Attempt to Die

স্বামীর কাজ ফিরে পেতে তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে ‘সময় কাটানোর’ শর্ত! নিজেকে শেষ করার চেষ্টা মহিলার

অভিযোগ, স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে রাত্রিবাস করলেই স্বামীর কাজ ফিরবে এমন কুপ্রস্তাবও নাকি দেওয়া হয়েছিল। সেই প্রস্তাবে সম্মতি না দেওয়ায় লাগাতার হুমকি মিলতে থাকে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০২৪ ২৩:৩৬
Share:

প্রতীকী ছবি

রাত্রিবাস করলেই স্বামীর কাজ ফিরিয়ে দেওয়া হবে, এমনই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল এক বধূকে। নির্যাতনের ভয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি। এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়াল পশ্চিম বর্ধমান জেলার দুর্গাপুরে। অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে।

Advertisement

এলাকার মদের দোকান বন্ধ করা হোক বা বিভিন্ন সমস্যা— সব সময়ই এগিয়ে আসতেন তিনি। অভিযোগ, স্থানীয় তৃণমূল নেতারা নাকি ভাল ভাবে নেননি বিষয়টি। তার জেরেই ওই মহিলার স্বামীর কাজ চলে যায়। সেই কাজ ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে সরব হয়েছিল ওই মহিলা। আরও অভিযোগ, স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে রাত্রিবাস করলেই স্বামীর কাজ ফিরবে এমন কুপ্রস্তাবও নাকি দেওয়া হয়েছিল। সেই প্রস্তাবে সম্মতি না দেওয়ায় লাগাতার হুমকি মিলতে থাকে। অভিযোগ, সেই ভয়ে ‘সুইসাইড নোট’ লিখে গৃহবধূ আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন।

স্থানীয় সূত্রে খবর, পশ্চিম বর্ধমান জেলার দুর্গাপুরের নিউ টাউনশিপ থানার নবীন পল্লি এলাকার বাসিন্দা বাপি অঙ্কুর। কাজ করতেন দুর্গাপুরের ইন্দোআমেরিকান মোড়ের একটি বেসরকারি স্পঞ্জ আয়রন কারখানায়। তাঁর স্ত্রীকে এলাকার মহিলাদের নিয়ে অবৈধ মদের দোকানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে দেখা গিয়েছে। অভিযোগ সেই মদের দোকান ছিল সুকুমার বাউরি, বিল্লি এবং বিশু নামের এলাকার তথাকথিত তিন তৃণমূল নেতার।

Advertisement

তার পরেই দেখা যায়, ঠিকাদারি কাজ হারান বাপি। অভিযোগ, তাঁর স্ত্রী মদের দোকান নিয়ে প্রতিবাদ করায় বাপিকে কাজ থেকে তাড়িয়ে দেন ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল নেতৃত্ব। স্বামীর ঠিকাদারি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি তোলেন ওই মহিলা। অভিযোগ, তার পরেই সুকুমাররা তাঁকে কুপ্রস্তাব দিতে থাকেন। সেই কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় লাগাতার হুমকি দেওয়ারও অভিযোগ ওঠে। সেই ভয়েই সুইসাইট নোট লিখে শুক্রবার দুপুরে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি।

ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে ওই মহিলাকে উদ্ধার করে প্রথমে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা অপর্ণা বাউরি দাবি করেন, ‘‘গোটা এলাকায় মদ আর জুয়ার রমরমা বাজার। বিল্লি, সুকুমার, বাদল এবং ভীষ্ম নামের তৃণমূলের নেতারা এই অবৈধ কাজের সঙ্গে যুক্ত। লোকসভা নির্বাচনের আগে সেই মদের দোকান বন্ধ করতেই প্রতিবাদে নেমেছিলেন ওই মহিলা। নির্বাচনের ফলাফলের দু’দিন পর এলাকায় মারধর এবং অত্যাচার শুরু করেছে সুকুমারা। ওই মহিলার স্বামীকে ঠিকাদারির কাজ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।’’ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছেন স্থানীয়েরা।

দুর্গাপুরের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর দেবব্রত সাঁই বলেন, ‘‘একটা ঝামেলা হয়েছিল শুনেছিলাম। এই মহিলারা মদের দোকান বন্ধের জন্য প্রতিবাদ ও করেছিল বলে শুনেছিলাম। আমি উভয়পক্ষকে নিয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করলেও এক পক্ষ আসেনি। তার পর এত কিছু হয়েছে তা আপনাদের কাছে জানলাম। থানায় অভিযোগ হলে পুলিশকে বলব কড়া ব্যবস্থা নিক।’’

আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি পূর্ব অভিষেক গুপ্ত জানান, এখনও পর্যন্ত থানায় ওই মহিলার পরিবারের পক্ষ থেকে কোনও লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি। অভিযোগ জমা পড়লে তার ভিত্তিতে তদন্ত করা হবে। যাতে আইন-শৃঙ্খলার কোন অবনতি না হয় তার জন্য পুলিশ সব রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। পুলিশ সূত্রে খবর, বিল্লি নামে এক তৃণমূল নেতাকে আটক করেছে পুলিশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement