Coal Smuggling

অভিযান, তবুও রাশ নেই ‘চুরিতে’

ইসিএলের সালানপুর এরিয়া কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত দু’মাসে অন্তত চার বার বেগুনিয়া কোলিয়ারির লাগোয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রায় সাড়ে চারশো টন কয়লা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বারাবনি শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০২০ ০০:২৪
Share:

সম্প্রতি কয়লা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল বেগুনিয়ায়। নিজস্ব চিত্র

ধারাবাহিক অভিযান, কয়লা বাজেয়াপ্ত করার মতো নানা ঘটনা ঘটেছে ইসিএলের সালানপুর এরিয়ার বারাবনির বেগুনিয়া কোলিয়ারি লাগোয়া এলাকায়। কিন্তু সংস্থা সূত্রে জানা যায়, এর পরেও সে ভাবে কয়লার অবৈধ কারবারে লাগাম টানা যায়নি। এর জন্য অবৈধ খনি এবং নতুন খোলামুখ খনির চারপাশে বেড়া না দেওয়াকেই দায়ী করছেন সংস্থার আধিকারিকেরা। বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে তৃণমূল-বিজেপি রাজনৈতিক চাপান-উতোরও।

Advertisement

ইসিএলের সালানপুর এরিয়া কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত দু’মাসে অন্তত চার বার বেগুনিয়া কোলিয়ারির লাগোয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রায় সাড়ে চারশো টন কয়লা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে অবৈধ কয়লা পরিবহণের কাজে ব্যবহৃত স্কুটার, মোটরবাইক ও সাইকেল। কিন্তু কয়লা-চোর সন্দেহে কারও নাগাল পাওয়া যায়নি। এই পরিস্থিতিতে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ইসিএলের কর্তারা জানাচ্ছেন, চলতি অর্থবর্ষ শেষ হতে আর কয়েক দিন বাকি। সংস্থার এ বারের কয়লা উত্তোলনের লক্ষ্যমাত্রা, ৫ কোটি ৩০ লক্ষ টন। কিন্তু কয়লা চুরিতে লাগাম দেওয়া না গেলে সে লক্ষ্যপূরণের ক্ষেত্রে কিছুটা সমস্যা হতে পারে বলে মনে করছেন সংস্থার কর্মীরা।

কিন্তু কেন লাগাম পরানো যাচ্ছে না? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এরিয়ার এক আধিকারিকের দাবি, কয়লা-শিল্পের রাষ্ট্রায়ত্তকরণের আগে থেকেই এই খনি লাগোয়া বনাঞ্চলে প্রচুর অবৈধ খনি রয়েছে। দুষ্কৃতীরা সেই সব খনি থেকে নিয়মিত কয়লা তুলছে। মাঝে-মধ্যে খনি কর্তৃপক্ষ অবৈধ খনিগুলি ভরাট করলেও অভিযানের কয়েক দিন পরে ফের শুরু হয় কারবার। তবে এরিয়ার জিএম প্রশান্ত কুমারের দাবি, ‘‘সম্প্রতি বেগুনিয়ায় একটি নতুন খোলামুখ তৈরি করা হয়েছে। খনির চারপাশে এখনও কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হয়নি। তাই এলাকারই কেউ কেউ রাতে ওই খনিতে ঢুকে অবৈধ উপায়ে খনি থেকে কয়লা কাটছেন। সাইকেল, মোটরবাইক বা স্কুটারে চাপিয়ে জঙ্গল ঘেরা এলাকায় কয়লা জমা করা হয়। পরে সুবিধা মতো ট্রাক্টরে চাপিয়ে তা পাচার করা হচ্ছে।’’ তবে সিআইএসএফ ধারাবাহিক অভিযান চালাচ্ছে বলে দাবি প্রশান্তবাবুর। সেই সঙ্গে রাতপাহারা, খনির চার পাশে বেড়া দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানান ওই আধিকারিক।

Advertisement

এ দিকে, কাদের ‘মদতে’ চলছে এই অবৈধ কারবার, তা নিয়ে চাপান-উতোর তৈরি হয়েছে বিজেপি-তৃণমূলে। সম্প্রতি কয়লা-চুরি বন্ধের দাবিতে বিজেপি সালানপুর এরিয়া কার্য়ালয়ে বিক্ষোভ দেখায়। দলের জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের অভিযোগ, ‘‘তৃণমূলের একাধিক নেতা, কর্মী কয়লার অবৈধ কারবারে জড়িত। দেশের সম্পদ নষ্ট করা হচ্ছে। গ্রাম ও শহরকে বিপন্ন করা হচ্ছে।’’ অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি অসিত সিংহের অবশ্য প্রতিক্রিয়া, ‘‘বারাবনিতে বিজেপি-তে এখন লোক নেই। তাই হালে পানি পেতে কয়লা চুরির মতো বিষয়কে সামনে রেখে তৃণমূলকে কালিমা লিপ্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement