আসানসোলে রাস্তায় জমে রয়েছে জল, আবর্জনা। ছবি: পাপন চৌধুরী papan.news@gmail.com
দুর্গাপুরের পরে, এ বার ডেঙ্গি আক্রান্তের হদিস মিলল আসানসোল মহকুমায়। আসানসোল পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মহকুমায় আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ২০।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) শেখ মহম্মদ ইউনুস বলেন, “আসানসোল পুর-এলাকায় ডেঙ্গির প্রকোপও তেমন নেই। ১৭ থেকে ২০ জনের আক্রান্তের খবর মিলেছে। তবে জেলায় এই মুহূর্তে আক্রান্তের সংখ্যা ১৩০ জনের মতো।” কিন্তু বিরোধী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ পুর-পরিষেবা নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, জেলা স্বাস্থ্য দফতরের সতর্কতার পরেও, পুরসভার হুঁশ ফিরছে না। যদিও অভিযোগ মানতে চাননি পুর-কর্তৃপক্ষ।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, গত বার আসানসোলে ভয়াবহ অবস্থা হয়েছিল। এ বার এখনও পরিস্থিতি উদ্বেগজনক নয় বলে দাবি। কিন্তু পাশের শহর দুর্গাপুরের পরিস্থিতি দেখে আসানসোল পুর-কর্তৃপক্ষকেও বেশ কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা। সিএমওএইচ শেখ মহম্মদ ইউনুস জানান, শহরের জনবসতিপূর্ণ অঞ্চলে যেন জমা জল না থাকে, নিয়মিত নালা ও বর্জ্য সাফাইয়ের উপরেও জোর দিতে বলা হয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, সেই পরামর্শ উপেক্ষিত হচ্ছে।
বুধবার কালীপাহাড়ি, বার্নপুর, উষাগ্রাম, গোপালপুর, আসানসোল উত্তর থানা লাগোয়া এলাকায় দেখা গেল, যেখানে সেখানে জল জমে রয়েছে। ডাঁই হয়ে আছে আবর্জনা। নালা উপচে জল রাস্তার উপর দিয়ে বইছে। শহরের মোটর গ্যারাজের টায়ারে জল জমে আছে। মশার লার্ভাও ভেসে বেড়াতে দেখা গিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে সিএমওএইচ বলেন, “পুর-কর্তৃপক্ষকে নিয়মিত নিকাশি ও বর্জ্য সাফাই করার জন্য বলেছি। গ্যারাজে টায়ারে জল যাতে না জমে, সে বিষয়ে মালিককে আমরা অনুরোধ করতে পারি। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নিতে পারিনা। কারণ, এটি স্বাস্থ্য দফতরের অধীন নয়। পুর-কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে তাঁরা ব্যবসা করেন।”সিএমওইচ জানান, দফতরের পতঙ্গ বিশেষজ্ঞেরা ঘুরে ঘুরে এ বিষয়ে মানুষজনকে সচেতন করছেন। কিন্তু এই জেলায় মাত্র দুজন পতঙ্গ বিশেষজ্ঞ রয়েছেন। তাঁদের পক্ষে নিয়মিত জেলার সর্বত্র ঘুরে সচেতনতা প্রচার করা সম্ভব নয়।
এ দিকে, বিজেপির জেলা মুখপত্র বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “নাগরিক পরিষেবা দিতে হলে যে মানসিকতা প্রয়োজন, তৃণমূলের কোনও নেতা-মন্ত্রী বা জনপ্রতিনিধির মধ্যে সেটা নেই।”অভিযোগ অস্বীকার করে আসানসোলের মেয়র বিধান উপাধ্যায়ের দাবি, শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “তবু অভিযোগ যখন উঠেছে, খতিয়ে দেখে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।”