প্রতীকী ছবি
জমে গিয়েছে প্রায় চার হাজার নমুনা। এর মধ্যে কখনও নমুনা সংগ্রহের তথ্য ‘আপলোড’ করার ‘অ্যাপ’ (আরটি-পিসিআর) বিকল, কখনও আবার যন্ত্র বিকল— হাজির হচ্ছে নানা সমস্যা। এর জেরে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরীক্ষায় ব্যাঘাত ঘটছে বলে অভিযোগ। জেলাশাসক বিজয় ভারতী মঙ্গলবার জানান, সমস্যা মেটাতে তিন সদস্যের একটি কমিটি করা হচ্ছে। কোন পরীক্ষা আগে হবে, কোন পরীক্ষা পরে, তা সেই কমিটি ঠিক করবে। কমিটিতে ডেপুটি সিএমওএইচ এবং মাইক্রো-বায়োলজিস্ট থাকবেন।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের দাবি, গত এক সপ্তাহ ধরে জেলার বিভিন্ন ‘কিয়স্ক’ বা শিবির থেকে সংগৃহীত নমুনার বেশিরভাগই বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হচ্ছে না। অভিযোগ, মেডিক্যাল কলেজ নমুনা নিতে চাইছে না। সে জন্য কলকাতায় ‘নাইসেড’-এর ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হচ্ছে। মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, বেশি মাত্রায় নমুনা পরীক্ষা করার পরিকাঠামো তাঁদের ল্যাবরেটরিতে নেই। সে জন্যই নমুনা জমে থাকছে।
পূর্ব বর্ধমান জেলায় প্রতিদিন ৯০০ জনের করোনা-পরীক্ষা করানোর লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, অন্য অনেক জেলার তুলনায় পূর্ব বর্ধমানের লক্ষ্যমাত্রা বেশি। কিন্তু নমুনা সংগ্রহ বাড়লেও মেডিক্যাল কলেজে তা পরীক্ষা করানো যাচ্ছে না। মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, পরিকাঠামো অনুযায়ী ২৫০-৩০০টি নমুনা খুব ভাল ভাবে পরীক্ষা করা সম্ভব। সেখানে গড়ে ৭০০-৭৫০ নমুনা জমা পড়ছে। তা সামলানো কার্যত অসম্ভব। এ নিয়ে মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ জেলা স্বাস্থ্য দফতরকে চিঠিও পাঠায়।
এরই মধ্যে সোমবার মেডিক্যাল কলেজে নমুনা পরীক্ষার একটি যন্ত্র খারাপ হয়ে পড়ে। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় ওই যন্ত্র ঠিক করতে সাহায্য করে। মঙ্গলবার নমুনা পরীক্ষায় তার প্রভাব পড়ে বলে কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে। গোটা বিষয়টি নিয়ে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) প্রণব রায় শুধু বলেন, ‘‘সংগ্রহের বেশিরভাগটাই কলকাতার নাইসেডের ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হচ্ছে।’’
জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর সূত্রে জানা যায়, সোমবার পর্যন্ত জেলায় ৪০,৫৮৬ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পরীক্ষা হয়েছে ৩৬,৪২৭টি। মেডিক্যাল কলেজ সূত্রের দাবি, মাঝে ‘আরটি-পিসিআর অ্যাপ’-এর সমস্যা, সোমবারের যন্ত্র বিকলের মতো ঘটনার ফলেই নমুনা জমে থাকছে। জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) বিজয় ভারতী অবশ্য বলেন, ‘‘ঘণ্টা চারেক যন্ত্রটি বিকল হয়ে গিয়েছিল। সমস্যা মিটে গিয়েছে।’’ অতিরিক্ত জেলাশাসক (স্বাস্থ্য ও উন্নয়ন) রজত নন্দের দাবি, “বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় সাহায্য করেছে। বাকি তথ্য মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ দিতে পারবেন।’’
মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ সুহৃতা পালের সঙ্গে এ দিন যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি বৈঠকে ব্যস্ত রয়েছেন বলে জানান। উপ-অধ্যক্ষ তথা হাসপাতালের সুপার প্রবীর সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘সমস্যা মেটানোর জন্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে।’’ মেডিক্যাল কলেজ সূত্রের অবশ্য দাবি, ‘ভিডিআর ল্যাবরেটরি’ চালু না হওয়া পর্যন্ত এ রকম সমস্যা পুরোপুরি মেটার সম্ভাবনা কম।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)