আরজি কর হাসপাতালের ঘটনার প্রতিবাদে মোমবাতি মিছিল বর্ধমান মেডিক্যালের পড়ুয়াদের। ছবি: উদিত সিংহ।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ঘটনার প্রেক্ষিতে আঙুল উঠেছে হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থার দিকে। এই পরিস্থিতিতে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজেও চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিয়ে উঠল প্রশ্ন। নিরাপত্তা জোরদার করার দাবিতে শনিবার মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করে আন্দোলনরত চিকিৎসকদের একটি প্রতিনিধি দল। যদিও কর্তৃপক্ষের দাবি, শুক্রবারই নিরাপত্তা কঠোর করার বিষয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শনিবার পুলিশ সুপারের কাছে নিরাপত্তা আরও বাড়ানোর আর্জি জানানো হয়েছে। নিরাপত্তা নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।
শনিবার সকাল থেকেই বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের জরুরি বিভাগের সামনে আন্দোলনে বসেন মেডিক্যাল কলেজের স্নাতকোত্তর পড়ুয়া (পিজিটি) চিকিৎসকেরা। তাঁরা আরজি কর হাসপাতালের ঘটনার পাশাপাশি বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তাঁদের অভিযোগ, রাতবিরেতে হাসপাতালে কাজ করার সময়ে
তাঁদের কাছে অনায়াসেই পৌঁছে যান রোগীর পরিবারের লোকজন। যা বাঞ্ছনীয় নয়। হাসপাতালেরর ভিতরে রোগীর পরিজনের প্রবেশে নির্দিষ্ট নিয়ম আছে। তা মানা হয় না বলেই অভিযোগ।
কর্তব্যরত মহিলা চিকিৎসকদের জন্য ‘অন ডিউটি রুম’ নেই বলেও অভিযোগ। মহিলা শৌচাগার না থাকা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন চিকিৎসকেরা। চিকিৎসক মধুরিমা বন্দ্যোপাধ্যায়, পামেলা খাতুনেরা বলেন, ‘‘মেডিক্যাল কলেজের হস্টেল থেকে হাসপাতালের দূরত্ব প্রায় এক কিলোমিটার। রাতেও আমাদের কাজ করতে হয়। রাত বা ভোরের দিকে রাস্তা দিয়ে একা ফিরতে হয়। এই সময়ে কোনও নিরাপত্তা থাকে না। রাতের দিকে টোটোও থাকে না।
ফলে, অন্ধকার রাস্তা দিয়ে হেঁটেই ফিরতে হয়।’’
হস্টেল এবং হাসপাতালের বিভিন্ন অংশে সিসি ক্যামেরা না থাকা, তুলনায় কম নিরাপত্তারক্ষী থাকা নিয়েও ক্ষোভ রয়েছে চিকিৎসকদের। সুস্মিতা দাসের কথায়, ‘‘বর্ধমান মেডিক্যালের বিভিন্ন সমস্যা আরও বেশি করে প্রতিবাদে তুলে আনা হচ্ছে আজ। কারণ, গাফিলতি ছিল বলেই কলকাতায় এই রকম একটা ঘটনা ঘটে গেল। তাই সতর্ক হওয়ার সময় হয়েছে।’’
বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ মৌসুমি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নিরাপত্তা জোরদার করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শনিবার জেলার পুলিশ সুপারকে আরও ১০ জন সিভিক ভলান্টিয়ার চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। যে সব জায়গায় সিসি ক্যামেরা নেই, সেখানে দ্রুত সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’ নির্মীয়মাণ হস্টেলের কাজ দ্রুত শেষ করে নিরাপত্তা ঢেলে সাজার দিকে নজর দেওয়া হবে বলেও তাঁর আশ্বাস।