কেতুগ্রামের উদ্ধারণপুর থেকে জুরানপুর ফেরিঘাট। ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়
শহরে আসতে গেলে ভাগীরথী পার হওয়া ছাড়া উপায় নেই কেতুগ্রাম ২ ব্লকের একটা বড় অংশের মানুষের। ব্যবসার প্রয়োজন, অফিস, কলেজ সব ক্ষেত্রেই কেতুগ্রামের শাঁখাই ও উদ্ধারণপুর ফেরিঘাটের উপরে নির্ভর করতে হয় এলাকার বাসিন্দাদের। পঞ্চায়েত ভোটের মুখে ওই দুই ফেরিঘাটের উন্নয়ন ও নদীর দু’প্রান্তে জেটি নির্মাণের দাবিতে সরব হয়েছেন বাসিন্দারা।
কাটোয়া শহর আর কেতুগ্রামের মাঝে ভাগীরথী ছাড়াও রয়েছে অজয়। শাঁখাই গ্রামে অজয় ও ভাগীরথীর মিলনস্থল। মুর্শিদাবাদের সঙ্গেও যোগাযোগ এই পথে। কেতুগ্রাম ও কাটোয়া শহর দিয়ে প্রতিদিন এই ফেরিঘাট ব্যবহার করেন দুই জেলার বহু মানুষ। পণ্য পারাপারেও বড় মাধ্যম শাঁখাই ফেরিঘাট। উদ্ধারণপুরের ফেরিঘাটে মানুষজন কম পারাপার হলেও সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রচুর পণ্য ও গবাদি পশু পারাপার হয়। কিন্তু দুটি ফেরিঘাটেই কোনও জেটি নেই। এলাকাবাসীর দাবি, প্রতি বর্ষায় নদী পারাপার করা মুশকিল হয়ে পড়ে। বার বার অস্থায়ী ভাবে ফেরিঘাট সরিয়ে যাত্রীদের নৌকায় তোলা, মালপত্র ওঠানামা করা হয়।
গত কয়েক বছরে ভাগীরথীর ভাঙনের জেরে শাঁখাই ফেরিঘাটের অবস্থাও বিপজ্জনক। কাটোয়ার দিকে বাঁধানো কংক্রিটের পাড় ভেঙে জলে তলিয়ে গিয়েছে। বেশ কয়েক বার জায়গা পাল্টে অস্থায়ী ভাবে বাঁশ দিয়ে বানানো হলেও সমস্যা মেটেনি। একই অবস্থা নদীর অপর প্রান্ত শাঁখাইয়েও। যাত্রীদের দাবি, আলো, বসার জায়গার মতো ন্যূনতম পরিষেবাটুকুও নেই। ছাউনি না থাকায় রোদ-বৃষ্টিতে অসুবিধারও দাবি করেছেন তাঁরা। শাঁখাই গ্রামের গিরিধারী দাস, উদ্ধারণপুর গ্রামের প্রদীপ মজুমদারদের দাবি, ‘‘ফেরিঘাটটি বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। যে কোনও সময়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। দু’প্রান্তে জেটি নির্মাণ খুবই জরুরি।’’
সিপিএম নেতা তমাল মাঝির দাবি, ‘‘তৃণমূল ফেরিঘাট নিয়ে কোনও কাজ করেনি। ভোটের মুখে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে।’’ পূর্ব বর্ধমান জেলা (কাটোয়া) বিজেপি সভাপতি গোপাল চট্টোপাধ্যায়ও বলেন, ‘‘আমরা ক্ষমতায় আসলে বিষয়টি নিয়ে উদ্যোগী হব।’’ কেতুগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক শেখ সাহানেওয়াজের দাবি, ‘‘আমরা অনেক আগেই ওই দুই ফেরিঘাটের জেটি নির্মাণের পদক্ষেপ নিয়েছি। ভাঙন রোধ করে স্থায়ী ফেরিঘাট করা হবে।’’