প্রতীকী ছবি
প্রশাসন ইটভাটা শ্রমিকদের জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ করার কথা জানিয়েছিল। মালিকদের বাসের ব্যবস্থা করতে হবে, এমন নির্দেশও দিয়েছিল। কিন্তু, বাস্তবে প্রায় প্রতিদিনই কাঁকসার বিভিন্ন ভাটায় কর্মরত শ্রমিকেরা হেঁটে পুরুলিয়ায় বাড়ি ফিরছেন বলে জানা গিয়েছে।
কাঁকসার বনকাটি, বসুধা, শিবপুর প্রভৃতি জায়গায় মোট প্রায় ৩০টি ভাটা রয়েছে। শ্রমিকদের অধিকাংশই পুরুলিয়া ও ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা। প্রতি বছর দুর্গা পুজোর পরে, ওই শ্রমিকেরা ভাটায় কাজ করতে আসেন। বৈশাখের মাঝামাঝি বাড়ি ফেরেন। এ বার ‘লকডাউন’-এ পরিস্থিতি বদলেছে।
এই পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের একাংশের অভিযোগ, ভাটা মালিকেরা মজুরি দিচ্ছেন না। ফলে, মে মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে ওই শ্রমিকেরা হেঁটে ঘরের পথ ধরেছেন। মহিলা শ্রমিকদের সঙ্গে তাঁদের বাচ্চারাও রয়েছেন। মুক্তি শবর নামে এক শ্রমিক বলেন, ‘‘ইটভাটা মালিকদের বারবার ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছি। কোনও সাড়া পাইনি। বাধ্য হয়ে হেঁটে বাড়ি যাব বলে ঠিক করেছি।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ৬ মে প্রথম কয়েকজন শ্রমিক ইটভাটা ছেড়ে পুরুলিয়ার পথে যাত্রা শুরু করেন। সে দিন এগারো মাইল এলাকার একটি ভাটার প্রায় ১৫টি শ্রমিক পরিবার পুরুলিয়ার উদ্দেশে বেরিয়ে পড়েন। দার্জিলিং মোড়ে কিছুক্ষণের জন্য তাঁরা বিশ্রাম নেন। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদের জল ও খাবার দেন। এ ভাবেই প্রতি দিন কয়েকজন করে শ্রমিক ফিরে যাচ্ছেন।
ভাটা মালিকেরা জানান, ‘লকডাউন’-এর জন্য বালি, সিমেন্ট, পাথর-সহ অন্য নির্মাণ সামগ্রী মিলছে না। ইট বিক্রি বন্ধ। এ বছর ঘন-ঘন বৃষ্টি হওয়ায় জলে বহু ইট নষ্ট হয়ে গিয়েছে। একটি ভাটার ম্যানেজার জগদীশ পাল বলেন, ‘‘আর্থিক পরিস্থিতি খুব খারাপ। শ্রমিকদের খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। বসিয়ে মজুরি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে শ্রমিকেরা এ ভাবে হেঁটে বাড়ি যাবেন সেটা হয় না।’’ তাঁর দাবি, খবর পেয়ে তাঁরা শ্রমিকদের ফিরিয়ে এনে বাড়ি যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেন।
মহকুমাশাসক (দুর্গাপুর) অনির্বাণ কোলে বলেন, ‘‘লকডাউনের সময়ে শ্রমিকদের দায়িত্ব ইটভাটা মালিকদের নিতে হবে। কেউ প্রশাসনের কাছে সাহায্য চাইলে প্রশাসন তা বিবেচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।’’ জেলা ইটভাটা মালিক সংগঠনের সহ-সভাপতি মহসিন খান অবশ্য বলেন, “আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছি। সূচি মেনে কাজ করা হচ্ছে। কিন্তু অনেক শ্রমিক ধৈর্য্য ধরতে পারছেন না।”