কালনা খেয়াঘাট। নিজস্ব চিত্র।
নদিয়ার নৃসিংহপুর ও কালনা ফেরিঘাট দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার যাত্রী ভাগীরথী পারাপার করেন। পণ্যবাহী যানবাহনও পারাপার করানো হয়। যাত্রীদের অভিযোগ, দুই ঘাটেই নজরদারি অভাব রয়েছে। পরিকাঠামোও ভাল নয়।
২০১৬-এ কালনা খেয়াঘাটে নৌকাডুবিতে ২০ জনের মৃত্যুতে হুঁশ ফেরে প্রশাসনের। চালু হয় লঞ্চ পরিষেবা। নিরাপত্তা বাড়ানো হয় দুই ঘাটেই। কিন্তু তার পরে ফের আগের ছবি ফিরে আসে। যাত্রীদের একাংশ জানান, ভেসেলে সাধারণ যাত্রীদের ওঠার নিয়ম নেই। কিন্তু তা মানা হয় না। বুধবার রাতে নৃসিংহপুর ঘাটে ভেসেল থেকে ইট বোঝাই একটি
ট্রাক নদীতে পড়ে যায়। সেই ভেসেলে ছানার বালতি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা দু’জন সেই ট্রাকের ধাক্কায় নদীতে
পড়ে যান। এক জনের মৃত্যু হয়। রুনু কর্মকার নামে এক যাত্রী বলেন, ‘‘ভেসেল থেকে আগেও জলে ট্রাক পড়েছে। ঘটনার পরে গাড়ির চালক, খালাসিরা নিরাপদে পাড়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন। এ বার এক জনের মৃত্যু হল। ঘাটে নিরাপত্তাকর্মীরা সজাগ হলে ভেসেলে সাধারণ যাত্রী উঠতে পারতেন না।’’
আগে ঘাটে চারটি লঞ্চ ছিল। যাত্রী পরিবহণের জন্য রয়েছে দু’টি লঞ্চ। বাকি দু’টির মধ্যে কাঠের লঞ্চটি নষ্ট হয়েছে। একটি পরিবহণ দফতরকে ফেরত দেওয়া হয়েছে। যাত্রীদের
দাবি, লঞ্চের তলদেশে পাখনায় মাঝে মধ্যে কাপড় অথবা কচুরিপানা আটকে যায়। তখন লঞ্চ চলাচল করতে পারে না। সেটি না সারানো পর্যন্ত একটি লঞ্চে যাত্রী পরিবহণ হয়। তাতে সময় লাগে বেশি।
শুক্রবার সকালে একটি যাত্রিবাহী লঞ্চের পাখনায় কাপড় জড়িয়ে গিয়েছিল। সেটি বেশ কিছুক্ষণ বিকল হয়ে পড়ে থাকে নৃসিংহপুর ঘাটে। খেয়াঘাটের এক কর্মীর কথায়,
‘‘দু’টি লঞ্চের একটিতে যান্ত্রিক ত্রুটি রয়েছে। কালনা পুরসভার নজরে বিষয়টি আনা হয়েছে। যাত্রী পরিষেবা ঠিক রাখতে আরও অন্তত দু’টি লঞ্চ প্রয়োজন। পরিবহণ দফতরের সঙ্গে কথা বলে যাত্রিবাহী লঞ্চের ব্যবস্থা করা উচিত পুরসভার।’’
দুই ঘাটে যাত্রী ওঠানামার জন্য রয়েছে দু’টি জেটি। নৃসিংহপুর ঘাটের জেটিটি ডাঙায় উঠে যাওয়ার ফলে এখন আর যাত্রীরা সেটিতে উঠতে পারেন না। ইজারাদারদের তরফে
ঘাটে একটি ভেসেল রাখা হয়েছে। তাতেই যাত্রীদের ওঠানো নামানোর কাজ হয়। যাত্রীদের দাবি, কালনা খেয়াঘাটে জেটির সিঁড়িগুলির অবস্থা খারাপ। সেগুলি বদলানো দরকার। সিঁড়ির উপরে ছাউনি প্রয়োজন। কালনার উপপুরপ্রধান তপন পোড়েল বলেন, ‘‘সমস্যা নজরে এসেছে। সমাধানের চেষ্টা হচ্ছে।’’