৬১ নম্বর ওয়ার্ডের এই এলাকাটি নিয়েই তরজা। নিজস্ব চিত্র
ইস্কোর একটি পুকুর বুজিয়ে সেটির জায়গা দখল করার অভিযোগ উঠেছে। আর এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে তুঙ্গে উঠেছে বিজেপি-তৃণমূল তরজা। দু’পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে এ বিষয়ে মদত জোগানোর অভিযোগ করেছে। ইস্কো-র কাছে মৌখিক অভিযোগ জনানো হয়েছে বলেও দু’দলের দাবি।
আসানসোল পুরসভার ৬১ নম্বর ওয়ার্ডের কুলটি নিয়ামতপুর নিউ রোড এলাকায় চিত্তরঞ্জন রোড লাগোয়া অঞ্চলে রয়েছে পুকুরটি। ইস্কো কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, বীরেন মুখোপাধ্যায়ের মালিকানাধীন আমল থেকে সংশ্লিষ্ট পুকুরটি ইস্কোর সম্পত্তি। কিন্তু দীর্ঘ বহু বছর সংস্কার না হওয়ায় পুকুরটিতে জল প্রায় নেই। সেটির উপরে স্থানীয়েরা এই পুকুরে নিয়মিত আবর্জনা ফেলায় অনেকাংশ বুজে গিয়েছে।
সম্প্রতি সেখানে গিয়ে দেখা গিয়েছে, আরও আবর্জনা ফেলে পুকুরটি বুজিয়ে ইচ্ছে মতো দখল করছেন কয়েক জন। স্থানীয় মহিলা পূর্ণিমা সিংহের বক্তব্য, “প্রতিদিনই এক দল বহিরাগত পুকুর ভরাট করে দখল করছে। আমরা স্থানীয় বাসিন্দারা তা হলে বাদ যাব কেনো! ইস্কো কখনও যদি পুকুর কাটে, আমরা উঠে যাব।” এই পরিস্থিতিতে জল জমার আশঙ্কা করছেন লাগোয়া প্রিয়া কলোনির বাসিন্দারা। তাঁরা জানান, এমনিতে ওই কলোনিটি আশপাশের অঞ্চলের চেয়ে অপেক্ষাকৃত নিচু। বর্ষায় একটু ভারী বৃষ্টি হলেই কলোনিতে কোমর সমান জল দাঁড়ায়। বাড়িতেও জল ঢোকে। পুকুরটি থাকার জন্য বৃষ্টির জল দ্রুত নেমে যেতে পারত। কিন্তু এখন তা বুজিয়ে অবৈজ্ঞানিক ভাবে অবৈধ নির্মাণ তোলা হলে এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। পুরো এলাকা জলমগ্ন হবে। স্থানীয় বাসিন্দা রীতেশ দে বলেন, “আমরা চাই পুকুর বুজিয়ে দখলের চেষ্টা বন্ধ হোক।” তাঁরা বিষয়টি পুরসভাকেও জানিয়েছেনবলে দাবি।
এ দিকে, বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। কুলটির তিনটি বরোর দায়িত্ব প্রাপ্ত তথা পুরসভার মেয়র পারিষদ (মহিলা স্বনির্ভর) ইন্দ্রাণী মিশ্রের দাবি, “পুকুরটি ইস্কোর সম্পত্তি। স্থানীয় জলের সমস্যা মেটানো, নিকাশি ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখতে এটির ভূমিকা আছে। জলাশয় ভরাট করে তা দখল করা অপরাধ। এলাকার বিজেপি নেতৃত্বের মদতে এই অবৈধ কাজ চলছে। পুরসভার তরফে ইস্কোর কাছে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। ইস্কো চুপ করে থাকলে আমরা পদক্ষেপ করব।” অভিযোগ অস্বীকার করে বিজেপির ওয়ার্ড সভাপতি কাঞ্চনকুমার সিংহের বক্তব্য, “তৃণমূলের মদতপুষ্ট হয়ে এক দল জমি-মাফিয়া এই অন্যায় কাজ করছে। বহিরাগতদের কাছে চড়া দামে সে জমি বিক্রিও করছে তারা। ইস্কো ও পুরসভার কাছে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে।”
পাশাপাশি, বিষয়টি নিয়ে ইস্কোর জিএম (জনসংযোগ দফতর) ভাস্কর কুমার বলেন, “সংস্থার এস্টেট দফতরের তরফে খোঁজখবর করে পদক্ষেপ করা হবে।”