Coronavirus

আমেরিকায় ঘরবন্দি থেকেও সহযোগিতা

আমেরিকা থেকে ফোনে অরিন্দমবাবু জানান, তিনি তাঁর শিক্ষক অমিতাভ চক্রবর্তী ও অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়কে এই কাজের জন্য প্রায় ৩০ হাজার টাকা পাঠিয়েছেন।

Advertisement

সুশান্ত বণিক

শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২০ ০২:০৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

করোনা-পরিস্থিতিতে স্ত্রী আর ছেলেকে নিয়ে কর্মস্থল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানের লানসিং শহরে ঘরবন্দি অরিন্দম চক্রবর্তী। কিন্তু ভোলেননি কলেজবেলায় কাছ থেকে দেখা আসানসোলের বস্তিবাসী শিশু ও তাদের পরিবারগুলির কথা। তাই তাদের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিলি করতে টাকা পাঠিয়েছেন তিনি।

Advertisement

আমেরিকা থেকে ফোনে অরিন্দমবাবু জানান, তিনি তাঁর শিক্ষক অমিতাভ চক্রবর্তী ও অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়কে এই কাজের জন্য প্রায় ৩০ হাজার টাকা পাঠিয়েছেন। তা দিয়ে কেনা হয়েছে চাল, ডাল প্রভৃতি। খাদ্যসামগ্রী প্যাকেটজাত করে পলাশডিহা, ইন্ডিয়ান অয়েল কলোনি-সহ কয়েকটি বস্তি এলাকায় প্রতিদিন একশো বাড়িতে পৌঁছে দিচ্ছেন স্থানীয় কয়েকজন যুবক।

কিন্তু অরিন্দমবাবু নিজে কেমন আছেন? তিনি জানান, ছ’বছরের ছেলে অনুভব, স্ত্রী প্রিয়াদেবীর সঙ্গে তিনি ঘরবন্দি। মিশিগানে সরকারি নির্দেশ মতো ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ‘লকডাউন’। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস প্রায়ই মিলছে না, জানান প্রিয়াদেবী। অমিল ‘হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার’, সাবান, ‘টিস্যু পেপার’, ‘মাস্ক’। ভারতীয় খাবার বেশির ভাগ ডেট্রয়েট থেকে আসে। কিন্তু সেখানের অবস্থাও খারাপ। তাই খাদ্যদ্রব্যের জোগানে সমস্যা হচ্ছে।

Advertisement

এই পরিস্থিতিতেও আসানসোলের ওই মানুষগুলির কথা উঠলেই আদতে উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রামের বাসিন্দা অরিন্দমবাবু ও তাঁর স্ত্রী প্রিয়াদেবী ফিরে যান কলেজ জীবনে। অরিন্দমবাবু জানান, ২০০১-এ আসানসোলের একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি হন। ওই কলেজেরই ছাত্রী ছিলেন তাঁর স্ত্রী’ও। ২০০৬-এ অরিন্দমবাবু চাকরি সূত্রে লানসিংয়ে যান। কিন্তু কলেজে পড়ার সময়ে ওই দুই শিক্ষকের প্রেরণায় বস্তি এলাকায় শিশুদের জন্য নিয়মিত খাবার ও পড়াশোনার সামগ্রী পৌঁছে দিতে শুরু করেন অরিন্দমবাবু ও প্রিয়াদেবী। বিদেশে গিয়েও নিয়মিত যতটা পেরেছেন পাশে থেকেছেন তাঁরা।

ওই দম্পতি জানান, সাম্প্রতিক সময়ে শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলার পরে ঠিক করেন, আসানসোলের বস্তিবাসীদের পাশে দাঁড়াতে হবে। অরিন্দমবাবু বলেন, ‘‘যতটা পেরেছি টাকা পাঠিয়েছি। আবার পাঠাব। সবাই এক সঙ্গে লড়লে বিপদ কাটবেই।’’ শিক্ষক অমিতাভবাবু, অপূর্ববাবুরাও বলেন, ‘‘আমেরিকায় ঘরবন্দি থেকেও অরিন্দম, প্রিয়ার মতো ছাত্রছাত্রীরা পাশে রয়েছেন। আশা করি, আমরা এই সময়টা পার করে ফেলব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement