ভেঙে গিয়েছে দুর্গাপুর ব্যারাজের ৩১ নম্বর গেট। তার পরে হু-হু করে বেরোচ্ছে জল। শনিবার সকালে। ছবি: বিকাশ মশান
২০১৭-র মতো এ বারেও দুর্গাপুর ব্যারাজের গেট ভাঙাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। শনিবার দিনভর রাজনৈতিক মহলে এই বিষয়টি নিয়ে পরস্পরের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলি।এ দিন কলকাতা যাচ্ছিলেন বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ সুভাষ সরকার। তিনি রাজ্য সরকারকে তোপ দেগে বলেন, ‘‘তিন বছর আগে একবার বিপত্তি ঘটেছিল। তার পরে এতটা সময় পাওয়ার পরেও কেন একই ঘটনা ঘটল, তার জবাব দিক রাজ্য সরকার।’’
দামোদরের বন্যা থেকে অবিভক্ত বর্ধমান, বাঁকুড়া ও হুগলির নিম্ন দামোদর এলাকাকে বাঁচাতে আমেরিকার ‘টেনেসি ভ্যালি অথরিটি’র (টিভিএ) অনুকরণে ১৯৪৮-এর ৭ জুলাই দেশের প্রথম রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা হিসেবে দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন (ডিভিসি) গড়ে ওঠে। বন্যা প্রতিরোধ ছাড়াও সেচ ব্যবস্থার সম্প্রসারণ, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও শিল্পস্থাপন ছিল ডিভিসি-র লক্ষ্য। মাইথন, তিলাইয়া, তেনুঘাট, পাঞ্চেত ও কোনারে বাঁধ তৈরি হয়। একমাত্র ব্যারাজটি দুর্গাপুরে গড়ে তোলা হয় ১৯৫৫ সালে। কিন্তু তার পরে কেন সংস্কার হয়নি ব্যারাজের, সে প্রশ্ন তুলে সিপিএম রাজ্য ও কেন্দ্রীয়, দুই সরকারকেই বিঁধেছে। দুর্গাপুর পূর্বের সিপিএম বিধায়ক সন্তোষ দেবরায় বলেন, ‘‘২০১৬ থেকে ব্যারাজ সংস্কারের দাবিতে প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী, জলসম্পদমন্ত্রী-সহ সবার দফতরে বারবার চিঠি দিয়েছি। কেউ গা করেনি। এর ফল ভুগছেন সাধারণ মানুষ। জোড়াতালি দিয়ে লাভ হবে না। সাড়ে ছ’দশকের পুরনো সব গেট। বদলে নতুন গেট লাগাতে হবে।’’
তবে, তৃণমূল নেতৃত্ব ২০১৯-এর মে-তে বাঁকুড়ার বড়জোড়ায় নির্বাচনী জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণার কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। সেখানে মমতা জানিয়েছিলেন, রাজ্য সরকার ১৩০ কোটি টাকা খরচ করে ব্যারাজ সংস্কারের কাজ শুরু করেছে। দুর্গাপুর পশ্চিমের তৃণমূল ঘনিষ্ঠ কংগ্রেস বিধায়ক বিশ্বনাথ পাড়িয়াল সেই প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘‘অযথা রাজনীতি করে লাভ নেই। ২০১৭-র বিপত্তির পরে রাজ্য সরকার ব্যারাজের বাকি গেট বদল ও সংস্কারের সিদ্ধান্ত নেয়। সেই কাজ চলছে ধাপে-ধাপে। কিন্তু তা শেষ হওয়ার আগেই ফের বিপত্তি ঘটে গেল।’’ একই কথা বলেন দুর্গাপুরের তৃণমূল নেতা উত্তম মুখোপাধ্যায়ও।