সই সংগ্রহ কাটোয়ায়। নিজস্ব চিত্র।
পঞ্চায়েত ভোট এগিয়ে আসতেই কাটোয়ার তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে চাপান-উতোর বাড়ছে। কেন এখানে এনটিপিসি-র প্রকল্প হল না, সে নিয়ে দোষারোপ শুরু হয়েছে নানা পক্ষের মধ্যে। মঙ্গলবার কাটোয়ার নজরুল মুক্ত মঞ্চে প্রকাশ্য সমাবেশ করে সিপিএম। তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের জায়গায় বিকল্প শিল্প গড়ে তোলার দাবিতে সরব হয় তারা। তৃণমূলের তরফে অবশ্য এ বিষয়ে পাল্টা সিপিএম ও বিজেপিকে দায়ী করা হয়েছে। কাটোয়াবাসীর অনেকের ক্ষোভ, ভোট এলেই তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের কথা সামনে এনে রাজনৈতিক দলগুলি ফায়দা তোলার চেষ্টা করে। ভোট-পর্ব মিটে যেতেই সব ধামাচাপা পড়ে যায়।
কাটোয়া-বর্ধমান রোডের ধারে শ্রীখণ্ড গ্রামের কাছে এক দশকেরও বেশি সময় তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য অধিগৃহিত জমি পড়ে রয়েছে। কেন কাজ এগোচ্ছে না, তা নিয়ে এলাকার বাসিন্দাদের মনে সংশয় ছিলই। এরই মধ্যে সম্প্রতি জমি ফেরানো নিয়ে রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে এনটিপিসি বৈঠক করে। তার পরেই প্রশ্ন উঠেছে, প্রকল্পের জমি কোন কাজে লাগানো হবে? অধিগৃহিত জমিতে যাতে শিল্প গড়ে ওঠে, সে দাবি জোরাল হচ্ছে। কাটোয়ার বাসিন্দা কাজল সাহার অভিযোগ, ‘‘এখনও প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়নি। উল্টে, বন্ধ হতে বসেছে। পঞ্চায়েত ভোট এগিয়ে আসতেই রাজনৈতিক দলগুলি এ নিয়ে সরব হয়েছে। ভোট মিটে গেলে আর কাউকে খুঁজে পাওয়া যায় না। গত ১২ বছর ধরে তা দেখে আসছি।’’
জেলার সিপিএম নেতা অচিন্ত্য মল্লিক দলীয় সমাবেশে দাবি করেন, “রাজ্য ও কেন্দ্রের যৌথ উদাসীনতার জন্যই আজও তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প হল না। এখন শুনছি, প্রকল্পের জমি শিল্প না করে অন্য কাজে ব্যবহার করা হবে। কিন্তু আমরা তা কিছুতেই মেনে নেব না। কর্মসংস্থানের দাবিতে হয় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র করতে হবে, নয়তো অন্য শিল্প। সেই দাবিতেই আমরা সমাবেশ করেছি। প্রয়োজনে আন্দোলন হবে।’’
বিজেপির জেলা (কাটোয়া সাংগঠনিক) সভাপতি গোপাল চট্টোপাধ্যায়ের আবার অভিযোগ, “সিপিএম এবং তৃণমূল রাজ্যে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থেকেও কোনও শিল্প গড়ে তুলতে পারেনি। ওদের জন্যই আজও তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প হল না।’’
পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, শিলান্যাস করার পরে সিপিএম দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থেকেও প্রকল্প করতে পারেনি। তৃণমূলের সরকার ক্ষমতায় আসার পরেই এনটিপিসিকে নতুন করে ১০০ একর জমি দেয়। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বিজেপি একে একে সব কিছুই বিক্রি করে দিচ্ছে। তাই কেন্দ্রীয় সংস্থা এনটিপিসি তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরি করতে পারল না। অথচ, প্রকৃত সত্য ধামাচাপা দিতে ভোটের মুখে বিরোধীরা অপপ্রচার করছে।’’