প্রতীকী ছবি
করোনা আক্রান্ত দেড় বছরের এক শিশুর সন্ধান মিলল জেলায়। ওই শিশুর বাড়ি বর্ধমানের কাঞ্চননগর লাগোয়া বেলকাশ পঞ্চায়েতের উদয়পল্লিতে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই শিশুটির সঙ্গে তার মা ও বাবারও করোনা পরীক্ষা হয়েছিল গত রবিবার। পাঁচ দিন পরে, শুক্রবার দুপুরে জানা যায়, ওই শিশুটি করোনা-আক্রান্ত। তার মায়ের রিপোর্ট ‘নেগেটিভ’। বাবার রিপোর্ট এখনও স্বাস্থ্য দফতর পায়নি। ওই শিশুর পরিবার দিল্লি থেকে এসেছে বলে স্বাস্থ্য কর্তারা জানিয়েছেন। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) প্রণব রায় বলেন, “ওই শিশুকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। কাঁকসার ‘কোভিড-১৯’ হিসেবে গড়ে তোলা বেসরকারি হাসপাতালে শিশুদের চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। ওই শিশুর সঙ্গে তার মা-ও যাচ্ছেন।’’ সন্ধ্যায় কালনার দুটি ব্লক ও গলসি ১ ব্লকেও আরও তিন জন করোনা-আক্রান্তের সন্ধান মেলে।
সিএমওএইচ জানান, প্রত্যেক আক্রান্তের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সংস্পর্শে কারা এসেছেন, তার খোঁজ চলছে। প্রত্যেকের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হবে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই শিশুর বাড়ি সংলগ্ন এলাকা ‘সিল’ করা হবে। বাকি তিন আক্রান্তের এলাকাও গণ্ডিবদ্ধ করা হবে কি না, তা জানা যাবে আজ, শনিবার।
স্বাস্থ্য দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বর্ধমানের ওই শিশুর বাবা দিল্লির করোলবাগ এলাকায় একটি গয়না প্রস্তুতকারক সংস্থায় কাজ করেন। সেখানেই থাকতেন তিনি। গত জানুয়ারি মাসের শেষে তিনি উদয়পল্লির বাড়িতে আসেন। ৭ ফেব্রুয়ারি স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে ওই ব্যক্তি দিল্লি ফিরে যান। মাসখানেক পরে ‘লকডাউন’ শুরু হয়ে যাওয়ায় ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। গত শনিবার ‘শ্রমিক স্পেশাল’ ট্রেনে দিল্লি থেকে তাঁরা দুর্গাপুরে নামেন। সেখান থেকে তাঁদের বর্ধমানের নিভৃতবাস কেন্দ্র, নির্মীয়মাণ কৃষিভবনে তোলা হয়। রবিবার তাঁদের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এ দিন রিপোর্টে ওই শিশু করোনা আক্রান্ত বলে জানা যায়। বিকেল ৩টের পর থেকে স্বাস্থ্য দফতর ও পুলিশের তৎপরতা শুরু হয়। অ্যাম্বুল্যান্সে করে ওই শিশুকে কলকাতা পাঠানো হয়।
কালনা ১ ব্লকের খড়িডাঙা ও কালনা ২ ব্লকের নসিপুরে যে দু’জনের কোভিড ১৯ ‘পজ়িটিভ’ ধরা পড়েছে তাঁরা মুম্বই থেকে জেলায় ফিরেছেন সম্প্রতি। লালারস পরীক্ষার জন্য নেওয়া হয়েছিল। এ দিন সন্ধ্যায় তার রিপোর্ট এসেছে বলে জানায় স্বাস্থ্য দফতর। গলসি ১ ব্লকেও এক জনের করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে। কোনও ভ্রমণের ইতিহাস না থাকায় তাঁকে নিয়ে চিন্তিত প্রশাসনের একাংশও। জানা গিয়েছে, হাসপাতালের ‘ফ্লু টেস্ট ক্লিনিকে’ পরীক্ষা করিয়েছিলেন তিনি। এ দিন রিপোর্ট আসার পরেই তাঁকে গাংপুরের কোভিড হাসপাতালে পাঠানো হয়। এই সময়ের মধ্যে এলাকার বাইরে না যাওয়ায় কী ভাবে তিনি আক্রান্ত হলেন, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। গোষ্ঠী সংক্রমণেরও সম্ভাবনা রয়েছে বলেও মনে করছেন স্বাস্থ্য দফতরের একাংশ। সিএমওএইচ বলেন, ‘‘কী ভাবে আক্রান্ত হলেন আশেপাশে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।’’