প্রতীকী ছবি
পেট্রল, ডিজ়েলের মূল্যবৃদ্ধি-সহ কেন্দ্রীয় সরকারের একাধিক নীতির বিরুদ্ধে সোম ও মঙ্গলবার দু’দিনের ধর্মঘট ডেকেছে বামদলগুলি-সহ একাধিক ট্রেড ইউনিয়ন। তবে ধর্মঘট নিয়ে আসানসোলে সোমবার কোনও রকম ‘উচ্চকিত’ পর্যায়ে যেতে দেখা যায়নি সিপিএমকে। স্বাভাবিক ভাবে প্রশ্ন উঠেছে, আসানসোল উপনির্বাচনকে লক্ষ্য রেখেই কি নেতৃত্ব সাবধানি পদক্ষেপ করলেন? সিপিএম নেতৃত্ব অবশ্য এর কারণও ব্যাখ্যা করেছেন। তবে জোর করে ধর্মঘট করা হলে, তা প্রতিরোধের প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছিল বলে দাবি করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বামেদের তরফে ধর্মঘটকে সফল করতে নানা কর্মসূচি পালন করা হয়। রেল-রোকো থেকে দোকানপাট বন্ধ করানো, শিল্প-কারখানার গেটে পিকেট বসানো থেকে পরিবহণ চলাচলে বাধা ও রাস্তা অবরোধের অভিযোগ ওঠে। দুর্গাপুরেও এ দিন বন্ধ সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি হয়েছে। কিন্তু আসানসোলে ধর্মঘটের সমর্থনে কোনও পিকেট করতে দেখা যায়নি। এ প্রসঙ্গে সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আসানসোলে লোকসভা উপনির্বাচন। তাই আমরা ধর্মঘটকে সফল করতে বাড়াবাড়ি পর্যায়ের কিছু করতে চাইনি। তবে ধর্মঘট কেন ডাকা হয়েছে, তার কারণ নির্বাচনী প্রচারে বেরিয়ে ব্যাখ্যা করেছি।”
সিপিএম নেতৃত্বের একাংশের দাবি, এমনিতে সাধারণ মানুষ ধর্মঘটকে খুব ভাল ভাবে নেন না। তাই দলের সদস্য-সমর্থকেরা ধর্মঘট সফল করতে পূর্ণ শক্তি দিয়ে পথে নামলে, মানুষের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে বলে তাঁদের অনুমান। এর প্রভাব পড়তে পারে ইভিএমে। ঠিক এই কারণেই ইস্কো, চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভ ওয়ার্কস (সিএলডব্লিউ)-সহ বিভিন্ন কয়লা খনিতে ধর্মঘটের সমর্থনে ‘মৃদু’ পিকেট করা হয় এ দিন। শ্রমিক-কর্মীদের কাজে নামতে বাধা দেওয়া হয়নি বলে দাবি। সিটুর জেলা সম্পাদক বংশোগোপাল চৌধুরী বলেন, “আমরা আগেই ঠিক করেছিলাম, লোকসভা উপনির্বাচনের জন্য ধর্মঘট নিয়ে বাড়াবাড়ি পর্যায়ের কিছু করা হবে না। তবে পিকেটের মাধ্যমে ধর্মঘট ডাকার কারণ ব্যাখ্যা করা হবে।”
তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা আসানসোল পুরসভার মেয়র বিধান উপাধ্যায় বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে, দল সব সময় বন্ধ বা ধর্মঘট বিরোধী অবস্থান নেয়। আসানসোলেও এ বার আমরা ধর্মঘট ব্যর্থ করার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলাম। কিন্তু সিপিএম সে ভাবে পথে না নামায়, সাধারণ শহরবাসী স্বস্তি পেয়েছেন।”