ভাঙচুরের পরে। নিজস্ব চিত্র
তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে ঝামেলার জেরে উত্তেজনা ছড়াল অণ্ডালের ময়রা কোলিয়ারি এলাকায়। দু’পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ তুলেছে। তবে পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার রাত পর্যন্ত কোনও তরফ থেকে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সকালে বিজেপি নেতা গীতা সিংহের সঙ্গে তৃণমূল কর্মী স্বপন বাউরির বচসা হয়েছিল। পরে দু’দলের বেশ কিছু সমর্থক জড়ো হলে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তখনকার মতো ঝামেলা মিটে যায়।
গীতাবাবুর অভিযোগ, ‘‘সোমবার দুপুর ১২টা নাগাদ মোটরবাইকে করে বাড়ি ফিরছিলাম। বাড়ির অদূরে দক্ষিণখণ্ড পঞ্চায়েতের উপপ্রধান অনন্ত ঘোষ, স্বপন বাউরি-সহ জনা পঁচিশ তৃণমূল কর্মী-সমর্থক আমাকে তাড়া করে। তাদের হাতে কাটারি, ভোজালি ও আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। ভয়ে দ্রুত বাইক চালিয়ে স্থানীয় আকুড়িয়াপাড়ায় এক পরিচিতের বাড়িতে আশ্রয় নিই।’’ কিছুক্ষণ পরে ময়রা কোলিয়ারি এলাকায় নিজের বাড়িতে ফেরেন গীতাবাবু। তাঁর দাবি, “খেতে বসেছিলাম। হঠাৎ খবর পাই অনন্ত দলবল নিয়ে আমার বাড়ির দিকে আসছে। সপরিবার বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাই।’’ এর পরে তাঁর বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। মেয়ের বিয়ের জন্য রাখা গয়না নিয়ে ‘হামলাকারীরা’ পালিয়েছে বলেও অভিযোগ গীতাবাবুর।
গোলমালের খবর পেয়ে এলাকায় পুলিশ পৌঁছয়। অনন্তবাবুর দাবি, ‘‘মিথ্যা অভিযোগ। পেশায় দিনমজুর স্বপন বাউরি গীতা সিংহের কাছ থেকে মাস দু’য়েক আগে কিছু টাকা ধার নিয়েছিল। রবিবার সেই টাকা ফেরত চাইলে স্বপন ‘লকডাউন’ উঠে গেলে ধার, শোধ করে দেবে বলেছিল। তা নিয়ে দু’জনের মধ্যে বচসা হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যস্থতায় তা মিটেও যায়।’’ বরং সোমবার গীতাবাবু স্বপনবাবুর উপরে হামলা চালান বলে অভিযোগ অনন্তবাবুর।
অভিযোগ অস্বীকার করেছেন গীতাবাবু। তাঁর পাল্টা দাবি, ‘‘ধার-দেনার কোনও সম্পর্ক নেই। রবিবার আমি ময়রা বাসস্ট্যান্ডে একটি দোকানে গিয়েছিলাম। স্বপন আমাকে গালিগালাজ করেছিল। তার পর থেকে অনন্ত আমাকে একাধিক বার বিজেপি করলে, এলাকা ছাড়তে হুমকি দিয়েছে। থানায় অভিযোগ জানালে কোনও লাভ হবে না বলেও অনন্ত হুঁশিয়ারি দিয়েছে।”
বিজেপির আসানসোল জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘড়ুইয়ের মন্তব্য, ‘‘পুরসভা নির্বাচনের দামামা বাজতে শুরু করেছে। তাই ভয়ে দিকে দিকে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতে হামলা চালাচ্ছে তৃণমূল।’’ প্রসঙ্গে তৃণমূলের জেলা সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, “এই ঘটনায় দলের কেউ জড়িত থাকার বিষয় প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”