বিহারপুর থেকে সিলামপুর, এই এলাকা নিয়েই উদ্বেগ। নিজস্ব চিত্র
বর্ষায় দামোদরে জল বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে রাতের ঘুম ছোটে পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসার বিহারপুর থেকে সিলামপুর, এই তিন কিলোমিটার এলাকার বাসিন্দাদের। তাঁরা জানান, ইতিমধ্যেই তলিয়ে গিয়েছে কয়েকশো বিঘা জমি। তাঁদের আশঙ্কা, দ্রুত এলাকা জুড়ে স্থায়ী বাঁধ তৈরি না করা হলে জনবসতিও দামোদরে তলিয়ে যাবে।
বর্ষায় দামোদর ভয়ঙ্কর রূপ নেয়। দুর্গাপুর লকগেট থেকে জল ছাড়ার হার বাড়লে কাঁকসা, গলসির বহু এলাকা প্লাবিত হয়। তীব্র ভাঙনের মুখে পড়ে ওই তিন কিলোমিটার এলাকা। কাঁকসার আমলাজোড়া পঞ্চায়েতের বিহারপুর, আয়মা, কেটেন, সিলামপুরের মতো গ্রাম দামোদর লাগোয়া। এই সব গ্রামগুলির বেশির ভাগ বাসিন্দা চাষাবাদের সঙ্গে যুক্ত।
স্থানীয় বাসিন্দা মোহিত পাল, তপন ঘোষেরা বলেন, ‘‘২০১৭-র বর্ষায় এই গ্রামগুলির বেশ কিছু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছিল। বহু বাড়ি, জমি নষ্ট হয়।’’ সিলামপুরের বাসিন্দা ধনু মীর, লিয়াকত আলিরা দামোদরের চরের দিকে আঙুল তুলে দেখিয়ে বলেন, ‘‘ওই ওখানে আমাদের জমি ছিল। দামোদর সব গিলেছে। জানি না, এ ভাবে আরও কত মানুষ জমি হারাবেন!’’
এলাকাবাসী জানান, ওই তিন কিলোমিটার এলাকায় বাঁধের জন্য প্রশাসনের কাছে দরবার করা হয়েছে। বছর পাঁচেক আগে সিলামপুর এলাকায় ব্লক প্রশাসন বালির বাঁধ তৈরি করে। কিন্তু জল বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দামোদর বাঁধ ভেঙে ঢুকে পড়ে গ্রামে। কাঁকসা ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ভাঙন রুখতে এলাকায় প্রায় পাঁচ বিঘা জমিতে ভেটিভার ঘাসও লাগানো হয়। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সে সবেরও চিহ্ন নেই বলে জানা গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সিলামপুরের বাসিন্দা খাদেম মোহর আলি-সহ আরও কয়েকজন বলেন, ‘‘যে ভাবে দামোদর এগিয়ে আসছে, তাতে দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হলে গ্রামগুলির অস্তিত্বের সঙ্কট হতে পারে। ঘর হারাতে পারেন বহু মানুষ।’’
বিডিও (কাঁকসা) সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘সমস্যার কথা শুনেছি। সেচ দফতরের সঙ্গে আলোচনাও হয়েছে।’’ সেচ দফতর জানিয়েছে, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।