প্রতীকী ছবি।
বেসরকারি ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষায় করোনা-রিপোর্ট ‘পজ়িটিভ’ আসায় দুর্গাপুরের ডিএসপি টাউনশিপের বাসিন্দা দুই বৃদ্ধকে রবিবার দুপুরে কাঁকসার মলানদিঘির ‘কোভিড’ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছিল। তার পরেই রাতে তাঁদের এলাকা ‘সিল’ করল পুলিশ। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’জনের পরিবারের সদস্য ও তাঁদের সংস্পর্শে আসা কয়েকজনকে ইতিমধ্যে চিহ্নিত করা হয়েছে। বাকিদেরও চিহ্নিত করে তালিকা তৈরির কাজ চলছে। দু’জনই আগে যেখানে ভর্তি ছিলেন, দুর্গাপুরের গাঁধী মোড়ের সেই বেসরকারি হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট বিভাগ জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে।
রবিবার ডিএসপি টাউনশিপের এ-জ়োন এবং বি-জ়োন— দু’টি এলাকায় প্রথমে পুরসভা ও পরে দমকলের তরফে জীবাণুমুক্ত করার কাজ চলে। দু’টি এলাকাতেই পুলিশ আশপাশের বাসিন্দাদের বাড়ি থেকে বেরোতে বারণ করে। দুই পরিবারের সদস্যদের ‘ঘরবন্দি’ থাকার পরামর্শও দেওয়া হয়। পুলিশ পিকেট ছিল সন্ধ্যা পর্যন্ত। রাতে দু’টি এলাকাই ‘সিল’ করে দেওয়া হয়। সেখান থেকে কারও বাইরে বেরনো বা বাইরে থেকে কারও ঢোকায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ডিসি (পূর্ব) অভিষেক গুপ্ত বলেন, ‘‘সরকারি বিধি মেনে রাতে দু’টি এলাকা সিল করে দেওয়া হয়েছে।’’
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মলানদিঘির হাসপাতালে ভর্তি দুই বৃদ্ধের নমুনা সরকারি ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। সেই রিপোর্টের ফল দেখেই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে। আপাতত, দুই পরিবারের মোট ১১ জন সদস্যের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। গাঁধী মোড়ের বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার সময়ে ওই দুই বৃদ্ধের সংস্পর্শে এসেছিলেন, এমন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী মিলিয়ে প্রায় ২০ জনকে ‘হোম কোয়েরান্টিন’-এ থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁদেরও স্বাস্থ্যপরীক্ষার ব্যবস্থা করা হবে বলে প্রশাসন জানিয়েছে। এ ছাড়া, যাঁরা ওই দুই পরিবারের সংস্পর্শে এসেছেন, তাঁদের তালিকা তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
এ-জ়োনের বৃদ্ধের বড় ছেলে দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের কর্মী। রবিবার তিনি দাবি করেন, তিনি ও তাঁর ভাই ছাড়া, পরিবারের কারও বাইরের সঙ্গে যোগ ছিল না। কী ভাবে বাবার শরীরে করোনার সংক্রমণ হতে পারে, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন তিনি। ডিএসপি সূত্রে জানা গিয়েছে, কারখানায় করোনার সংক্রমণ রুখতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কর্মী ও আধিকারিকদের নিয়ে পাঁচটি যৌথ কমিটি গঠন করা হযেছে। প্রত্যেক কর্মী ও আধিকারিককে উপযুক্ত বিধি মেনে জীবাণুমুক্ত থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যদিও ডিএসপি-র সিটু নেতা সৌরভ দত্তের অভিযোগ, ‘‘যে ‘মাস্ক’ দেওয়া হচ্ছে, তার গুণমান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। আরও উন্নত মানের ‘মাস্ক’ দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।’’