শম্পা ঘোষ।
ঘরের মেঝেতে গলার নলি কাটা অবস্থায় পড়ে মহিলা। পাশে পড়ে ছুরি। খোলা জানলা দিয়ে তা দেখতে পেয়ে চিৎকার করেছিলেন কিশোরী মেয়ে। তা শুনে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। মঙ্গলবার সকালে কাটোয়ায় দরজা ভেঙে ওই মহিলাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা জানান, তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
কাটোয়ার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের মনসাপাড়ায় শম্পা ঘোষ (৩৮) নামে ওই মহিলা আত্মঘাতী হয়েছেন বলে দাবি পরিবারের। ‘লকডাউন’-এর মধ্যে আর্থিক বিষয় নিয়ে অবসাদে ভুগেই তিনি নিজের গলায় ছুরি চালিয়ে দেন, দাবি তাঁদের। পুলিশ জানায়, তদন্তে সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতার বাপের বাড়ি কাটোয়ার ঘোড়ানাশ গ্রামে। প্রায় ২২ বছর আগে মনসাপাড়ার বাসিন্দা বিশ্বনাথ ঘোষের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। বিশ্বানাথবাবু দুধ-ছানার ব্যবসা করেন। মাঝে-মধ্যে মাংসের ব্যবসাও করেন। তাঁদের তিন মেয়ের মধ্যে দু’জনের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ছোট মেয়ে লিপিকা দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, এ দিল সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ বিশ্বনাথবাবু বাড়িতে ছিলেন না। শম্পাদেবীর শাশুড়ি কল্যাণী ঘোষ বাড়ির সামনে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। একটি ঘরে লিপিকা পড়াশোনা করছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘পড়ার ফাঁকে এক বার বাইরে বেরিয়ে জানলা দিয়ে দেখি, মা মেঝেতে পড়ে রয়েছে। ঘর রক্তে ভেসে যাচ্ছে। আমি চিৎকার করে ঠাকুমা ও পড়শিদের ডাকি। দরজা ভেঙে মাকে হাসপাতালে নিয়ে যাই।’’
মৃতার স্বামী বিশ্বনাথবাবু দাবি করেন, ‘‘এখন কাজকর্ম প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আমার স্ত্রী কিছু লোকের কাছে টাকা পেতেন। কিছু টাকা শোধ করারও বিষয় ছিল। এ সব নিয়ে কয়েক দিন ধরে চিন্তা করছিলেন। অবসাদেও ভুগছিলেন। তবে এ ভাবে আত্মহত্যা করবেন, বুঝতে পারিনি!’’
স্থানীয় কাউন্সিলর সঞ্জীব মুখ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পরিবারটিকে দীর্ঘদিন ধরে চিনি। পারিবারিক কোনও অশান্তি বা কারও সঙ্গে শত্রুতার কথা জানা নেই।’’ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) ধ্রুব দাস বলেন, ‘‘মহিলার দেহ ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।’’