Coronavirus

আর্থিক ‘প্যাকেজ’ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জেলায়

পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় প্রায় দু’হাজার ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০২০ ০০:২৪
Share:

প্রতীকী ছবি

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঘোষিত ‘আর্থিক প্যাকেজ’-এর ব্যাখ্যায় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বিশেষ ভাবে জোর দিয়েছেন দেশের ক্ষুদ্র, মাঝারি ও অতিক্ষুদ্র শিল্প-ক্ষেত্রে। বিষয়টি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে পশ্চিম বর্ধমান-সহ দক্ষিণবঙ্গের বণিকসভাগুলি।

Advertisement

অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, তিন লক্ষ কোটি টাকার ঋণের ব্যবস্থা করা হবে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য। পাশাপাশি, তিনি এ-ও জানান, চার বছরের জন্য এই ঋণ দেওয়া হবে। এর মধ্যে প্রথম ১২ মাস ঋণ পরিশোধ করতে হবে না। এ ছাড়া, একগুচ্ছ প্রস্তাবের কথা জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।

এর পরেই বিষয়টি নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে জেলার শিল্প-ক্ষেত্রে। আলোচনা হচ্ছে, সুবিধা কী ভাবে পাওয়া যাবে, সেগুলি পেতে গেলে কী কী শর্তপূরণ করতে হবে, তা নিয়েও।

Advertisement

পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় প্রায় দু’হাজার ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বিভিন্ন বণিক সংগঠনগুলির দাবি, ‘লকডাউন’-পর্বে প্রায় প্রতিটি সংস্থা মুখ থুবড়ে পড়েছে। ফলে, ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য জরুরি ছিল আর্থিক প্যাকেজ।

বৃহস্পতিবার সে প্যাকেজের ব্যাখ্যা শুনে দক্ষিণবঙ্গের ১১টি জেলার শিল্পোদ্যোগীদের নিয়ে গঠিত ‘ফেডারেশন অব সাউথ বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ়’-এর কার্যকরী সভাপতি রাজেন্দ্রপ্রসাদ খেতান ছোট ও মাঝারি শিল্পের সংজ্ঞা বদলের বিষয়টির উপরে বিশেষ নজর দেওয়ার কথা বলেছেন।

অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাব অনুযায়ী, বছরে ১০০ কোটি টাকা পর্যন্ত ব্যবসা করে, এমন সংস্থাকে মাঝারি শিল্পের আওতায় আনা হচ্ছে। রাজেন্দ্রপ্রসাদবাবুর মতে, “এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানাতেই হবে। এর ফলে, অনেক বড় সংস্থা সুবিধা পাবে। বড় সংস্থাগুলি সুবিধা পেলে সেখানে কর্মরত শ্রমিক কর্মীরাও সুবিধা পাবেন।” কিন্তু তাঁর মতে, ক্ষুদ্র, মাঝারি ও ছোট শিল্পের জন্য ‘সরাসরি’ কোনও সহায়তার কথা বলা হয়নি প্যাকেজে। এই বিষয়টি তাঁদের হতাশ করেছে বলে জানান তিনি।

শিল্পোদ্যোগী তথা জামুড়িয়ার ‘চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ়’-এর সম্পাদক অজয় খেতান অজয় খেতান অবশ্য এই প্যাকেজে তাঁদের জন্য আশার কথা কিছু দেখছেন না। তাঁর মতে, এটা কোনও ‘সাহায্য নয়’। ‘লকডাউন পর্বে’ শ্রমিকদের বেতন, বিদ্যুৎ বিল ও ব্যাঙ্কের সুদ মেটাতে হয়েছে। অথচ, কোনও রোজগার হয়নি। অজয়বাবুর বক্তব্য, “লকডাউন পর্বের এই খরচের কিছু অংশ ভর্তুকি পেলে, বলা যেত সাহায্য করা হয়েছে। কিন্তু ঋণ দেওয়া হচ্ছে। সেই টাকা আমাদের সুদ-সহ শোধ করতে হবে। ঋণ শোধ করার ক্ষমতাই এখন অনেকের নেই।”

শুধু শিল্পক্ষেত্র নয়, অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে হলে, কৃষি-ক্ষেত্রের জন্য বিশেষ আর্থিক প্যাকেজের দাবি জানিয়েছেন ‘আসানসোল ইন্ডাস্ট্রিয়াল চেম্বার অব কমার্স’-এর সভাপতি অধীর গুপ্ত।

পাশাপাশি, রাজেন্দ্রবাবুরা জানান, ভিন্ রাজ্যের বহু শ্রমিক করোনার ভয়ে কর্মস্থলে ফিরতে চাইছেন না। ফলে, উৎপাদনে প্রভাব পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। শ্রমিকদের কথা ভেবে তাঁদের জন্য ৫০ লক্ষ টাকার করোনা-বিমা করানোর দাবি জানানো হয়েছে। সম্প্রতি এই দাবির কথা প্রধানমন্ত্রীর দফতরেও লিখিত ভাবে জমা দেওয়া হয়েছে বলে জানায় ‘ফেডারেশন অব সাউথ বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ়’।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement