প্রতীকী ছবি
মৃদু সংক্রমণ বা উপসর্গহীন অবস্থায় যে সব করোনা-আক্রান্তেরা চিকিৎসকের পরামর্শে বাড়িতে রয়েছেন, তাঁদের বাড়ি-বাড়ি গিয়ে চিকিৎসা করার সিদ্ধান্ত নিল জেলা স্বাস্থ্য দফতর। ‘সেফ হাউস’গুলিতেও প্রতিদিন যাতে চিকিৎসকেরা যান, তা নিশ্চিত করেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। একই সঙ্গে আক্রান্ত বাড়তে থাকায় পূর্ব বর্ধমানে আরও একটি বেসরকারি হাসপাতালকে ‘কোভিড-হাসপাতাল’ হিসেবে গড়তে চাইছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। জেলা প্রশাসনের কাছে বিস্তারিত জানিয়ে আবেদনও করা হয়েছে।
বর্ধমান শহরে প্রতিদিন করোনা-আক্রান্ত বাড়তে থাকায় চিন্তায় পড়ে গিয়েছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। শুধু বর্ধমান পুর-এলাকার বাসিন্দাদের জন্য নমুনা সংগ্রহের পৃথক কেন্দ্র খোলার প্রস্তাব নেওয়া হয়েছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) প্রণব রায় বলেন, “সুকান্তপল্লিতে আগামী শুক্রবার থেকে নমুনা সংগ্রহের শিবির করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। শুধু বর্ধমান শহরের মানুষরাই ওই শিবিরে গিয়ে নমুনা দেবেন।’’ জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বর্ধমান শহরে যত জনের নমুনা সংগ্রহ হয়েছে, তাঁদের ১৫ শতাংশ করোনায় আক্রান্ত। সে কারণেই ‘লকডাউন’ করা হয় শহরে। এ বার লালারসের নমুনা পরীক্ষা বাড়ানোর দিকে নজর দিতে চাইছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর।
জেলায় এখনও পর্যন্ত ৬৬০ জন করোনা রোগীর সন্ধান মিলেছে। তার মধ্যে ২৬৪ জন ‘অ্যাক্টিভ’। তাঁদের মধ্যে একশো জনের বেশি ‘কোভিড’-হাসপাতালে রয়েছেন। কিছু জন আছেন বর্ধমান ও কাটোয়ায় থাকা ‘সেফ হাউস’-এ। বেশ কয়েকজন রয়েছেন বাড়ি ও হোটেলের নিভৃতবাসে। তাঁরা এত দিন চিকিৎসকের পরামর্শে চলছিলেন। এ বার বাড়ি বা হোটেলের ঘরে গিয়ে তাঁদের পরীক্ষার জন্য বর্ধমান শহরে দু’টি মেডিক্যাল দল গঠন করা হয়েছে। প্রতিটি ব্লক, মহকুমা শহরেও এই পরিষেবা দেওয়া হবে। জানা গিয়েছে, প্রতিটি দলে দু’জন করে ডাক্তার-সহ ছ’জন রয়েছেন। এ ছাড়া, আক্রান্তেরা যাতে সরাসরি জেলা স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় পরামর্শ নিতে পারেন, সে জন্য বিশেষ মোবাইল নম্বর দেওয়া হচ্ছে। জেলাশাসক বিজয় ভারতী জানান, কালনাতেও একটি ‘সেফ হাউস’ খোলা হয়েছে। মেমারি ১ ব্লকেও একটি খোলা হবে।
জেলার ডেপুটি সিএমওএইচ সুনেত্রা মজুমদার বলেন, “যে সব আক্রান্ত বাড়িতে রয়েছেন, তাঁদের কাছে মেডিক্যাল দল এক দিন অন্তর চিকিৎসার জন্য যাবেন। সেফ হোমেও চিকিৎসকেরা যাবেন। বর্ধমান ও কাটোয়ায় মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে।’’
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)