Coronavirus

‘সুষ্ঠু’ ভাবেই রেশন বিলি, দাবি কর্তাদের

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মে থেকে জুলাই, এই তিন মাস বাড়তি চাল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ভিড় এড়াতে পাড়া ধরে নির্দিষ্ট দিন করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০২০ ০৬:২৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

রাজ্য সরকারের নির্দেশে ১ মে থেকে শুরু হয়েছে দ্বিতীয় দফার রেশন বিলি। জেলার নানা প্রান্তের উপভোক্তাদের একাংশ জানান, এ বারের বিলি-ব্যবস্থা এখনও পর্যন্ত সুষ্ঠু ভাবে হচ্ছে। পাশাপাশি, তাঁদের পর্যবেক্ষণ প্রথম দফার তুলনায় প্রশাসনের সক্রিয়তাও অনেকটাই বেশি। যদিও, দু’-একটি ‘বিক্ষিপ্ত’ অভিযোগ সামনে এসেছে জেলায়।

Advertisement

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মে থেকে জুলাই, এই তিন মাস বাড়তি চাল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ভিড় এড়াতে পাড়া ধরে নির্দিষ্ট দিন করা হয়েছে। দোকানের সামনে থাকছেন সিভিক ভলান্টিয়ারেরা। রেশন ডিলারেরা জানান, ‘জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইন’-এর আওতায় থাকা ‘অন্ত্যোদয় অন্ন যোজনা’র (এএওয়াই) উপভোক্তারা আগে মাসে কার্ড পিছু ১৫ কেজি করে চাল পেতেন। এই তিন মাস তাঁদের আরও পাঁচ কেজি করে বেশি চাল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সঙ্গে আটাও দেওয়া হচ্ছে।

জেলা খাদ্য নিয়মক (পশ্চিম বর্ধমান) সুজিত হালদার দাবি করেন, ‘‘গত দু’দিনে সামগ্রী বিলিতে কোনও রকম অভিযোগ আসেনি। দফতরের কর্মী ও আধিকারিকেরা এলাকায় নজর রাখেছেন। অনিয়মের অভিযোগ মিললেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ শনিবার আসানসোলের নানা এলাকায় অতিরিক্ত জেলাশাসক প্রশান্ত মণ্ডল ও অণ্ডালে বিডিও (অণ্ডাল) ঋত্বিক হাজরার নেতৃত্বে প্রশাসনের কর্তাদের রেশন দোকান পর্যবেক্ষণ করতে দেখা যায় । জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এপ্রিলে খাদ্যদ্রব্য বিলিতে যে সব রেশন দোকানের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল, এ দিন সেগুলিতে অভিযান চালানো হয়।

Advertisement

অতিরিক্ত জেলাশাসক প্রশান্তবাবু বলেন, ‘‘কিছু জায়গায় উপভোক্তারা অভিযোগ করেছিলেন, নির্দিষ্ট সময়ে দোকান খোলা ও বন্ধ করা হচ্ছে না। ওই সব রেশন ডিলারদের সতর্ক করা হয়েছে।’’ তবে উপভোক্তাদের একাংশের দাবি, এ দিন অধিকাংশ দোকান সময়েই খুলেছে। দুর্গাপুরের মামরা বাজারের রেশন ডিলার গৌতম পরামানিক বলেন, ‘‘সকাল ৬টা থেকে রেশন বিলির কাজ শুরু করেছি। তবে তারও আগে উপভোক্তারা চলে এসেছিলেন। বিপুল পরিমাণ খাদ্যশস্য ওজন করতে সময় লাগছে। তাই তা দিতে কিছুটা দেরি হচ্ছে। তবে ভিড় কম থাকায় অসুবিধা হয়নি।’’

আসানসোল মহকুমার নানা এলাকায় দেখা গিয়েছে, প্রশাসনের নির্দেশ মেনে বেশির ভাগ দোকানের সামনে উপভোক্তা পিছু প্রাপ্য সামগ্রীর দাম ও পরিমাণের সূচি ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।

তবে ডিজিটাল রেশন কার্ড না মেলায় রেশন মিলছে না, সংবাদমাধ্যমের কাছে এমনই অভিযোগ করেছেন দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের জেমুয়া পঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকায় প্রায় শ’খানেক উপভোক্তা। তাঁরা জানান, তাঁদের অনেকের রেশন কার্ড তৈরি হয়ে গিয়েছে বলে বেশ কিছু দিন আগে খাদ্য ও খাদ্য সরবরাহ দফতরের ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ, দফতরের ব্লক কার্যালয় থেকে তাঁদের জানানো হয়, কার্ড আসেনি। অভিযোগ, কালীগঞ্জের এক রেশন ডিলার এই সব ক্ষেত্রে প্রাপ্য ‘ফুড কুপন’ও দেননি। জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ (খাদ্য) সুজিত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জেমুয়ার বাসিন্দাদের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে। কার গাফিলতিতে তাঁরা ডিজিটাল রেশন কার্ড পাননি তা খুঁজে বার করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে। সবাই রেশন পাবেন।’’

পাশাপাশি, পরিমাণের থেকে কম সামগ্রী দেওয়ার অভিযোগে রানিগঞ্জের জেমারি পঞ্চায়েতের বেলিয়াবাথানে রেশন ডিলারকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি। বিজেপি নেতা প্রদীপ বাউড়ির অভিযোগ, ‘‘পরিমাণের থেকে কম চাল দেওয়া হচ্ছে।’’ যাঁরা কম চাল পেয়েছেন, তাঁদের দু’কেজি করে চাল দেওয়া হবে বলে জানান সংশ্লিষ্ট ডিলার। বিডিও (রানিগঞ্জ) অভীক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘তদন্ত করে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে। আজ, রবিবার থেকে দোকানটির সামনে প্রশাসন ওজন-যন্ত্র রাখবে। তাতে সামগ্রী মেপে দিতে হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement