আসানসোল রবীন্দ্র ভবন। ছবি: পাপন চৌধুরী।
রবীন্দ্র ভবনের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে নামছে আসানসোলের সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলি। আজ, রবিবার কুড়িটিরও বেশি সংগঠন মিলিত হয়ে তার রূপরেখা তৈরি করতে চলেছে বলেও খবর। সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা জানান, রবীন্দ্র ভবনের দৈনিক সাড়ে বারো হাজার টাকা ভাড়া ছিল। সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলির (অবাণিজ্যিক) থেকে পাঁচ হাজার টাকা নেওয়া হত। সেই ভাড়া দ্বিগুণ, অর্থাৎ ১০ হাজার টাকা হয়েছে। এতেইউঠছে প্রশ্ন।
আসানসোল ‘কথাপাত্র’র তাপস দত্ত জানান, ২৪ ও ২৫ ফেব্রুয়ারি নাট্য উৎসবের আয়োজন করেছিলেন। দিনে দশ হাজার টাকা করে ভাড়া দিতে হয়েছে। ‘উড়ান’ সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর সম্পাদক সুমিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘গ্রিন রুমের পরিকাঠামোর সমস্যা আছে। আলো, শব্দ ভাড়া করে নিয়ে যেতে হয়। তাতেও নিদেনপক্ষে ১২ হাজার টাকা লাগে।’’ রবীন্দ্র ভবনকে জনকল্যাণের কাজে কম খরচে ব্যবহার করতে না দিলে সরকারের কল্যাণমূলক কাজ নিয়ে প্রশ্ন উঠবে বলেও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলি অনেকের মত। ‘লজ্জা’ নাটকের জন্য নাট্য অ্যাকাডেমির তরফে পুরস্কৃত দল ‘চর্যাপদ’-এর পরিচালক রুদ্রপ্রসাদ চক্রবর্তী জানান, পুরসভার স্বার্থ সুরক্ষিত রেখে সমস্ত সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলি যাতে রবীন্দ্র ভবন ব্যবহার করতে পারে, সেই ব্যাপারে মেয়রের কাছে সম্মিলিত আবেদন জানানো হবে।
এই চর্চায় কলকাতার হলগুলির ভাড়ার অঙ্কও তুলনায় এসেছে। নাট্য অ্যাকাডেমির পুরস্কারপ্রাপ্ত স্বপন বিশ্বাসের প্রস্তাব, ‘‘কলকাতার রবীন্দ্র সদন, মধুসূদন মঞ্চ কিংবা গিরিশ মঞ্চে রবিবার পাঁচ হাজার, অন্য দিনে চার হাজার টাকা ভাড়া দিতে হয়। শিশির মঞ্চের ভাড়া দিনে তিন হাজার। এই নিরিখেই ভাড়া ঠিক হওয়া উচিত।’’ আসানসোল রেপার্টারি থিয়েটারের সভাপতি উৎপল রায়চৌধুরী, ‘ছেঁড়াপাতা’ সাহিত্য গোষ্ঠীর গৌতম সরকার জানান, সমস্ত সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলির আবেগ জড়িয়ে আছে রবীন্দ্র ভবনের সঙ্গে। অনেকের প্রস্তাব, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডকে উৎসাহ দিতে মেয়র নিজে সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলির সঙ্গে বসে ভাড়া ঠিক করলে সমাধান সূত্র বেরোতে পারে।
আসানসোল পুরসভার মেয়র পারিষদ (ক্রীড়া ও সংস্কৃতি) গুরুদাস চট্টোপাধ্যায় অবশ্য জানান, রবীন্দ্র ভবনে অনুষ্ঠান করতে গেলেই জেনারেটরের সাহায্যে বাতানুকূল যন্ত্র চালাতে হয়। তাতে দিনে প্রায় ৪০ হাজার টাকা খরচ। তাঁর কথায়, ‘‘পুরসভায় ফেব্রুয়ারি মাসের বোর্ড বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে রবীন্দ্র ভবনের খরচ ওঠাতে গেলে অবাণিজ্যিক অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে কমপক্ষে দশ হাজার টাকা দিতেই হবে। বাকিদের ক্ষেত্রে সেটা সাড়ে বাইশ হাজার টাকা।’’