coronavirus

মাসের শুরুতেও ফাঁকা রইল ব্যাঙ্ক

গলসির একটি ব্যাঙ্কের ম্যানেজারের কথায়, ‘‘গ্রামীণ এলাকার মানুষের কাছে দৈনন্দিন খাবার মজুত থাকে। এখন বাইরে যাওয়ার তাড়া নেই। সে জন্য টাকা তোলার ভিড় নেই।’’ 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২০ ০০:০১
Share:

বর্ধমানের এক ব্যাঙ্কের সামনে। বৃহস্পতিবার সকালে। নিজস্ব চিত্র

রাখা হয়েছিল সাবান-জল, ‘স্যানিটাইজ়ার’। নির্দিষ্ট দূরত্বে চক দিয়ে বৃত্তও আঁকা ছিল। কিন্তু মাসের দ্বিতীয় দিনেও ব্যাঙ্কে গ্রাহকের বিশেষ দেখা মিলল না। নানা ব্যাঙ্কের কর্মীরা জানান, বৃহস্পতিবার প্রথমার্ধে হাতে গোনা কিছু গ্রাহক এলেও দ্বিতীয়ার্ধ পুরোপুরি ফাঁকা ছিল। বর্ধমানে এটিএমগুলিতেও বিশেষ ভিড় চোখে পড়েনি। ব্যাঙ্কের ই-কর্নারে অবশ্য গ্রাহকদের গা ঘেঁষেই দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে।

Advertisement

জেলার ‘লিড’ ব্যাঙ্কের ম্যানেজার রঞ্জন গুহ বলেন, ‘‘মাসের দ্বিতীয় দিন ব্যাঙ্কগুলিতে যে ভিড় থাকে, তার ২০ শতাংশও বৃহস্পতিবার ছিল না। সকালের দিকে কিছু গ্রাহক এলেও পরে আরও ফাঁকা হয়ে যায়। কেন এ রকম হল, জানি না।’’ যদিও বর্ধমান কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের দাবি, তাঁদের ৪০টি শাখাতেই ভিড় হচ্ছে। জেলা জুড়ে থাকা ৫৮টি এটিএম থেকেই টাকা তুলছেন গ্রাহকেরা। ওই ব্যাঙ্কের প্রধান দফতরের অন্যতম কর্তা অমিত রজক বলেন, ‘‘অন্য ব্যাঙ্কের একটি বড় অংশের গ্রাহক অনলাইনে অভ্যস্ত। বাকি অংশও এই পরিস্থিতিতে সেই পদ্ধতি শিখে নিচ্ছেন। তবে আমাদের বেশিরভাগ গ্রাহক কৃষির উপরে নির্ভরশীল। তাই আমাদের ব্যাঙ্কে তুলনামূলক ভিড় হচ্ছে।’’

এ দিন বর্ধমান শহরে সরকারি-বেসরকারি বেশ কয়েকটি ব্যাঙ্কে বাইরে থেকে বোঝার উপায় ছিল না, সেগুলি খোলা না বন্ধ। ভিতরে গিয়ে দেখা যায়, করোনা মোকাবিলার জন্য নির্দেশ অনুযায়ী, নানা পদক্ষেপ করা হয়েছে গ্রাহকদের জন্য। জনাকয়েক গ্রাহক এসেছেন। ব্যাঙ্কের কর্মী-সংখ্যাও প্রায় এক-তৃতীয়াংশ। কাটোয়ায় ব্যাঙ্কের সামনে অবশ্য বেশ কিছু গ্রাহকের লাইন দেখা গিয়েছে। বিভিন্ন পরিষেবাও বন্ধ।

Advertisement

বর্ধমান শহরের প্রবীণ নাগরিকদের সংগঠনের নেতা প্রবীর ভট্টাচার্যের ধারণা, ‘‘লকডাউন শুরুর মুখেই শহরের বেশিরভাগ পরিবার দৈনন্দিন খরচ চালানোর মতো টাকা তুলে রেখেছেন। খাদ্যসামগ্রীও মজুত করেছেন। সে জন্য এখন আর ব্যাঙ্কে যাওয়ার তাড়া নেই।’’ গলসির একটি ব্যাঙ্কের ম্যানেজারের কথায়, ‘‘গ্রামীণ এলাকার মানুষের কাছে দৈনন্দিন খাবার মজুত থাকে। এখন বাইরে যাওয়ার তাড়া নেই। সে জন্য টাকা তোলার ভিড় নেই।’’

এ দিন সকালে বর্ধমান কোর্ট চত্বরে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের মূল শাখার দফতরে এসেছিলেন কয়েকজন বৃদ্ধা। তাঁরা বলেন, ‘‘পেনশন পৌঁছেছে ভেবে লাইনে দাঁড়াই। কিন্তু পরে জানতে পারি, পেনশন আসেনি।’’ বর্ধমানের একটি ব্যাঙ্কের আধিকারিক বলেন, ‘‘বুধবার রাতে কিছু ও বৃহস্পতিবার বিকেলে কিছু গ্রাহকের পেনশন এসেছে। মনে হচ্ছে, শুক্রবার থেকে ভিড় বাড়বে।’’ ‘লিড’ ব্যাঙ্কের ম্যানেজারও মনে করছেন, ‘‘সরকার বিভিন্ন প্রকল্পে উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা পাঠায়। সে সব টাকা বৃহস্পতিবার রাত থেকে আসবে। সেই টাকা তোলার জন্য ভিড় বাড়বে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement