এই ধরনের পোস্টার পড়েছে নানা জায়গায়। নিজস্ব চিত্র
কোথাও গ্রামে ঢোকার মুখে বাঁশের ব্যারিকেড, কোথাও পাড়ার মোড়ে পোস্টার। সবেতেই আর্জি, বাইরের লোক ঢুকবেন না।
শুক্রবার পূর্ব বর্ধমানের কালনা, পূর্বস্থলীর নানা জায়গায় এমনই ছবি দেখা গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ‘লকডাউন’ চলা সত্ত্বেও অনেকেই যাতায়াত করছেন। ভিন্ রাজ্য থেকে আসা অনেকেও ‘হোম কোয়রান্টিন’-এ থাকার নির্দেশ না মেনে পাড়ায় ঘুরছেন। তাঁদের ঠেকাতেই এই ব্যবস্থা নিয়েছেন তাঁরা।
পূর্বস্থলীর শ্রীরামপুর পঞ্চায়েতের চাঁদপুর গ্রামে ঢোকার মুখে বাঁশ বাঁধা রয়েছে রাস্তায়। তাতে পিচবোর্ড ঝুলিয়ে কালো কালিতে লেখা রয়েছে, ‘করোনাভাইরাসের জন্য অচেনা মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ’। বাঁশের ওই ব্যারিকেডের সামনে কোনও অচেনা লোক এলে আশপাশের বাড়ির লোকজন তাঁদের স্পষ্ট জানিয়েও দিচ্ছেন, গ্রামে ঢোকা যাবে না। স্থানীয় বাসিন্দা রিঙ্কু শেখ, আলমগীর শেখরা জানান, সরকার বারবার বলছে দূরে থাকতে। সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে। সেই জন্যই জরুরি ভিত্তিতে এই ব্যবস্থা।
কালনার হাটকালনা এলাকায় আবার দেখা গিয়েছে, রাস্তার আশপাশে নানা জায়গায় ঝুলছে অজস্র পোস্টার। তাতে কোথাও লেখা ‘পাড়ার লোক ছাড়া প্রবেশ নিষেধ’, আবার কোথাও লেখা ‘টোটো, ভ্যান, মোটরবাইকে প্রবেশ করা যাবে না’। বাসিন্দাদের দাবি, সতর্ক থাকতে, লোকজন এড়াতে এমন প্রচার তাঁদের।
এই মহকুমায় সৌদি আরব, কুয়েত, শ্রীলঙ্কা-সহ নানা দেশে কর্মরত বাসিন্দারা বেশির ভাগই বাড়ি ফিরে এসেছেন। কেরল, মহারাষ্ট্র, গুজরাতের মতো এলাকায় যাঁরা সারা বছর নানা কাজে ব্যাস্ত থাকেন তাঁরাও ফিরে এসেছেন। সাধারণ ভাবে হাসপাতালে পরীক্ষার পরে ১৪ দিনের জন্য ‘হোম কোয়রান্টিন’-এ পাঠানো হচ্ছে তাঁদের। কিন্তু তাঁদের অনেকেই ঘরে না থেকে বেরিয়ে পড়ছেন বলে অভিযোগ। পূর্বস্থলীর ১ ব্লকের বাসিন্দা প্রবীর বসাক বলেন, ‘‘এই ধরনের কেউ বাইরে বেরোলেই আমরা পুলিশকে খবর দিচ্ছি। তবে পুলিশ চলে গেলে আবার নিজেদের সুস্থ দাবি করে, আশপাশে চলাফেরা করছেন তাঁরা। আতঙ্কে ভুগছি।’’
পূর্বস্থলী ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তপন চট্টোপাধ্যায় জানান, বাইরে থেকে সদ্য ঘরে ফিরেছেন এমন মানুষের সংখ্যা এই ব্লকে প্রায় তিন হাজার। বহু মানুষই অভিযোগ করে জানাচ্ছেন, তাঁদের বাইরে ঘোরার কথা। খবর পেলেই পুলিশ, স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা দ্রুত পৌঁছে তাঁদের ঘরে ঢুকিয়ে দিয়ে আসছেন।
কালনা মহকুমা হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণচন্দ্র বরাইও বলেন, ‘‘আমরাও খবর পাচ্ছি, কিছু কিছু ক্ষেত্রে হোম কোয়রান্টিনে না থেকে মানুষ বেরিয়ে পড়ছেন। স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা এবং পুলিশ বিষয়টির উপরে নজরদারি চালাচ্ছে।’’