এই আবেদনপত্রই বিক্রি হয়েছে বলে অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র
বিদেশে চা রফতানি হবে অণ্ডালের ‘কর্মতীর্থ’ প্রকল্পের ভবনটি ব্যবহার করে। এমনই জানিয়েছে ব্লক প্রশাসন (অণ্ডাল)। কিন্তু এই পরিকল্পনার জন্য কর্মী নিয়োগকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছে সিপিএম ও কংগ্রেস। রাজ্যের শাসক দল অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ‘চা-সঙ্গী’ প্রকল্পের অধীনে রফতানির কাজটি হবে। সে জন্য স্বনির্ভর গোষ্ঠীর অন্তর্গত প্রায় তিন হাজার কর্মীকে নিয়োগ করা হবে।
সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য প্রবীর মণ্ডল ও কংগ্রেসের এআইসিসি সদস্য দেবেশ ঘটকের সংবাদমাধ্যমের একাংশের কাছে অভিযোগ, ‘‘অবাধে আবেদনপত্র বিক্রি করা হয়েছে। তৃণমূলের প্রত্যক্ষ মদতে তাদের দলীয় সমর্থকেরাই এই কাজ করেছেন। ব্লক প্রশাসন কোনও পদক্ষেপ করেনি।’’
কী ভাবে হয়েছে এই ‘বিক্রি’? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কয়েকজন সদস্য এবং বিরোধী নেতৃত্বের অভিযোগ, অণ্ডাল মোড়ের কয়েকটি দোকান থেকে আবেদনপত্র ফটো-কপি করে তা পাঁচশো টাকায় বিক্রি করা হয়। প্রবীরবাবুদের অভিযোগ, ‘‘আবেদনপত্র বিক্রির সময়ে বলা হয়, যাঁরা আবেদনপত্র কিনবেন, তাঁরাই চাকরি পাবেন। পরে, তা হবে না বুঝলেও ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারছেন না।’’
যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূল নেতা তথা তৃণমূল পরিচালিত অণ্ডাল পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি কৌশিক মণ্ডল। তাঁর দাবি, ‘‘আমরা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করেছিলাম। সেখানে সবাইকে ‘বায়োডেটা’ জমা দিতে বলা হয়। কিন্তু আবেদনপত্র বিক্রি করা হয়নি।’’ ‘আমরা’ বলতে দলীয় ভাবে না পঞ্চায়েত সমিতির তরফে সে বৈঠক হয়, তা নিয়ে বিরোধীরা প্রশ্ন করেছেন। তবে এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি কৌশিকবাবু।
যদিও বিডিও (অণ্ডাল) ঋত্বিক হাজরা বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট পরীক্ষার মাধ্যমেই দক্ষতার নিরিখে নিয়োগ হবে। প্রশাসনিক ভাবে আবেদনপত্র বিক্রির প্রশ্নই নেই।’’
তা হলে, এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার জন্য কৌশিকবাবুরা ‘বৈঠক’-ই বা করলেন কী ভাবে, উঠেছে সে প্রশ্নও। এই বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, ‘‘কোথাও কোনও দুর্নীতি প্রমাণিত হলে, তার বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।’’