বৈঠক শেষ হতেই দ্বন্দ্ব দুই নেতার

বিধায়ক ও পুরপ্রধানের মধ্যে দ্বন্দ্ব শহরবাসীর চেনা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:৩৫
Share:

ফিরহাদ হাকিম।—ফাইল চিত্র।

পুর-যুদ্ধের রণকৌশল ঠিক করতে নেতাদের কলকাতায় বৈঠকে ডেকেছিলেন পর্যবেক্ষক ফিরহাদ হাকিম। একসঙ্গে কাজ করার বার্তাও দিয়েছিলেন। কিন্তু বৈঠক শেষ হতেই ঝুলি থেকে বেরিয়ে পড়ল গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।

Advertisement

সব পক্ষকে নিয়ে জাতীয় নাগরিক পঞ্জির বিরোধিতায় ডাকা মিছিলে না যাওয়ার ইঙ্গিত দিলেন বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডু। তবে যাঁকে নিয়ে তাঁর আপত্তি সেই পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ বাগ অবশ্য দলের যে কোনও নির্দেশ মানতেই রাজি। এ বার বিষয়টি নিয়ে জেলা সভাপতি বৈঠকে বসবেন বলে জানা গিয়েছে।

বিধায়ক ও পুরপ্রধানের মধ্যে দ্বন্দ্ব শহরবাসীর চেনা। দলের কোনও কর্মসূচিতেই সাধারণত একসঙ্গে দেখা যায় না তাঁদের। বিধায়ক আয়োজিত পর্যটন উৎসবে দেখা মেলে না পুরপ্রধান দেবপ্রসাদবাবুর। আবার তাঁর করা পিঠেপুলি উৎসবে পা পড়ে না বিশ্বজিৎবাবুর। আগে বহু বার বিভেদ মেটানোর চেষ্টাও হয়েছে। কিন্তু তাঁরা হাঁটেন আলাদা পথেই। যদিও দলের জেলা নেতৃত্বের দাবি, একটু সময় লাগলেও দ্বন্দ্ব মিটবে।

Advertisement

কালনা শহরের ১৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১২টি দখল করে পুরবোর্ড গড়েছিল তৃণমূল। ছ’টি আসন ছিল সিপিএমের দখলে। পরে সিপিএমের এক কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দেন। লোকসভা ভোটে অবশ্য পুর এলাকার ১২টি ওয়ার্ডে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। তৃণমূলের একাংশের দাবি, পরিস্থিতি বুঝে আগেভাগেই নেতাদের এক করতে বৈঠক ডেকেছিলেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী তথা পর্যবেক্ষক ফিরহাদ হাকিম। সংরক্ষণের চূড়ান্ত তালিকা বার হওয়ার পরে কলকাতার বৈঠকের উদ্দেশ্যই ছিল দলের রণকৌশল ঠিক করা। সেই মতো মঙ্গলবার হাজির হয়েছিলেন দলের পূর্ব বর্ধমান জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথ, জেলা পরিষদের সহ সভধিপতি দেবু টুডু, কালনা ২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি প্রণব রায়, বিধায়ক বিশ্বজিৎবাবু এবং পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ বাগ। কালনা পুরসভা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় সেখানে।

তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকে কালনার পর্যবেক্ষক হিসাবে দেবু টুডুর নাম ঘোষণা করেন পুরমন্ত্রী। একই সঙ্গে স্বপনবাবুকে জানান, জেলায় সংগঠনকে শক্তিশালী করতে ব্লকে ব্লকে দলীয় পর্যবেক্ষক তৈরি করতে হবে। একসঙ্গে কাজ করে ১৮টি ওয়ার্ডে জেতারও বার্তা দেন। ওই বৈঠকে ঠিক হয়, আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি শহরে এনআরসি বিরোধী সভা আয়োজন করা হবে কালনা শহরে। ওই সভায় পুরমন্ত্রী নিজেও হাজির থাকতে পারেন। কিন্তু দলীয় সূত্রের খবর, বৈঠক মেটার পরেই বিধায়ক তাঁকে জানিয়ে দেন, সভায় পুরপ্রধান হাজির থাকলে তাঁর থাকতে আপত্তি রয়েছে।

এর পরেই বিষয়টি নিয়ে নাড়াচাড়া শুরু হয় দলীয় স্তরে। সন্ধ্যায় বিধায়ক বলেন, ‘‘আমি আগেও ওঁর ব্যাপারে দলকে জানিয়েছি। তবে সভায় হাজির থাকব কি না রাতে স্বপনদার সঙ্গে বৈঠকের পরেই ঠিক করব।’’ দেবপ্রসাদবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমার কারও সঙ্গে সভা করতে বা হাঁটতে কোনও আপত্তি নেই। দল যেমন নির্দেশ দেবে সেই মতোই চলব।’’ কালনার নতুন পর্যবেক্ষক দেবুবাবু বলেন, ‘‘বৈঠকে ববিদা (পুরমন্ত্রী) সকলকে নিয়ে চলার নির্দেশ দিয়েছেন। ১৩ তারিখের সভায় কালনার বিধায়ক, পুরপ্রধান সকলকেই ডাকা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement