তোলা নিয়ে তরজা, জামালপুরে তৃণমূল নেতা ও ঠিকাদারের বিরোধ চরমে

তোলা নিয়ে ঠিকাদারের সঙ্গে তৃণমূল নেতার বিরোধ চরমে উঠল পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের পাঁচড়া গ্রামে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জামালপুর শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০২০ ১৩:২৬
Share:

নিজস্ব চিত্র।

তোলা নিয়ে ঠিকাদারের সঙ্গে তৃণমূল নেতার বিরোধ চরমে উঠল পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের পাঁচড়া গ্রামে। তৃণমূল নেতা প্রেমনাথ ঘোষাল সেখানকার ঠিকাদারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনেছেন। অন্যদিকে ঠিকাদার জ্যোতি চন্দ জানিয়েছেন, ওই তৃণমূল নেতা তাঁর কাছে তোলা চেয়েছিলেন। তা না দেওয়ায় তাঁকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন।

Advertisement

জামালপুরের পাঁচড়া গ্রামে বাড়ি তৃণমূল নেতা প্রেমনাথের। তাঁর স্ত্রী সোমা তৃণমূল পরিচালিত জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য। পাঁচড়া পঞ্চায়েতের কয়েকটি কাজের বিষয়ে তথ্য জানতে চেয়ে গত ৫ নভেম্বর তথ্য জানার আধিকার আইনে তিনি চিঠি দেন। প্রেমনাথের অভিযোগ, তিনি আরটিআই করেছেন জানার পরেই ঠিকাদাররা তাঁকে ফোনে হুমকি দেন। আরটিআই প্রত্যাহার না করলে তাঁকে ও তাঁর স্ত্রী-পুত্রকে খুনের হুমকি দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ ওই তৃণমূল নেতার।

যদিও তৃণমূল নেতা প্রেমনাথের আনা অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন ঠিকাদার জ্যোতি। তিনি পুলিশের কাছে প্রেমনাথের বিরুদ্ধে পাল্টা তোলা চাওয়ার অভিযোগ দায়ের করেছেন। জ্যোতি ও তাঁর সহযোগী ঠিকাদারদের অভিযোগ, ভয় দেখিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে প্রেমনাথ ঠিকাদারদের কাছ থেকে তোলা আদায় করছেন। দুর্গাপুজোর আগে তাঁদের কাছে প্রেমনাথ মোটা টাকা তোলা চেয়েছিলেন বলে দাবি জ্যোতির। সেই টাকা দিতে না চাওয়াতেই আরটিআই করে তাঁদের বেকায়দায় ফেলতে চাইছেন তৃণমূল নেতা। এ ব্যাপারে জ্যোতি বলেছেন, ‘‘আরটিআই করার জন্য আমাদের বিল পেমেন্ট পেতে দেরি হবে। তাই প্রেমনাথ আরটিআই করে আমাদের বেকায়দায় ফেলতে চাইছেন। অপর ঠিকাদার বাপি ঘোষ এবং সমীরণ ঘোষ জানিয়েছেন, আরটিআই প্রত্যাহার করে নেবার আবেদন জানাতে তাঁরা কয়েকদিন আগে প্রেমনাথের বাড়ি গেলে তিনি ২০ হাজার টাকা দাবি করেন।

Advertisement

ঠিকাদার জ্যোতির অভিযোগ, “প্রেমনাথ ঘোষাল শুধু ঠিকাদারদের কাছ থেকেই তোলা আদায় করেন না। রেশন ডিলার, ইট ভাটা মলিক, বালি খাদান মালিক সবার কাছ থেকে তোলা আদায়। প্রেমনাথ পাল্টা বলেন, ‘‘জ্যোতি চন্দ বাম আমলে সিপিএম পার্টির হয়ে নেতাগিরি করত। এখন তৃণমৃলের কয়েকজনকে পটিয়ে ঠিকাদারি কাজ করে পয়সা লুঠছে। তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদের জন্য আদালতেও যাওয়ার হুমকি দিয়েছেন প্রেমনাথ।

ঘটনা নিয়ে জামালপুর ব্লক তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি প্রদীপ পাল বলেছেন, “ঘটনার কথা শুনেছি। দুই পক্ষই থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। এই বিষয়ে পুলিশ তদন্ত করে যা ব্যবস্থা নেওয়ার নেবে। যদি কেউ তোলা আদায় করে থাকেন প্রশাসন তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। দল তার পাশে থাকবে না।” অন্যদিকে বিজেপির জামালপুর বিধানসভার আহ্বায়ক জিতেন ডকাল বলেন,‘‘কাটমানি ও তোলা আদায়কারীরাই তৃণমূলের সম্পদ। ঠিকাদাররা যে অভিযোগ তুলেছে তা একশো শতাংশ সত্যি। কাটমানি ও তোলা আদায় করেই তৃণমূল নেতারা যে বিত্তশালি হয়েছেন তা গোটা রাজ্যের মানুষই জানেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement