স্টলে বসে একমনে জিনিস তৈরি শিল্পীর। নিজস্ব চিত্র
আবহাওয়া দফতরের প্রকাশিত তালিকা জানাচ্ছে, পূর্ব বর্ধমানের তাপমাত্রা রবিবার ঘোরাফেরা করছে ৪২ ডিগ্রির আশপাশে। বেলা বাড়লেই রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। খুব প্রয়োজন না হলে কেউ বাইরে পা রাখছেন না। তাপপ্রবাহের অভিঘাতে টান পড়েছে আউশগ্রামের দ্বারিয়াপুরে ডোকরা মেলায় হস্তশিল্পের পসরা নিয়ে বসা শিল্পীদের। তাঁদের দাবি, মেলায় লোকজন তেমন আসেননি। বিক্রিও আশানুরূপ হয়নি।
রাজ্য সরকারের ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প, বস্ত্র দফতর এবং ইউনেস্কোর তত্ত্বাবধানে শনিবার মেলা শুরু হয়। শেষ হয়েছে রবিবার। মেলায় লোক টানতে বাউল গান, রায়বেঁশে, ঝুমুর-ছৌ নাচের আয়োজন করা হয়েছিল। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ডোকরা পাড়ায় সারা বছরই পর্যটকদের আনাগোনা লেগে থাকে। শিল্পীদের বাড়িতে সাজানো থাকে সামগ্রী। মেলা উপলক্ষে বাড়তি বিক্রির আশায় পাড়ার সমস্ত শিল্পীরা এক জায়গায় তাঁদের তৈরি শিল্পসামগ্রী নিয়ে বসেন। তাঁদের মধ্যে মিনতি কর্মকার, চম্পা কর্মকার, লক্ষ্মী কর্মকারেরা বলেন, “গরমের মধ্যে টেবিলে ডোকরার সামগ্রী সাজিয়ে বসে আছি। রোদ আর গরমে লোকজন তেমন আসছেন না। ক্রেতা না এলে বিক্রি হবে কী ভাবে?” এ দিন মেলায় গিয়ে দেখা যায়, কয়েক জন ক্রেতা কলকাতা এবং স্থানীয় এলাকা থেকে এসেছেন। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু পড়ুয়া এ দিন তাঁদের প্রোজেক্টের কাজের জন্য ডোকরা পাড়ায় আসেন। দিকনগরের বাসিন্দা লোকেশ দত্ত এবং বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া শ্রাবণী রায়, মুনমুন ঘোষেরা বলেন, “প্রচণ্ড গরমে ক্রেতা-বিক্রেতা, সকলেরই কষ্ট হচ্ছে। মেলার আয়োজকদের এই বিষয়টা ভাবা উচিত ছিল।”
ডোকরা শিল্পী শুভ কর্মকার, অশোক কর্মকারেরা বলেন, “কোভিডের পর থেকে মেলা বন্ধ ছিল। এ বার মেলা হচ্ছে। আগামী বছর অন্য সময়ে মেলা করার আবেদন জানাব।” শিল্পীদের দাবি, মেলার দু’দিনে মোট ৭০-৮০ হাজার টাকার জিনিস বিক্রি হয়েছে। জেলা শিল্পকেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার (পূর্ব বর্ধমান) অভিজিৎ কর বলেন, ‘‘তীব্র গরমের প্রভাব পড়েছে মেলায়। এই সময়ে ডোকরা শিল্পীদের তৈরি সামগ্রীর বিক্রি সে ভাবে হয় না। এই মেলায় ওঁদের কিছু জিনিসপত্র বিক্রি হয়েছে। পাশাপাশি, ভাল অঙ্কের টাকার বরাত পেয়েছেন তাঁরা।’’