ঘটনাস্থলে ভিড়। —নিজস্ব চিত্র।
গত এপ্রিলে শক্তিগড় ল্যাংচা হাবের সামনে খুন হন কয়লা কারবারি রাজু ঝা। ভর সন্ধ্যায় ল্যাংচার দোকানের সামনে জনবহুল এলাকায় গুলি করে খুন করা হয় রাজুকে। ঠিক চার মাসের ব্যবধানে শক্তিগড় থানার জোতরামে চলল গুলি। প্রথম ঘটনাস্থলের আড়াই থেকে তিন কিলোমিটার দূরে শুক্রবার সোনার দোকানের মালিকের উপরে গুলি চালানো হয়। সকাল হোক বা সন্ধ্যা বারবার এমন ঘটনায় নিরাপত্তা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। স্থানীয় বাসিন্দা, ব্যবসায়ীদের ক্ষোভ, রাতে বা ফাঁকা জায়গায় নয়, দিনেদুপুরে জনবহুল জায়গায় গুলি চালিয়ে দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যাচ্ছে। এতে বাড়ছে আতঙ্ক।
স্থানীয় হীরাগাছির বাসিন্দা, ব্যবসায়ী শিশির দত্ত বলেন, ‘‘টাকাপয়সা নিয়ে বাজারে বার হই। এ রকম ঘটনায় আমরা চরম আতঙ্কিত। দিনের বেলায় বাজারের মধ্যে গুলি চালিয়ে লুট করলে, আমাদের নিরাপত্তা কোথায়?’’ জোতরামের বুদ্ধদেব ঘোষ, পিকু ক্ষেত্রপালেরাও বলেন, ‘‘আমড়া এলাকায় রাজু ঝা খুনের পরে আমরা আতঙ্কিত ছিলাম। খুনের পর থানার কাছে গাড়ি রেখে পালিয়ে যায় আততায়ীরা। ফের চার মাসের মধ্যে দিনের বেলায় গুলি চালিয়ে লুটের চেষ্টা। ভাবতেই পারছি না।’’ এর সঙ্গেই রিভলবার এত সহজে সবার হাতে পৌঁছচ্ছে কী ভাবে, সেই প্রশ্নও তোলেন তাঁরা। ব্রাহ্মণপাড় এলাকার সুকান্ত বসু, স্বরূপ ঘোষেদের দাবি, প্রতিদিনই কাগজে দেখা যায় পুলিশ ডাকাত সন্দেহে জাতীয় সড়কের আশপাশ থেকে অনেককে গ্রেফতার করছে। আগ্নেয়াস্ত্রও উদ্ধার হয়। আবার অনেকে পালিয়েও যায়। এত সহজে দুষ্কৃতীরা পালাচ্ছে কী ভাবে, না কি আঁটঘাট বেঁধেই পরিকল্পনা করা হচ্ছে, সেই প্রশ্ন তোলেন তাঁরা।
পুলিশের দাবি, শক্তিগড়ের এই এলাকা থেকে নান্দুর হয়ে বর্ধমান-কালনা রোড পাওয়া যায়। ওই পথেই এ দিনের দুষ্কৃতী পালিয়েছে, অনুমান তাঁদের। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে এক জনই ছিল, না কি দলে আরও কেউ ছিল, তা দেখা হচ্ছে। জেলা পুলিশের ডিএসপি ( হেড কোয়ার্টার) অতনু ঘোষাল বলেন, ‘‘শক্তিগড়ে বারবার যে ঘটনা ঘটছে, সেটা এক ভাবে দেখা উচিত নয়। এটা জাতীয় সড়কের ধারে ঘটছে। কারণ, জাতীয় সড়কে অপরাধ করে পালিয়ে যাওয়া সহজ। তাই এই জায়গা বেছে নিচ্ছেন অপরাধীরা। আমরা সমস্ত দিক খতিয়ে দেখছি। খুব তাড়াতাড়ি দ্রুত দোষীদের চিহ্নিত করা হবে।’’