‘দুয়ারে সরকার’-এর ব্যানারের উপরে লাগানো হচ্ছে সংগঠনের সমাবেশের ব্যানার। নিজস্ব চিত্র
সরকারি কর্মসূচির মাঝেই শাসক দলের প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের সমাবেশ আয়োজনের অভিযোগ উঠল কালনার পুরশ্রী মঞ্চে। তার জেরে বুধবার ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্পের পরিষেবা বেশ কিছু ক্ষণ মেলেনি বলে অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধীরা। যদিও ওই সংগঠন ও তৃণমূলের নেতাদের দাবি, সরকারি কর্মসূচিতে বিঘ্ন না ঘটিয়েই মধ্যাহ্নভোজের বিরতির সময়ে সমাবেশ সারা হয়েছে।
দুয়ারে সরকার কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন, বুধবার সকাল থেকেই ভিড় ছিল পুরশ্রী মঞ্চের শিবিরে। বিভিন্ন টেবিলে সরকারি কর্মীরা মানুষজনের আবেদন জমা নিচ্ছিলেন। দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ সেখানে শিক্ষক সমাবেশের আয়োজন শুরু হয়। মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দেওয়া প্রকল্পের ব্যানারের উপরে শিক্ষক সংগঠনের ব্যানার লাগানো হয়। ধীরে-ধীরে তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষা সেলের নেতা-কর্মীরা মঞ্চে জড়ো হতে থাকেন। টেবিল থেকে উঠে যান সরকারি কর্মীরা। খানিক পরে সেখানে যান তৃণমূলের রাজ্যের অন্যতম মুখপাত্র দেবু টুডু, জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, কালনা পুরসভার প্রশাসক দেবপ্রসাদ বাগ-সহ বেশ কিছু নেতা। দেবুবাবু সভায় দলের প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের সদস্যদের প্রচারে কোনও খামতি না রাখার আর্জি জানান। স্বপনবাবু দুয়ারে সরকার কর্মসূচি সফল করতে প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে শিক্ষকদেরও এগিয়ে আসার ডাক দেন।
এই সমাবেশ চলাকালীন বহু মানুষ ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচিতে আবেদন জানাতে আসেন। শেষে লাগোয়া একটি ঘরে একটি কাউন্টার খুলে পরিষেবা চালু করেন সরকারি কর্মীরা। এক কর্মীর কথায়, ‘‘একই জায়গায় সমাবেশ চলাকালীন মানুষকে পরিষেবা দেওয়া সম্ভব নয়। তাই বাধ্য হয়ে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের জন্য আর একটি কাউন্টার খোলা হয়েছিল।’’ নানা প্রকল্পে নাম লেখাতে আসা মানুষজনের অনেকের শিক্ষক-সমাবেশ শেষ হওয়ার পরে দুপুর আড়াইটে নাগাদ ফের ওই মঞ্চে পরিষেবা চালু করেন সরকারি কর্মীরা।
বিজেপির রাজ্য তফসিলি মোর্চার সহ-সভাপতি ধনঞ্জয় হালদারের দাবি, ‘‘এই ঘটনার কথা শুনে স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছি। সরকারি ব্যানার ঢাকা দিয়ে যে ভাবে সংগঠনের ব্যানার ঝুলিয়ে অনুষ্ঠান করা হয়েছে, তা অনৈতিক। মানুষ হয়রানির শিকার হয়েছেন।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি স্বপনবাবুর পাল্টা দাবি, ‘‘সমাবেশ তো অল্প সময়ের জন্য হয়েছে। তাতে কোনও অসুবিধা হবে না।’’ দেবুবাবুর বক্তব্য, ‘‘সরকারি কর্মসূচির মধ্যাহ্নভোজের সময়ে অনুষ্ঠানটি হয়েছে।’’ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষা সেলের জেলা সভাপতি তপন পোড়েলেরও দাবি, ‘‘অনুষ্ঠানের জন্য আগেই আমরা হল বুকিং করেছিলাম। সরকারি কর্মসূচির মধ্যাহ্নভোজের বিরতির সময়ে সমাবেশ সেরে ফেলেছি। সরকারি পরিষেবায় কোনও সমস্যা হয়নি।’’
এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়ার জন্য বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও মহকুমাশাসক (কালনা) সুমনসৌরভ মোহান্তি ফোন ধরেননি। জবাব মেলেনি মেসেজেরও।