—প্রতীকী চিত্র।
পঞ্চায়েতে ২৩ শতাংশের বেশি ভোট পেলেও লোকসভায় নেমে এসেছে ১০.৬১ শতাংশে। কেন পঞ্চায়েতের ভোট ধরে রাখা কেন গেল না, তা কারণ বুঝতে বুথভিত্তিক কাটাছেঁড়া শুরু হয়েছে পূর্ব বর্ধমানের সিপিএমে।
দলের জেলা নেতৃত্বের দাবি, শুধু দলের পরিজনদের মধ্যে কথা বলে নয়, সাধারণ মানুষ, এমনকি বিরোধী ভোটার বলে পরিচিতদের বাড়িতে গিয়েও কী কারণে তাঁরা ‘মুখ ফিরিয়ে’ থাকছেন, তার সরেজমিন রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্যে জেলার ৩১টি এরিয়া কমিটিকে বলা হয়েছে। ওই রিপোর্ট পাওয়ার পরেই জেলা নেতৃত্ব ফলাফলের ময়না-তদন্তে বসবেন।
সিপিএমের দাবি, পঞ্চায়েতে জেলায় দল পেয়েছিল ২৩.৫% ভোট। আবার জেলা পরিষদের প্রার্থীরা ভোট পেয়েছিলেন ১৭.৮৮%। এ বারের লোকসভার সময় মিটিং, মিছিল, পথসভা, বাড়ি বাড়ি প্রচারে গিয়ে মানুষের ‘সাড়া’ রয়েছে, বলে জোর গলায় দাবি করেছিলেন নেতা-কর্মীরা। ‘উৎসাহ’ দেখে দলের জেলা নেতারা একদা ‘লাল দুর্গে’ ভাল ভোটের ‘আশা’ করেছিলেন। তাঁদের ধারণা ছিল, পঞ্চায়েতের মতো না হলেও লোকসভা-বিধানসভার চেয়ে ভোট বাড়বে, এবং তা ২০ শতাংশের কাছাকাছি যাবে। কিন্তু দেখা গেল, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের মতো এ বারও একই ভোট পেয়েছে সিপিএম। তবে ২০২১ সালের বিধানসভার চেয়ে কিছু ভোট বাড়তি এসেছে।
সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর একাধিক সদস্যের দাবি, পঞ্চায়েতের মতো ভোট না বাড়লেও গত ৫ বছর জেলায় ভোটের শতাংশ প্রায় এক রয়েছে। অর্থাৎ ভোট-ক্ষয় আটকানো গিয়েছে। বিজেপির ভোটে পড়তির দিকে। সেটা স্মরণে রেখে পর্যালোচনা রিপোর্টের পরে স্থানীয়-সহ নানা বিষয়ে মানুষের কাছে যাওয়ার পথ খুঁজতে হবে।
জেলা সিপিএম সূত্রের খবর, বুথ কমিটি থেকে জেলার মোট ৩১টি এরিয়া কমিটির কাছে রিপোর্ট যাবে। এরিয়া কমিটিগুলি তা পর্যালোচনা করে জেলায় পাঠাবে। জেলা নেতৃত্ব চূড়ান্ত রাজ্য কমিটির কাছে পাঠাবে। জেলা কমিটির কাছে সরেজমিন রিপোর্ট চলতি মাসেই দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সিপিএমের দাবি, এ বারের নির্বাচনের আগে পঞ্চায়েতের প্রাপ্ত ভোটকেই ‘বেস’ ধরা হয়েছিল। তার ধারে কাছে কেন পৌঁছনো গেল না, সেটাই পর্যালোচনার বিষয়। সেই কারণে শুধু দলের সমর্থক, পরিচিতদের মধ্যে কথা বলে রিপোর্ট না করে তার বাইরে অনেক মানুষের সঙ্গে কথা বলা হবে। প্রয়োজনে বুথ ধরে চিহ্নিত করে গোপনে কথা বলে প্রকৃত কারণ জানার চেষ্টা হবে।
জেলা স্তরে প্রাথমিক পর্যালোচনায় সিপিএম নেতাদের দাবি, সংখ্যালঘুদের সামাজিক ‘সুরক্ষা’ আর মহিলাদের মধ্যে অর্থনৈতিক ‘স্বাধীনতা’র ভাবনা লোকসভা ভোটে তৃণমূলকে সুবিধা দিয়েছে। কৃষকদের বড় অংশও ‘সুরক্ষা’ ও ‘আর্থিক সুবিধা’র কারণে তৃণমূলকে বেছেছে। সেই কারণে তফসিলিদের ভোট হারিয়েছে বিজেপি। যেটা সরাসরি তৃণমূলের ভোট-বাক্সে পড়েছে। তাতে বিজেপি আর তৃণমূলের ব্যবধানবেড়ে গিয়েছে।