মঙ্গলবার কমলপুরে চলছে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র
সহায়িকার বিরুদ্ধে চাল চুরির অভিযোগ তুলে দুর্গাপুরের কমলপুরের ঘোষপাড়ায় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সামনে মঙ্গলবার সকালে বিক্ষোভ দেখালেন বাসিন্দাদের একাংশ। যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওই সহায়িকা। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ যায়। প্রশাসনের আধিকারিকদের মধ্যস্থতায় শেষমেশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। পাশাপাশি, এ দিন রানিগঞ্জের তিরাট পঞ্চায়েতের কোয়ারডি কোলিয়ারি এলাকার ১৩৫ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে পোকাযুক্ত চাল দেওয়ার অভিযোগে বিক্ষোভ দেখান এলাকাবাসীর একাংশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুরের ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সহায়িকার বিরুদ্ধে বেশ কিছু দিন ধরেই অনিয়মের অভিযোগ উঠছিল। সোমবার বিকেলে এলাকাবাসীর একাংশ অভিযোগ করেন, নিয়ম মেনে শিশুদের চাল, ডাল, আলু দেওয়া হচ্ছে না। পরিমাণে কম দেওয়া হচ্ছে। সেই সব সামগ্রী সহায়িকা ‘লুকিয়ে’ বাড়ি নিয়ে যান বলে অভিযোগও ছিল তাঁদের।
মঙ্গলবার অঙ্গনওয়ারি কেন্দ্র খুলতেই বাসিন্দারা ‘লকডাউন’-এর তোয়াক্কা না করে ভিড় জমান। সহায়িকার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে দেন তাঁরা। তাঁরা দাবি জানান, ওই সহায়িকাকে অন্যত্র বদলি করতে হবে। খবর পেয়ে দুর্গাপুর পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের কাউন্সিলর শিপ্রা সরকার ঘটনাস্থলে এলেও লাভ হয়নি। এর পরে পুলিশ পৌঁছয়। যান ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সঞ্জয় সুব্বাও। তিনি ওই এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত ‘সুসংহত শিশুবিকাশ প্রকল্প আধিকারিক’ (সিডিপিও) পারমিতা সেনগুপ্তকে ডেকে পাঠান।
কাউন্সিলর বলেন, ‘‘ওয়ার্ডে প্রায় ১৪টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র রয়েছে। কিন্তু ওই কেন্দ্রের কাজকর্ম নিয়ে মাঝে-মধ্যেই অভিযোগ উঠছে।’’ দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক পারমিতাদেবী জানান, বাসিন্দারা লিখিত ভাবে অভিযোগ জানিয়েছেন। অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।
এ দিকে, রানিগঞ্জের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটিতে ৫০ জন শিশু রয়েছে। এ দিন সকালে সেখানে অভিভাবকদের খাদ্যসামগ্রী দেওয়া শুরু হয়। দেখা যায় ভিড়ও জমেছে। অভিভাবক শম্ভু মাহাতো, ফিরোজ আনসারিদের অভিযোগ, ‘‘৩৩ জনকে পোকাযুক্ত চাল দেওয়া হয়।’’ এই অভিযোগের পরেই শুরু হয় বিক্ষোভ। ঘটনাস্থলে গিয়ে পঞ্চায়েতের স্থানীয় সদস্য সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পোকাযুক্ত চাল দেখে বিডিও-কে (রানিগঞ্জ) বিষয়টি জানাই।’’
ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটির কর্মীর অবশ্য অভিযোগ, মাসখানেক আগে থেকে কয়েক বস্তা চাল মজুত করা ছিল। দিন পনেরো আগে তাঁদের কেন্দ্রের জন্য প্রায় তিন কুইন্টাল চাল সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে পাঠানো হলেও নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয়ে তা চেলোদের একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে রেখেছিলেন। কারণ, রানিগঞ্জের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি বেহাল বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে পুরনো চালে পোকা ধরেছে কি না তা তিনি বুঝতে পারেননি বলে দাবি করেন কর্মীটি। বিক্ষোভের পরে, শেষমেশ চেলোদ থেকে নতুন চাল এনে বিলি করা হয়।
বিডিও (রানিগঞ্জ) অভীক বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, রানিগঞ্জের দায়িত্বপ্রাপ্ত সিডিপিও অপ্রতিম সিংহকে বিষয়টি জানিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়। অপ্রতিমবাবু বলেন, ‘‘পোকাযু্ক্ত চাল থাকলে তা বিলি না করে আমাকে জানানো দরকার। তা না করে কী ভাবে ওই কর্মী সেই চাল বিলি করলেন, তা জানতে চেয়ে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। এর পরে তদন্ত করে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।’’