কাটোয়ার কালিকাপুরে নৌকা ধরতে হয় জল পেরিয়ে। —নিজস্ব চিত্র।
দিন কয়েক আগে কাটোয়ার কালিকাপুর গ্রামে ভাগীরথীর ফেরিঘাটের কাছে দেখা মিলেছিল এক কুমিরের। সেই থেকে বন দফতরের উদ্যোগে কুমির নিয়ে সচেতনতা প্রচার চালানো হলেও আতঙ্ক এখনও পিছু ছাড়েনি এলাকাবাসীর। সেই আতঙ্ককে সঙ্গী করেই ফেরিঘাটে যাওয়ার পথে জমা হাঁটুসমান জল পেরিয়ে নৌকায় চাপতে হচ্ছে যাত্রীদের।
কালিকাপুর গ্রামের পড়ুয়াদের স্কুলে যেতে হয় নদী পেরিয়ে। এলাকাবাসীর একাংশের দাবি, ফেরিঘাটের কাছে বাঁধের নীচে কর্দমাক্ত কাশবনে শিকারের খোঁজে লুকিয়ে ছিল কুমিরটি। জল ডিঙিয়ে ফেরিঘাটে যেতে গিয়ে কুমিরের মুখে পড়ার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। ফেরিঘাটে যাওয়ার রাস্তা উঁচু করা উচিত প্রশাসনের।
ওই গ্রামের পড়ুয়া ঋত্বিক পোদ্দার ও প্রীতি সরকারের কথায়, “এই রাস্তা দিয়ে ফেরিঘাটে গিয়ে নৌকায় উঠতে হয়। নদী পার করে আমাদের অগ্রদ্বীপ গ্রামে স্কুলে যেতে হয়। রাস্তায় সারা বছর জল জমে থাকে। নৌকায় উঠতে গিয়ে পোশাক ভিজে যায়। ফেরিঘাটের কাছে কুমির দেখা দিয়েছে। জল ডিঙিয়ে যেতে ভয় লাগছে। রাস্তাটি চলাচলের যোগ্য করে তুললে উপকার হয়।”
কালিকাপুর গ্রামের অমল মণ্ডল, বিদ্যুৎ মাঝির মতো অনেকের দাবি, “প্রায় পাঁচ বছর ধরে রাস্তাটি বেহাল। সারাবছর জল জমে থাকে। মাঝেমধ্যে জল এতই বেড়ে যায় যে, ছোট নৌকা করে ফেরিঘাটে গিয়ে বড় নৌকায় চাপতে হয়। কার্যত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়। কুমিরের দজেখা মেলার পরে আতঙ্ক আরও বেড়েছে।’’
কালিকাপুর গ্রাম থেকে বহু মানুষ কাটোয়া শহরে আসেন। নদী পেরিয়ে নদিয়ার বেথুয়াডহরি, তেহট্ট, দেবগ্রামে যান অনেকে। সে কারণে ফেরিঘাটটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রশাসনের নানা স্তরে বারবার দুর্ভোগের কথা জানিয়েও লাভ হয়নি।
অগ্রদ্বীপ পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সমীর মণ্ডল বলেন, “রাস্তাটির জন্য এলাকাবাসী খুবই সমস্যায় রয়েছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আগামী মাসে রাস্তার কাজের দরপত্র ডাকার চেষ্টা হবে।” কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সমস্যা মেটানোর চেষ্টা হবে।”