এমনই হাল রাস্তার। এ পথেই চলছে যাতায়াত। নিজস্ব চিত্র
চালুর পরে এক মাসও কাটেনি। তার মধ্যেই বর্ধমানের মূল রেল সেতুতে ওঠার সংযোগকারী রাস্তায় কোথাও পিচ উঠে গিয়েছে, কোথাও বা পিচ বসে গর্ত তৈরি হয়েছে। পূর্ত দফতর (বর্ধমান ডিভিশন ১) জানায়, বিষয়টি নিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে সেতুর নির্মাণকারী সংস্থা আরভিএনএল-কে (রেল বিকাশ নিগম লিমিটেড)।
ঘটনাচক্রে, এই সেতুর উদ্বোধনের সময়েই আরভিএনএল বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায়, বর্ধমানের রেলসেতু গাড়ি চলাচলের উপযুক্ত নয়। অনেক কাজ বাকি রয়েছে। অথচ, ওই বিজ্ঞপ্তির তিন দিনের মাথায় ২৭ সেপ্টেম্বর রেল জানায়, সেতুতে গাড়ি চলাচলে অসুবিধা নেই। ওই দিন বিকেল থেকেই সেতুটি দিয়ে ভারী যান, বাস-সহ অন্য গাড়ি চলাচল শুরু হয়। তার পরে এই সমস্যার কথা জানিয়ে পূর্ত দফতর চিঠি দিয়েছে। যদিও, আরভিএনএল-এর দাবি, সেতুর সংযোগকারী রাস্তায় ‘ম্যাস্টিক’ বসানোর গাড়ি কয়েক দিন ধরে দাঁড়িয়ে থাকায় রাস্তার এমন হাল।
জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, “একাধিক সমস্যার কথা তুলে ধরে সেতুর নির্মাণকারী সংস্থাকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।’’ জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আরভিএনএলের এগজ়িকিউটিভ অধিকর্তা, সহকারী জেনারেল ম্যানেজার পর্যায়ের আধিকারিকদের চিঠি দিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে, দ্রুত সমস্যা সমাধান না-করলে সেতুতে গাড়ি চলাচল বিপজ্জনক হতে পারে।
কেন বিপজ্জনক? পুলিশের ব্যাখ্যা, বর্ধমান পুরসভার দিকে সংযোগকারী রাস্তায় ওঠার মুখে ‘স্পিড ব্রেকার’ থাকলেও নামার দিকে তা নেই। ফলে, দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। তা ছাড়া, কাটোয়ার দিকে ‘সিগন্যাল’ ব্যবস্থা নেই। খামতি রয়েছে দিক্নির্দেশ করার ক্ষেত্রেও। এই পরিস্থিতিতে সেতু নির্মাণকারী সংস্থার ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে পুলিশ। জেলা পুলিশের ডিএসপি (সদর) শৌভিক পাত্র বলেন, ‘‘কোথায়-কোথায়, কী-কী সমস্যা রয়েছে, তা আরভিএনএল-এর কর্মীকে দেখানো হলেও লাভ হয়নি।’’ আরভিএনএল অবশ্য সমস্যা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে পুলিশ সেতুটি দিয়ে মোটরবাইক, তিন চাকার গাড়ি ও পথচারীদের যাতায়াত করতে দিচ্ছে না। প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সমস্যাগুলি নিয়ে দ্রুত বৈঠক হবে।
সেতুর মেহেদিবাগানের দিকে সংযোগকারী রাস্তায় শনিবার গিয়ে দেখা গেল, পিচের উপরে ভারী গাড়ির চাকার দাগ। ফলে, রাস্তার একাংশ এবড়ো-খেবড়ো হয়ে গিয়েছে। পুরসভার দিকে রাস্তায় গর্ত হয়ে গিয়েছে। আবার কাটোয়ার দিকে সংযোগকারী রাস্তায় পিচের ‘চটা’ উঠতে শুরু করেছে।
পূর্ত দফতরের এগজ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার (বর্ধমান ডিভিশন ১) ভজন সরকারের দাবি, “আরভিএনএল-কে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তারা ঠিক করে দেবে বলেছে।’’ আরভিএনএল-এর তরফে ওই সেতুর দায়িত্বে থাকা আধিকারিক হায়দার আলিরও আশ্বাস, “কোথায়, কী সমস্যা হচ্ছে, তা সরেজমিনে দেখে ঠিক করে দেওয়া হবে।’’