দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের পাশেও ফেটেছে বোমা। শনিবার গলসিতে। ছবি: কাজল মির্জা
‘লকডাউন’ চলাকালীনই এলাকা দখল নিয়ে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে গোলমাল বাধল গলসি ১ ব্লকের পুরসায়। দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতেই চলল বোমাবাজি। শনিবার বেশ কিছু মোটরবাইক ও বাড়ি ভাঙচুর করা হয় বলেও অভিযোগ। খবর পেয়ে পুলিশের বড় বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠীর ‘দ্বন্দ্বেই’ গোলমাল বেধেছে বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের। পুলিশ জানায়, অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। রাত পর্যন্ত বারো জনকে আটক করা হয়েছে। জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। কারা ঘটনার সঙ্গে যুক্ত তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’
তৃণমূল সূত্রের খবর, পোতনা-পুরষা অঞ্চলে দলের সভাপতি শেখ গোলাম মোর্তজা ওরফে লালন এবং স্থানীয় নেতা শেখ কামালউদ্দিনের অনুগামীদের মধ্যে বিবাদ দীর্ঘদিনের। শনিবার সকালে এলাকার একটি চায়ের দোকানে দু’পক্ষের লোকজনের মধ্যে বচসা শুরু হয়। তা থেকে সংঘর্ষ বাধে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। অভিযোগ, লালনের অনুগামী বলে পরিচিত শেখ আসগরের বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়। পাল্টা হামলা হয় কামালউদ্দিনের অনুগামী মজিবর মিদ্দার বাড়িতে।
এর পরেই দু’পক্ষের লোকজনের মধ্যে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের উপরে বোমাবাজি শুরু হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, ‘লকডাউন’-এর জন্য গাড়ি চলাচল কম থাকায় বড় বিপত্তি এড়ানো গিয়েছে। পুলিশ জানায়, পরিস্থিতি সামাল দিতে গ্রামে পুলিশ টহল দিচ্ছে। ঘটনাস্থল থেকেই দু’পক্ষের কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। বিজেপির জেলা সম্পাদক জয়দীপ চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘বালি খাদান ও চালকল থেকে তোলাবাজির ভাগ নিয়ে তৃণমূলের লোকজন নিজেদের মধ্যে বোমাবাজি করেছে। করোনা-আবহে এলাকায় সন্ত্রাস সৃষ্টি করছে ওরা।’’
লালনের অভিযোগ, ‘‘বচসাকে কেন্দ্র করে কামালউদ্দিনের লোকজন আমাদের কর্মীদের বাড়িতে চড়াও হয়। বাড়ি ভাঙচুর করে। প্রতিরোধ করতে গেলে সংঘর্ষ বেধে যায়। গ্রামে ক্ষমতা দখলের পরিকল্পনা করেই কামালউদ্দিনের লোকজন বোমাবাজি করেছে।’’ এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে কামালউদ্দিনের পাল্টা অভিযোগ, ‘‘লালনের নেতৃত্বে বোমাবাজি ও হামলা হয়েছে। প্রায় দেড়শো লোক রাস্তায় বোমাবাজি করেছে। বাইক ও বাড়ি ভাঙচুর করেছে ওরা।’’
তৃণমূলের নানা সূত্রের দাবি, দলের তহবিলের টাকা নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরে বিবাদ চলছিল। এ দিনের ঘটনা তারই জের। যদিও দলের ব্লক সভাপতি শেখ জাকির হোসেন গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা মানতে নারাজ। তাঁর দাবি, বোমাবাজির সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই। তাঁর বক্তব্য, ‘‘গ্রামের দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদের জেরে এই কাণ্ড ঘটেছে। পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।’’