প্রতীকী ছবি।
সিবিআই-এর পরে এ বার সিআইডি। রাষ্ট্রায়ত্ত কয়লা উত্তোলক সংস্থা ইসিএলের বিশেষ টাস্ক ফোর্সের তিন জন সাব-ইনস্পেক্টর মনোজ লাঙ্গাডে, পবন কুমার ও গৌরীপ্রসাদ বটব্যালকে জিজ্ঞাসাবাদ করল রাজ্যের সিআইডি। কয়লা-‘চুরি’ সংক্রান্ত কিছু বিষয়ে এই জিজ্ঞাসাবাদ বলে সূত্রের দাবি। সংবাদমাধ্যমের একাংশের কাছে জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়টি স্বীকার করেছে ইসিএলের নিরাপত্তা বিভাগ।
মঙ্গলবার ইসিএলের চিফ অব সিকিওরিটি শৈলেন্দ্রকুমার সিংহ বলেন, “গত সপ্তাহে সিআইডি-র মুখোমুখি হয়েছিলেন ওই তিন জন। তাঁরা নির্দিষ্ট প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন।” চেষ্টা করেও সংশ্লিষ্ট তিন জনের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে, ইসিএলের নিরাপত্তা বিভাগ সূত্রে দাবি, ওই তিন অফিসার টাস্ক ফোর্সের হয়ে ভাল করেছেন। তাঁদের কয়লা চুরির পদ্ধতি সংক্রান্ত কিছু বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিআইডি।
কিন্তু কী সূত্রে এই জিজ্ঞাসাবাদ? সিআইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরের জুনে পশ্চিম বর্ধমানের জামুড়িয়ায় এক ব্যক্তির গ্যারাজ থেকে টাকা বোঝাই একটি গাড়ি উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার তদন্ত শুরু করে সিআইডি। ওই টাকার সঙ্গে অবৈধ কয়লা কারবারের যোগসূত্র পাওয়া যায় বলে দাবি। ওই মাসেই জামুড়িয়ায় অবৈধ কয়লা বোঝাই একটি ট্রাক ধরে পুলিশ। সে সূত্রে মিশবাউল হক নামের এক কয়লা কারবারিকে গ্রেফতার করে সিআইডি। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ওমপ্রকাশ আগরওয়াল, যুধিষ্ঠীর মিশ্র, অভিষেক সিংহ ও বিজয় সিংহ নামে চার জন কয়লা কারবারিকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁদের থেকে পাওয়া যায় বসিরহাটের ব্যবসায়ী আবদুল বারিক বিশ্বাসের নাম। সিআইডি সূত্রে দাবি, বারিক ও তাঁর এক সঙ্গী সঞ্জয় মালিক ২০০০ সালে বারাবনির চরণপুর রেল সাইডিং থেকে প্রায় ১,৮১৭ টন কয়লা ‘চুরি’ করেছিলেন। এই পুরো ঘটনার তদন্ত প্রক্রিয়ার অঙ্গ হিসেবেই সম্প্রতি ওই তিন অফিসারকে জিজ্ঞাসাবাদ।
ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে ২০১৯-এর ২ সেপ্টেম্বর সংস্থার নিরাপত্তা বিভাগের অধীনে কয়লা চুরি বন্ধের লক্ষ্যে টাস্ক ফোর্সটি তৈরি করা হয়েছিল। ইসিএল হেড কোয়ার্টার-সহ বিভিন্ন এরিয়ায় কর্মরত ২১ জন অফিসার ও কর্মীকে নিয়ে এটিতৈরি হয়।
ঘটনাচক্রে, কয়লা-চুরি সংক্রান্ত বিষয়ে এই প্রথম টাস্ক ফোর্সের দিকে তদন্তকারীদের নজর পড়ল, তা নয়। বছর দুয়েক আগে কুনুস্তরিয়া এরিয়ায় কর্মরত টাস্ক ফোর্সের সাব ইনস্পেক্টর ধনঞ্জয় রাইয়ের অফিস ও বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছিল সিবিআই। ওই সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান ধনঞ্জয়। পরে সিবিআই আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে কয়লা চুরি মামলার যে চার্জশিট জমা দেয়, তাতে ধনঞ্জয়ের নামযোগ করা হয়।