গত পুর-ভোটে নিহত ইন্দ্রজিতের ছবি হাতে তাঁর মা ও ভাই। নিজস্ব চিত্র
সাত বছর কাটতে চলল। আর একটা পুরভোটের দিন ফিরল পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ায়। কিন্তু ২০১৫ সালের রক্তঝরা পুরভোটের সে স্মৃতি ভুলতে পারেন না কাটোয়ার ন্যাশনালপাড়ার বাসিন্দারা। সে বার দুষ্কৃতীদের গুলিতে নিহত হওয়া তৃণমূল কর্মী ইন্দ্রজিৎ সিংহের মা সুষমা সিংহ রবিবার সকাল থেকেই ছেলের ছবি বুকে আঁকড়ে পড়ে থাকলেন। দিতে গেলেন না ভোট। এই দিনটা সাত বছর আগের ছেলেকে হারানোর স্মৃতি ফের উস্কে দিয়ে গেল।
সে বার ভোটের আগের রাত থেকেই বোমার শব্দে কেঁপে ওঠে কাটোয়া শহরের অলিগলি। ২৫ এপ্রিল ভোটের দিন সকালে ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের পঞ্চবটিপাড়ায় বুথ-ক্যাম্পের কাছে দুষ্কৃতীরা হামলা চালায়। কপালে গুলি লেগে ঘটনাস্থলেই মারা যান বছর ৩৩-এর ইন্দ্রজিৎ। অভিযোগ, তার পরে, শহর জুড়ে কার্যত দাপিয়ে বেড়িয়ে ভোট লুট করে দুষ্কৃতীরা।
সে ঘটনার এক দিন পরেই তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব ইন্দ্রজিতের বাড়িতে গিয়ে সমবেদনা জানান। নিহতের ছোট ভাইকে অস্থায়ী চাকরি দেওয়া হয়। কিন্তু ছেলে হারানোর শোকে ভেঙে বছর খানেক পরে ইন্দ্রজিতের বাবা সতন সিংহ মারা যান। সেই থেকে আরও ভেঙে পড়েছেন সুষমাদেবী।
তাঁর বাড়িতে এ দিন দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, সুষমাদেবী মেজো ছেলে ইন্দ্রজিতের ছবি আঁকড়ে কাঁদছেন। সান্ত্বনা দিচ্ছিলেন ছোট ছেলে সুরজিৎ। সুষমাদেবী বলেন, ‘‘প্রতিদিন ইন্দ্রজিতের জন্য চোখের জল ফেলি। সে অভিশপ্ত ভোটের দিনের কথা এ দিন বড় বেশি করে মনে পড়ছে। সে দিন যদি ছেলেটাকে বাড়িতে আটকে রাখতাম, তা হলে ওকে অকালে হারাতে হত না! আমি আর ভোট দিতে যাই না। চাইব, আর যেন কোনও মায়ের কোল এ ভাবে খালি না হয়!’’