বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়।—ফাইল চিত্র।
করোনাভাইরাস প্রকোপ রুখতে সমস্ত পরীক্ষা, ক্লাস এবং সমস্ত ধরনের জমায়েত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়। উচ্চশিক্ষা দফতরের কমিশনার তথা সচিব শুক্রবারই এক নির্দেশিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের করোনাভাইরাস প্রতিরোধে কী-কী করতে হবে তা জানিয়েছেন। সেখানে বলা হয়েছে, খুব প্রয়োজন ছাড়া, জমায়েত বাতিল করতে হবে।
শনিবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিমাই সাহা বলেন, “রাজ্য সরকারের নির্দেশিকা মানা হবে। ৩১ মার্চ পর্যন্ত সমস্ত রকমের পরীক্ষা, ক্লাস বন্ধ রাখা হচ্ছে। হস্টেলও খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী সময়ে যে রকম নির্দেশিকা আসবে, সে রকম ভাবেই তা কার্যকর করা হবে।” বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষ্ণসায়র পার্ক, তারামণ্ডল-সহ বেশ কিছু জায়গায় অবাধ প্রবেশ রয়েছে। সে সব জায়গাতেও নিয়ন্ত্রণের নির্দেশ দিয়েছে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক দফতর সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি কলেজে শারীরশিক্ষা বিষয়ে পরীক্ষা রয়েছে। এ ছাড়াও পূর্ব বর্ধমান, বীরভূম ও হুগলি জেলার ৬৪টি কলেজে সিমেস্টারে প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা চলছে। শনিবার সন্ধ্যায় ওই সব পরীক্ষা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, বিভিন্ন রকমের সেমিনার, কর্মশালা, আলোচনাসভাও ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ রাখা হচ্ছে। বন্ধ থাকবে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে হাজিরাও। তবে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি যেহেতু ‘ঐচ্ছিক’, তাই কর্তৃপক্ষ আলাদা কোনও নির্দেশিকা জারি করেনি।
তবে এ দিন পর্যন্ত স্কুলগুলির কাছে এখনও কোনও নির্দেশিকা পৌঁছয়নি বলে জানিয়েছেন জেলা স্কুল পরিদর্শক বা ডিআই (মাধ্যমিক) শ্রীধর প্রামাণিক। ডিআই বলেন, “আমাদের কাছে সরকারি ভাবে কোনও নির্দেশ আসেনি। পরীক্ষা বন্ধ রাখারও কোনও নির্দেশ পাইনি।” তবে বিভিন্ন স্কুল নিজেদের মতো করে করোনাভাইরাস প্রতিরোধের জন্য আলোচনাসভা, জমায়েত আটকানোর ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে।
শনিবার পর্যন্ত বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ড ছিল ছ’টি। এ দিনই সেটি ৪০টি পর্যন্ত করার উদ্যোগ করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। যদিও এখনও পর্যন্ত করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে এক জনও আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি হননি। একই চিত্র কাটোয়া, কালনা মহকুমা হাসপাতালে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, কয়েক দিন আগেও পূর্ব বর্ধমান জেলায় বিদেশ থেকে আসা ২৭জনকে ‘নজরবন্দি’ করে রাখা হয়েছিল। শনিবার থেকে সেই সংখ্যাটাই বেড়ে দাঁড়িয়েছে আটত্রিশে। জেলার ডেপুটি সিএমওএইচ (২) সুনেত্রা মজুমদার বলেন, “কাটোয়া পুরসভা, গলসি, বর্ধমান শহর, জামালপুর-সহ বিভিন্ন জায়গায় ওই ৩৮ জন ছড়িয়ে রয়েছেন। নিয়মিত তঁদের শারীরিক পরীক্ষা করা হচ্ছে। পরিজনদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। অযথা আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই।”