Coronavirus

ত্রাণে পাওয়া খাদ্যদ্রব্য মজুত করা হচ্ছে, সন্দেহ

সম্প্রতি আসানসোলের কুমারপুরে খাদ্য সামগ্রীর প্যাকেট ত্রাণ হিসেবে বিলি করছিল একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২০ ০০:৪৩
Share:

প্রতীকী ছবি

অল্প সময়ের ব্যবধানে নানা ত্রাণ শিবিরে গিয়ে ত্রাণ নিয়ে খাদ্যসামগ্রী মজুত করছেন অনেকে, এমনই সন্দেহ দানা বাঁধছে পশ্চিম বর্ধমানে। সন্দেহ করছেন যাঁরা, তাঁরা (বিভিন্ন সংস্থা, প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তিগত উদ্যোগ) ‘লকডাউন-পর্বে’ খাদ্যসামগ্রী বিলি করছেন। তাঁদের ক্ষোভ, ‘‘কিছু লোক এমন করায় প্রকৃতপক্ষে যাঁদের ত্রাণ দরকার, তাঁরা বঞ্চিত হচ্ছেন।’’

Advertisement

সম্প্রতি আসানসোলের কুমারপুরে খাদ্য সামগ্রীর প্যাকেট ত্রাণ হিসেবে বিলি করছিল একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। সংস্থার সঙ্গে যুক্তেরা দাবি করেন, ‘‘আচমকা দেখি, গামছায় মুখ অর্ধেক ঢাকা এক জন ফের ত্রাণ নিতে এসেছেন। অথচ, এক দিন আগে তাঁকে গোপালপুরে ত্রাণ দেওয়া হয়। তাঁকে ফের প্যাকেট দেওয়া হয়। কিন্তু এমন অভিজ্ঞতা প্রায়ই হচ্ছে।’’

ত্রাণ হিসেবে পাওয়া খাদ্যসামগ্রী মজুত করার প্রবণতা বাড়ছে বলে অভিযোগ বার্নপুরের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্য রিমি দে’রও। তিনি বলেন, ‘‘ত্রাণের প্যাকেট নিতে এলে, কাউকে তা না দিয়ে ফেরানো সম্ভব নয়। সেই সুযোগটাই কেউ কেউ নিচ্ছেন।’’ অপেক্ষাকৃত ভাবে যাঁরা অল্পবয়সি, মূলত তাঁরাই এ দিকে-ও দিকে দৌড়ঝাঁপ করে বিভিন্ন ত্রাণ শিবিরে গিয়ে খাদ্যদ্রব্য সংগ্রহ করছেন বলে অভিজ্ঞতা একটি সামাজিক সংগঠনের সদস্য বিক্রম গুপ্তের। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এই পরিস্থিতিতে অনেক সময়েই ত্রাণের অসম বণ্টন ঘটছে।’’

Advertisement

এই প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তৃণমূলের এক যুবনেতার দাবি, সরকারের তরফে বিপিএল তালিকাভুক্তদের বিনামূল্যে রেশন দেওয়া হচ্ছে। শহরের বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণ বিলির সময়ে দেখা গিয়েছে, বিপিএল তালিকাভুক্তদের অনেকেই বিভিন্ন ত্রাণ শিবিরে উপস্থিত হয়ে চাল, ডাল, তেল নুন নিচ্ছেন। আবার রেশন থেকেও খাদ্যদ্রব্যও নিচ্ছেন। উল্টো দিকে, বয়স বা অন্য কারণে যাঁরা রেশন পাচ্ছেন না, তাঁরা ত্রাণ শিবিরে কোনও রকমে গিয়েও খাদ্যদ্রব্য পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ।

তবে একাধিক ত্রাণ শিবিরে যাওয়া কয়েকজনের দাবি, রেশন থেকে পর্যাপ্ত জিনিস মিলছে না। তা ছাড়া, কোনও এক জায়গা থেকে যে পরিমাণ ত্রাণ দেওয়া হয়, তাতে বড় পরিবারের দীর্ঘদিন চলে না। পাশাপাশি, আগামী দিনে খাদ্যদ্রব্য মিলবে কি না, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। এ সব নানা কারণেই এমন প্রবণতা বলে দাবি।

এই পরিস্থিতিতে আসানসোলের বিভিন্ন বস্তি এলাকায় শিশুদের মধ্যে খাবার বিতরণের সঙ্গে যুক্ত একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্ণধার চন্দ্রশেখর কুণ্ডুর প্রস্তাব, ‘‘এলাকা ভাগ করে দুঃস্থদের মধ্যে নিয়মিত রান্না করা খাবার বিতরণ করা হলে ,ত্রাণসামগ্রী মজুত করার প্রবণতা বন্ধ হবে। কারণ, রান্না করা খাবার এক বেলার বেশি মজুত করা কোনও ভাবেই সম্ভব নয়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement