Coronavirus in West Bengal

‘লকডাউন’ থেকে ছাড় পেয়েই বাজার-দোকানে ঢল

কারও ‘মাস্ক’ কান বা থুতনিতে ঝুলছে, কেউ দূরত্ব-বিধি শিকেয় তুলে মজেছেন কেনাকাটায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান ও কালনা শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০২০ ০০:১৯
Share:

বাঁ দিকে, কালনার বাজারে নজর। ডান দিকে, বর্ধমানের তেঁতুলতলায় ভিড়। ছবি: জাভেদ আরফিন মণ্ডল ও উদিত সিংহ

স্থানীয় ‘লকডাউন’ উঠে যেতেই বাজার-রাস্তাঘাটে ফিরল চেনা ছবি। কারও ‘মাস্ক’ কান বা থুতনিতে ঝুলছে, কেউ দূরত্ব-বিধি শিকেয় তুলে মজেছেন কেনাকাটায়।

Advertisement

বর্ধমান, মেমারি থেকে কালনা বা কাটোয়া—সর্বত্রই বৃহস্পতিবার ছবিটা এক রকম ছিল। বর্ধমান শহর টানা এক সপ্তাহ ‘লকডাউন’ ছিল। কালনা, কাটোয়া, মেমারি শহর এবং জেলা কিছু গ্রামীণ এলাকাও কয়েকদিন ‘লকডাউন’ করেছিল প্রশাসন। বুধবার সে সবের মেয়াদ ফুরিয়েছে। সে দিনই আবার জেলায় ৫০ জন করোনা-আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। এর মধ্যে ১৭ জন বর্ধমান শহরের। পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা জানাচ্ছেন, প্রতিটি মোড়ে সচেতনতার প্রচার চলছে। তার পরেও সচেতন হচ্ছেন না অনেকে।

বর্ধমানের বিসি রোড, তেঁতুলতলা-সহ নানা বাজারে বৃহস্পতিবার সকালে দেখা যায়, পা রাখার জায়গা নেই। অনেকের মুখে ‘মাস্ক’ নেই। ফুল থেকে মিষ্টি, সব দোকানে ভিড় উপচে পড়ছে। বিসি রোডে যেন জনজোয়ার। বোরহাটের সুপ্রিয় প্রামাণিক, বড়বাজারের বাসন্তী হাজরাদের দাবি, ‘‘এক সপ্তাহ ‘লকডাউন’ ছিল। বাড়িতে কিছু নেই। চা-আনাজ-ফুল তো কিনতে হবে। তাই বেরোতে বাধ্য হয়েছি।’’ মেমারি শহরেও ভিড় উপচে পড়ে আনাজ-মাছের বাজারে। শহরের বাসিন্দা সাবিনা ইয়াসমিনের দাবি, ‘‘পরবের কেনাকাটার জন্য বেরিয়েছি।’’ শহরের ব্যবসায়ী অভিষেক ভৌমিক, সন্তু বিষয়ীরাও বলেন, ‘‘পাঁচ দিন দোকানপাট বন্ধ ছিল। সামনে উৎসব আছে। সে জন্য অনেকে বাজারে এসেছেন।’’ মেমারির ব্যবসায়ী সমিতির কর্তা রামকৃষ্ণ হাজরা বলেন, ‘‘ভিড় দেখে মনে হচ্ছিল উৎসব চলছে!’’

Advertisement

বুধবার কালনায় প্রশাসনিক বৈঠক ঠিক হয়, মাছ ও আনাজ বিক্রেতাদের দু’টি দলে ভাগ করে এক দিন অন্তর বসতে বলা হবে। বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলেও, চকবাজারে ভিড় এড়ানো যায়নি। সকাল থেকে ভিড় সামাল দিতে হাজির ছিলেন পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ারেরা। কালনার ট্র্যাফিক পুলিশের ওসি আব্দুর রহমানের নেতৃত্বে বাজারে মাইক নিয়ে প্রচারও চালানো হয়। শহর লাগোয়া নিভুজিবাজারেও ভিড় ছিল বলে অভিযোগ। এলাকাবাসীর একাংশের দাবি, পুলিশ টহল দিয়ে এলাকা ছাড়তেই, ফের ভিড় জমেছে। তবে অন্য দিনের তুলনায় কালনা নিয়ন্ত্রিত বাজারে ভিড় কম ছিল। আদালত চত্বরে দূরত্ব-বিধি ভেঙে কিছু লোককে জড়ো হতে দেখা গিয়েছে।

‘লকডাউন’ কাটিয়ে এ দিন যে ভাবে মানুষ রাস্তায় নেমেছেন, তাতে সংক্রমণ আটকানোর প্রচেষ্টা ধাক্কা খাবে বলে চিকিৎসকদের একাংশের আশঙ্কা। জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায় বলেন, ‘‘মানুষকে আরও সচেতন হতে হবে।’’

(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।

• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement