তুহিনার পরিবারের সঙ্গে অধীর। নিজস্ব চিত্র।
পুরভোটের ফলপ্রকাশের দিন বর্ধমানে কলেজছাত্রী তুহিনা খাতুনের (১৮) অস্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে সোমবার পথে নামল কংগ্রেস। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর নেতৃত্বে কংগ্রেসের এক প্রতিনিধিদল মৃতার বাড়িতে যায়। অধীরের সঙ্গে ছিলেন পূর্ব এবং পশ্চিম বর্ধমান জেলা কংগ্রেসের সভাপতি-সহ অন্য নেতারাও।
মৃত তুহিনার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেন অধীর। তিনি তাঁদের বলেন, ‘‘কংগ্রেস আপনাদের পাশে আছে। কোনও রকম আইনি সহায়তা দরকার হলে আমরা পাশে থাকব। প্রয়োজনে উচ্চ আদালতে যাওয়া হবে।’’ পরে চৌধুরী বলেন, ‘‘এই বাংলা রবীন্দ্রনাথ, নজরুলের। এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এক জন মহিলা। সেখানে এ রকম একটি ঘটনা খুবই লজ্জার।’’
লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতার অভিযোগ, ভোটের আগে পরিকল্পিত ভাবে নিশানা করা হয়েছিল তুহিনাকে। তিনি বলেন, ‘‘যে ভাবে এই ঘটনায় এক জন সংখ্যালঘু ঘরের মেয়ের মর্যাদা নিয়ে কুরুচিকর আচরণ করা হয়েছে, গলায় দড়ি পড়ানোর ছবি এঁকে দেওয়া হয়েছে, তা লজ্জাজনক। গোটা রাজ্যে মহিলা ও সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণের ঘটনা ঘটেই চলেছে।’’ তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘যাঁরা এমন কাজ করে তাঁরা কি আপনার দলের লোক? এমনকি, মেয়েটির মৃত্যুর পরেও তাঁর পরিবারকে হুমকি ও ভীতিপ্রদর্শন করা হয়েছে।’’
প্রসঙ্গত, এর আগে প্রদেশ কংগ্রেসের কার্যকরী নেপাল মাহাতো এবং মহিলা কংগ্রেসের প্রদেশ মহিলা কংগ্রেসের সভানেত্রী শুভ্রা দত্তের নেতৃত্বে দু’টি প্রতিনিধিদল মৃতার বাড়িতে এসেছে।
গত বুধবার পুরভোটের ফলপ্রকাশের পর বিকেলে বর্ধমান পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাবুরবাগ মসজিদ সংলগ্ন নতুনপল্লি এলাকার বাড়িতে রাজ কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী তুহিনার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে তাকে ‘মৃত’ ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।
নবনির্বাচিত ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর বসির আহমেদের বিরুদ্ধে বর্ধমান থানায় অভিযোগ করেন মৃতার পরিবার। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ চার জনকে গ্রেফতার করে। কিন্তু তুহিনার উপর মানসিক নিপীড়নে মূল অভিযুক্ত বসিরকে পুলিশ গ্রেফতার করেনি। ঘটনার পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস সোমবার বলেন, ‘‘বিরোধীরা এ নিয়ে খামোখা বাজার গরম করতে চাইছে। পুলিশ ইতিমধ্যেই চার জনকে গ্রেফতার করেছে এবং তদন্তও চলছে। কিন্তু বিরোধী দলের নেতারা প্রতি দিন এসে এলাকায় অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছেন।’’