্ছে। এমনকি, রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক দলের জেলা চেয়ারম্যান ঘোষণা হওয়ার পরে, সিটি সেন্টারে আয়োজিত সংবর্ধনা সভায় মেয়র-সহ সঙ্গী কাউন্সিলরদের দেখা যায়নি। আবার জেলা সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারির সংবর্ধনা সভায় মেয়র ও দলের অন্দরে তাঁর অনুগামী বলে পরিচিত কাউন্সিলরদের দেখা গিয়েছে বলে তৃণমূলের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের একাংশের দাবি। মলয়বাবু ও জিতেন্দ্রবাবু দু’জনেই অবশ্য বলেন, ‘‘বিভেদ ভুলে সবাই মিলে একজোট হয়ে কাজ করতে হবে।’’