WAlling

দেওয়াল লিখনের ‘লড়াই’ শুরু নানা দলের

কর্মসূচির পাশাপাশিই চলছে ‘দেওয়াল-যুদ্ধ’।

Advertisement

প্রণব দেবনাথ ও সুপ্রকাশ চৌধুরী

কাটোয়া ও বর্ধমান শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২০ ০১:৫৩
Share:

বাঁ দিকে, কাটোয়ায় চলছে দেওয়াল লেখা। মাঝে ও ডান দিকে, বর্ধমান শহরের দেওয়ালে। নিজস্ব চিত্র।

ভোট আসতে এখনও কয়েকমাস বাকি আছে। তবে তার জন্য রাজনৈতিক দামামা কার্যত বেজে গিয়েছে। ভোট-প্রচারের প্রস্তুতি হিসেবে শুরু হয়ে গিয়েছে ‘দেওয়াল দখল’। লাল, সবুজ থেকে গেরুয়া— নানা রঙের পোঁচ পড়ছে দেওয়ালে। কেউ কেউ আবার চুন লেপে দেওয়াল ‘দখল’ করে রাখছেন আগেভাগে।

Advertisement

করোনা আবহের মধ্যেই নানা কর্মসূচি নিতে শুরু করেছিল রাজনৈতিক দলগুলি। পুজোর পরে বিভিন্ন জায়গায় বিজয়া সম্মিলনী আয়োজন করে প্রস্তুতির বার্তা দিয়েছেন তৃণমূল নেতারা। বুথ স্তরে সংগঠনের হাল জানতে নানা সম্মেলন করা হয়েছে। তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, নিষ্ক্রিয় কর্মীদের সক্রিয় করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে স্থানীয় নেতাদের। সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের নানা সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ও বিজেপির বিরোধিতায় গ্রাম থেকে শহর, নানা এলাকায় নিয়মিত সভা-মিছিল করা হয়েছে তৃণমূলের তরফে। বিজেপি-ও ‘আর নয় অন্যায়’, ‘গৃহসম্পর্ক’ কর্মসূচি নিয়ে নেমে পড়েছে পাড়ায়-পাড়ায়। তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগেও বিভিন্ন বিক্ষোভ কর্মসূচি হচ্ছে দলের তরফে। কৃষির নানা সমস্যা, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির মতো বিষয় নিয়ে নিয়মিত কর্মসূচির আয়োজন করছে বামেরাও।

এ সব কর্মসূচির পাশাপাশিই চলছে ‘দেওয়াল-যুদ্ধ’। কয়েকদিন আগে দেওয়াল লেখা নিয়ে বিজেপি-তৃণমূলের বিবাদে তেতে ওঠে বর্ধমান শহরের ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড। পরস্পরের বিরুদ্ধে দেওয়াল দখলের অভিযোগ করে দু’পক্ষই। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্ধমান শহরের শ্যামলাল, মিঠাপুকুর এলাকায় বেশ কিছুদিন আগেই দেওয়াল লিখনে নেমে পড়েছেন তৃণমূল কর্মীরা। ১৫ নম্বর-সহ কয়েকটি ওয়ার্ডে দেওয়াল লেখা শেষ বলে তাঁদের দাবি। তৃতীয় বার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ্যমন্ত্রী করার ডাক দিয়ে কাটোয়াতেও দেওয়াল লিখনে নেমেছেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। দাঁইহাটের যুব তৃণমূল নেতা শুভেন্দু দাসের দাবি, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন, তাতে আমরা নিশ্চিত, তৃণমূলই ফের ক্ষমতায় আসবে। তাই সময় নষ্ট না করে দেওয়াল লিখন শুরু করেছি।’’

Advertisement

পিছিয়ে নেই সিপিএম-বিজেপিও। বর্ধমান শহরের ছোটনীলপুরে দেওয়াল লিখতে দেখা যায় বিজেপির কর্মীদের। তাঁরা জানান, ‘আর নয় অন্যায়’ স্লোগান দিয়ে লেখা দেওয়াল লিখন চলছে। নীলপুর বাজারে আবার দেওয়াল লিখতে দেখা গিয়েছে সিপিএমকে। নানা জায়গায় সাদা রং করে দলের প্রতীক এঁকে দেওয়াল লিখনের প্রস্তুতি সেরে রাখা হয়েছে। বর্ধমানের বিজেপি নেতা কল্লোল নন্দনের দাবি, তাঁরা শহরে ইতিমধ্যে প্রায় আড়াইশো দেওয়াল লিখে ফেলছেন। এসএফআই-এর জেলা সম্পাদক অনির্বাণ রায়চৌধুরীর আবার দাবি, তাঁরাও ইতিমধ্যে শ’খানেক দেওয়াল লিখেছেন।

তৃণমূলের রাজ্যের অন্যতম মুখপাত্র দেবু টুডুর দাবি, ‘‘মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান। তাই তাঁর নামেই দেওয়াল লেখা শুরু হয়েছে।’’ বিজেপির জেলা (কাটোয়া) সভাপতি কৃষ্ণ ঘোষের পাল্টা দাবি, ‘‘তৃণমূলের ভাঁওতাবাজি মানুষ বুঝে গিয়েছেন। তাই ওদের প্রস্তুতি কোনও কাজে আসবে না।’’ কাটোয়ার সিপিএম নেতা অঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের আবার বক্তব্য, ‘‘তৃণমূল ও বিজেপি, দুই দলকেই মানুষ প্রত্যাখান করবেন। আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement