এগিয়ে আসছে দিন। পুজোর জন্য প্রতিমা তৈরির কাজ প্রায় শেষের পথে।আলো জ্বলবে কবে , প্রশ্ন শহরবাসীর।ছবি: জয়ন্ত
পুজোর সময়ে জিটি রোডে আলো জ্বালানোর ব্যবস্থা করা হোক, দাবি উঠল প্রশাসনের সঙ্গে পুজো কমিটিগুলির সমন্বয় বৈঠকে। তা শোনার পরেই দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিলেন জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) বিজয় ভারতী। মঙ্গলবার প্রশাসনের সঙ্গে পুজো কমিটির কর্তাদের বৈঠকে করোনা পরিস্থিতিতে কী ভাবে পুজো হবে, সে নিয়েও আলোচনা হয়। প্রতি মণ্ডপে রাতে স্বেচ্ছাসেবীদের পাহারায় রাখতে হবে বলে জানিয়েছেন জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়। সে জন্য পুজো কমিটিগুলিকে স্বেচ্ছাসেবীদের তালিকা থানায় জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার সংস্কৃতি লোকমঞ্চে এই বৈঠকে ছিলেন জেলাশাসক বিজয় ভারতী, অতিরিক্ত জেলাশাসক অরিন্দম নিয়োগী, রজত নন্দ, পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) প্রণব রায়-সহ পুলিশ ও প্রশাসনের বিভিন্ন বিভাগের কর্তারা। কী ভাবে পুজোর জন্য আবেদন করতে হবে, সভা শুরুতে সে নিয়ে আলোচনা করা হয়। এর পরে, সিএমওএইচ করোনার জন্য উপযুক্ত বিধিনিষেধ মেনে পুজো করার কথা জানান। প্যান্ডেলে ভিড় জমতে না দেওয়া, মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা, মণ্ডপ জীবাণুমুক্ত করা-সহ নানা বিষয় জানানো হয় পুজোর কর্তাদের। বিদ্যুৎ, অগ্নি নির্বাপণ এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তরফেও নিয়মনীতির কথা জানানো হয়।
পুলিশ সুপার জানান, প্রতি পুজো কমিটিকে পুজোর সময়ে রাতে বিশেষ স্বেচ্ছাসেবী রাখতে হবে, যাঁরা রাত জেগে মণ্ডপ পাহারা দেবেন। পুজো কমিটিগুলি সূত্রে জানা গিয়েছে, এ ধরনের নির্দেশ এ বারই প্রথম দেওয়া হল। পুলিশ সুপার জানান, সব মণ্ডপে সারা রাত পাহারা দেওয়ার মতো পুলিশকর্মী মোতায়েন করা সম্ভব নয়। কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে, তাই পুজো কমিটিগুলিকে এই বিষয়ে দায়িত্ব নিতে বলা হয়েছে।
সভার শেষ দিকে জিটি রোডে আলো না থাকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন নবাবহাট লাগোয়া নেতাজিনগর সর্বজনীন পুজো কমিটির কর্তা প্রণবেশ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, ‘‘গোলাপবাগ থেকে নবাবহাট পর্যন্ত রাস্তায় আলো জ্বলে না। পুজোর সময়ে আলোগুলি যাতে জ্বলে, সে ব্যাপারে নজর দিলে ভাল হয়।’’ সকলেই এই মত সমর্থন করেন। জেলাশাসক বলেন, ‘‘পুরসভাকে বলব, পুজোর আগে রাস্তায় গর্ত, আলো, নর্দমার ব্যাপারগুলো একটু দেখে দিতে।’’ দীর্ঘদিন ধরেই জিটি রোডের মাঝে উচ্চ বাতিস্তম্ভের আলোগুলি জ্বলে না বলে অভিযোগ শহরে। পুলিশ লাইন এলাকা, গোলাপবাগ থেকে নবাবহাট পর্যন্ত জিটি রোডের বড় অংশ সন্ধ্যা নামলেই আঁধারে ডুবে যায়। জেলাশাসকের আশ্বাসে তাঁরা খুশি বলে জানান পুজো উদ্যোক্তারা।
জেলাশাসক বলেন, ‘‘পুজোর দিনগুলিতে কোনও সমস্যা যাতে না হয়, সে জন্য প্রশাসনের তরফে হেল্পলাইন চালু থাকবে। স্বাস্থ্য দফতরও হেল্পলাইন চালু করেছে।’’ তিনি জানান, করোনা সংক্রান্ত পরিষেবা, পুজো এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষার সঙ্গে যুক্ত সরকারি কর্মীদের পুজোর ছুটি বাতিল করা হয়েছে।