রাস্তার আলোয় পসরা ডোকরা শিল্পীদের। ছবি: প্রদীপ মুখোপাধ্যায়
ডোকরা শিল্পের খ্যাতি দেশের গণ্ডি পেরিয়েছে। বছর পাঁচেক আগে ‘জি আই’ তকমাও জুটেছে। আউশগ্রামের দ্বারিয়াপুরের পাঁচ ডোকরা শিল্পী জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন। এই কাজ শিখতে এবং দেখতে দেশ-বিদেশের পর্যটকেরা আসেন আউশগ্রামের দ্বারিয়াপুর ডোকরা পাড়ায়। ডোকরা শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ওই এলাকায় মানুষ যখন সুদিন ফেরার আশা করছিলেন, তখনই ব্যবসায় মন্দা নেমেছে।
স্থানীয় ডোকরা শিল্পীদের দাবি, কম-বেশি ১,৬০,০০০ টাকার বিদ্যুৎ বিল মেটাতে না পারায় দু’বছর ধরে তাঁদের উন্নয়নের লক্ষ্যে তৈরি ‘দ্বারিয়াপুর ডোকরা আর্টিজান কো-অপারেটিভ সোসাইটি’র বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে। এতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাঁদের। সন্ধ্যার পরে সৌরবাতির নীচে আলো-আঁধারি পথে ব্যবসা করতে হচ্ছে। কেউ কেউ ব্যবসা গুটিয়ে ঘরমুখো হচ্ছেন।
ডোকরা শিল্প ঘিরে পর্যটন উন্নয়নের সম্ভাবনার কথা ভেবে প্রশাসনের উদ্যোগে ডোকরা পাড়ায় উন্নয়নমূলক নানা কাজ হয়েছে। ডোকরা পাড়ার সামনে সবুজ ঘাস এবং ডোকরার বিভিন্ন মূর্তি বসানো হয়েছে। তৈরি করা হয়েছে বসার জায়গা। আলোয় সেজেছে এলাকা। সমিতির দোতলা ভবনের নীচে আর্ট গ্যালারিতে ডোকরা শিল্পকর্মের প্রদর্শনীর ব্যবস্থা রয়েছে। পাশাপাশি, ডোকরা শিল্প কী, কী ভাবে জিনিস তৈরি হয়, তার বর্ণনাও দেওয়া আছে সেখানে। সমিতির সামনে আটচালায় ডোকরা শিল্পীরা তাঁদের তৈরি সামগ্রী বিক্রি করেন।
শিল্পীদের দাবি, বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকায় সন্ধ্যার পরে সমিতি কার্যালয় চত্বর অন্ধকারে ডুবে যায়। ডোকরা শিল্পী মনসা কর্মকার, পিয়া কর্মকারেরা বলেন, “আটচালায় প্রায় ২০-২৫ জন শিল্পী নিয়মিত বসে জিনিস বিক্রি করেন। বাইরে থেকে লোকজন এসে সে সব কেনেন। শিল্পীরা দু’পয়সা লাভের মুখ দেখেন। আলো না থাকায় সন্ধ্যার পরে বিক্রি বন্ধ করে দিতে হয়।”
সমবায় সমিতির সম্পাদক শুভ কর্মকার বলেন, “বিদ্যুৎ বিল বাবদ বকেয়া ১,৬০,০০০ টাকা না দেওয়ায় সংযোগ কেটে দেওয়া হয়েছে দু’বছর আগে। সেই থেকে অন্ধকারে রয়েছে সমিতির অফিস, অতিথি নিবাস, আর্ট গ্যালারি ও আটচালা।” বকেয়ার পরিমাণ এত হল কী করে? শুভর দাবি, “সমিতির নিজস্ব আয় নেই। অতিথি নিবাসে কিছু শিক্ষানবিশ পড়ুয়া ছাড়া কেউ আসেন না। এর থেকে খুব সামান্য আয় হয়। তা দিয়ে বিল মেটানো সম্ভব নয়। প্রশাসনের কাছে বিল মকুবের দাবি জানিয়েছি।”
বিডিও (আউশগ্রাম ১) শেখ কামরুল ইসলাম বলেন, “বিষয়টি জানা ছিল না। খোঁজ নিয়ে দেখব। উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”