Coronavirus in West Bengal

চার শতাংশে সংক্রমণের হার, দাবি

রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের হিসেবে, জেলায় সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী ও দশমীতে নতুন করে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৯৯, ৯৫, ১০৪ ও ১২৮ জন। ওই দিনগুলিতে সুস্থ হয়েছেন যথাক্রমে, ২৭, ১২৯, ৭৪ এবং ১২৩ জন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রানিগঞ্জ শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২০ ০০:৪৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

জেলায় করোনা সংক্রমণের হার (অর্থাৎ, জেলায় একশো জনের পরীক্ষায় কত জন সংক্রমিত) কেন পাঁচ শতাংশের নীচে নামছে না, তা নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠকে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্নের মুখে পড়েছিল পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসন। তবে সম্প্রতি পুজোর মরসুম হওয়া সত্ত্বেও গত সপ্তাহে (২০ থেকে ২৬ অক্টোবর) জেলায় সংক্রমণের হার চার শতাংশে নেমে এসেছে বলে জানাল প্রশাসন। পুজোয় প্রশাসনের তৎপরতা এবং জেলার বাসিন্দাদের ‘সচেতনতা’র কারণেই এমনটা ঘটেছে বলে প্রশাসনের কর্তাদের পর্যবেক্ষণ।

Advertisement

রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের হিসেবে, জেলায় সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী ও দশমীতে নতুন করে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৯৯, ৯৫, ১০৪ ও ১২৮ জন। ওই দিনগুলিতে সুস্থ হয়েছেন যথাক্রমে, ২৭, ১২৯, ৭৪ এবং ১২৩ জন। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের হিসেবেও, ২০ থেকে ২৬ অক্টোবর, এই সপ্তাহে প্রায় ছ’শো জন মোট আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে মাত্র এক জনের। এই পরিসংখ্যানকে সামনে রেখেই মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, ‘‘জেলায় সংক্রমণের হার গত সপ্তাহে চার শতাংশে নেমে এসেছে। এই হারকে আমাদের আরও কমাতে হবে। ২৭ অক্টোবর রাত পর্যন্ত জেলার কোভিড হাসপাতালে ৩০০-র বেশি শয্যা থাকলেও তাতে ভর্তি ১১২ জন।’’

কিন্তু কী ভাবে এমন পরিসংখ্যান সামনে এল? জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অশ্বিনী মাজি বলেন, ‘‘প্রশাসনের তৎপরতা এবং মানুষের সচেতনতার কারণেই খানিকটা সুফল মিলেছে। পুজোর সময়ে নাগরিকেরা যথেষ্ট সচেতন ছিলেন। তবে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই এখনও অনেক বাকি।’’ পাশাপাশি, জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, পরীক্ষার সংখ্যা বৃদ্ধি (এই মুহূর্তে প্রতি দিন প্রায় আড়াই হাজারেরও বেশি নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে), সংক্রমিতদের সংস্পর্শে আসা লোকজনকে দ্রুত চিহ্নিত করে পরীক্ষা করা, প্রয়োজনে নিভৃতবাস নিশ্চিত করতে আশাকর্মীদের দিয়ে নজরদারি চালানো, আশাকর্মীদের বাড়ি-বাড়ি গিয়ে সমীক্ষা রিপোর্ট প্রস্তুত করার মতো কাজগুলি ‘সাফল্যের’ সঙ্গে হচ্ছে।

Advertisement

সেই সঙ্গে, জেলা প্রশাসন পুজোর সময়ে ভিড় রোধ করতে ‘সক্ষম’ হওয়ার সুফলও মিলেছে বলে দাবি। বিভিন্ন মণ্ডপ চত্বরে সে ভাবে ভিড় না হওয়া, জীবাণুনাশক ছড়ানো, প্রশাসনের প্রায় পাঁচ লক্ষ মাস্ক বিলি-সহ বিভিন্ন কারণ কাজে এসেছে বলে দাবি জেলার চিকিৎসকদের একাংশের।

তবে এখনও নিশ্চিন্ত হওয়ার মতো পরিস্থিতি আদৌ তৈরি হয়নি বলে দাবি চিকিৎসক এবং প্রশাসনের কর্তাদের। রাজ্য সরকারের কোভিড ম্যানেজমেন্ট কমিটির পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান জেলার কো-অর্ডিনেটর সমরেন্দ্রকুমার বসু জানান, ‘‘পুজোর দিনগুলিতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য-বিধি মানা হলেও কিছু জায়গায় জমায়েত হয়েছিল বলে খবর পেয়েছি। সে ক্ষেত্রে সংক্রমিতের সংখ্যা বাড়ার একটা আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।’’ জেলাশাসকও জানান, আগামী কয়েক দিন সংক্রমিতের সংখ্যা দেখে এই ‘সুফল’ দীর্ঘস্থায়ী কি না, তা বেঝা যাবে। পাশাপাশি, তিনি জানিয়েছেন, অক্সিজেন সিলিন্ডার-সহ কোভিড-চিকিৎসার গুরুত্বপূর্ণ সামগ্রীগুলি পর্যাপ্ত সংখ্যায় মজুত রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে জেলার একাধিক হাসপাতালে কোভিড রোগীর ভর্তির ব্যবস্থার জন্য আগাম প্রক্রিয়াশুরু হয়েছে।

জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement