—প্রতীকী চিত্র।
প্রৌঢ় দম্পতির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল কেতুগ্রামের আরনা গ্রামে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, মানসিক অবসাদে আত্মঘাতী হয়েছেন আরনা গ্রামের ক্যানালপাড়ের বাসিন্দা সমীর শেখ (৫৯) ও চেনাই বিবি (৫৪)। তাঁরা কেন আত্মঘাতী হলেন, সে নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে গ্রামে। পরিজন ও পড়শিদের একাংশের দাবি, দম্পতির মেয়ে লোকজন নিয়ে নিজের শ্বশুরবাড়িতে হামলা চালানোর অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন দিন দশেক আগে। তার পর থেকেই কার্যত বাড়ি থেকে বেরোচ্ছিলেন না ওই প্রবীণ দম্পতি। সোমবার সকালে ঘর থেকে তাঁদের দেহ মেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে দম্পতিকে ঘুম থেকে উঠতে না দেখে পড়শিরা ডাকাডাকি শুরু করেন। কিন্তু কোনও সাড়া না মেলায় দু’টি আলাদা ঘরের জানলা দিয়ে দু’জনের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান তাঁরা। খবর পেয়ে পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ময়না-তদন্তে পাঠায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দম্পতির এক ছেলে ও এক মেয়ে। ছেলে কেরলে শ্রমিকের কাজ করেন। বাড়িতে দম্পতি পুত্রবধূকে নিয়ে থাকতেন। মেয়ের বিয়ে হয়েছিল পাশের গ্রাম নবস্তায়। তাঁর একটি ছেলে ও মেয়ে রয়েছে। পড়শি ও পরিজনদের অনেকের দাবি, বছর দুয়েক ধরে এলাকার এক
যুবকের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান মেয়ে।
সে নিয়ে দাম্পত্য কলহ বাড়তে থাকে। দুই পরিবারের তরফে তা মিটিয়ে নেওয়ার জন্য আলোচনায় বসলেও ফল হয়নি। উল্টে, দিন দশেক আগে মেয়ে লোকজন নিয়ে জামাইয়ের উপরে হামলা চালায় বলে অভিযোগ ওঠে। জামাইয়ের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ মেয়েকে গ্রেফতার করে। এখন তিনি জেল হেফাজতে রয়েছেন।
পড়শিদের একাংশের দাবি,
ওই ঘটনার পর থেকেই কার্যত
গৃহবন্দি হয়ে থাকছিলেন প্রবীণ দম্পতি। রবিবার পুত্রবধূ বাপের বাড়ি গেলে বাড়িতে দম্পতি ছাড়া কেউ ছিলেন না। সেই সুযোগেই মানসিক অবসাদে ভুগে তাঁরা আত্মহত্যা করেছে বলে অনুমান আত্মীয়দের। এ দিন কাটোয়ায় মর্গের সামনে দাঁড়িয়ে মৃত দম্পতির আত্মীয় সিরাজুল শেখের দাবি, ‘‘ওঁরা দেনা করে মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু মেয়ে অন্য
সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। মেয়ে গ্রেফতারের পরে দু’জনেই মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। কারও
সঙ্গে বিশেষ কথা বলতেন না। তবে তাঁরা এ ভাবে আত্মহত্যা করবেন, তা ভাবতে পারিনি।’’
পুলিশ জানায়, প্রাথমিক ভাবে অনুমান, ওই দম্পতি মানসিক অবসাদে ভুগে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। ময়না-তদন্তের রিপোর্ট বিষয়টা অনেকটা পরিষ্কার হবে।