Chittaranjan Locomotive Works

পাঁচশোরও বেশি ইঞ্জিন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চিত্তরঞ্জন শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০২১ ০৯:৪৭
Share:

সিএলডব্লিউ-তে ‘ভেন্ডরস-মিট’। বুধবার। —নিজস্ব চিত্র

২০২১-২২ অর্থবর্ষে পাঁচশোটিরও বেশি রেল ইঞ্জিন তৈরির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে বলে জানাল চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভ ওয়ার্কস (সিএলডব্লিউ)। তবে কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে আরও বেশি করে বেসরকারি সংস্থা থেকে যন্ত্রাংশ কেনার উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে। এর বিরোধিতায় শ্রমিক সংগঠনগুলির দাবি, কারখানাতেই তৈরি হোক যন্ত্রাংশ। তাতে কারখানাতেই বিনিয়োগ বাড়বে। এলাকায় কর্মসংস্থানও হবে।

Advertisement

বুধবার সিএলডব্লিউ-র তরফে একটি ‘ভেন্ডরস-মিট’ (‌বেসরকারি অনুসারী শিল্প সংস্থাগুলি, যারা কারখানায় রেল ইঞ্জিনের প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ সরবরাহ করে) আয়োজন করা হয়। ওই কর্মসূচির শেষে কারখানার জেনারেল ম্যানেজার সতীশকুমার কাশ্যপ জানান, চলতি অর্থবর্ষে তাঁরা প্রায় ৩৯০টি রেল ইঞ্জিন তৈরি করতে পারবেন। করোনা-পরিস্থিতির কারণে এই সংখ্যা গত বারের তুলনায় কম। সতীশকুমারের দাবি, ‘‘আগামী অর্থবর্ষে আমরা পাঁচশোরও বেশি ইঞ্জিন তৈরি করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছি। এ জন্য বেসরকারি অনুসারী শিল্প সংস্থার কাছ থেকে আরও বেশি করে যন্ত্রাংশ আমদানি করা হবে। এ জন্য খরচ হবে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা।’’

সিএলডব্লিউ সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে প্রায় এক হাজার বেসরকারি অনুসারী শিল্প সংস্থার নাম নথিভুক্ত রয়েছে এই কারখানায়। আরও পাঁচশো নতুন সংস্থার নাম নথিভুক্ত করানোর লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। কারখানার জিএম-এর দাবি, ‘‘বর্তমানে প্রায় ৮০ শতাংশ যন্ত্রাংশ বেসরকারি অনুসারী শিল্পগুলি থেকে কেনা হয়। এ জন্য চলতি বছরে খরচ হয়েছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা।’’

Advertisement

তবে এর বিরোধিতায় সরব হয়েছে শ্রমিক সংগঠনগুলি। আইএনটিইউসির কারখানা ইউনিটের কার্যকরী সভাপতি নেপাল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তের ফলে, কারখানার শ্রমিক-কর্মীদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। এমনকি, ইঞ্জিনের গুণমানও প্রশ্নের মুখে পড়ছে।’’ সিটু নেতা তথা চিত্তরঞ্জন লেবার ইউনিয়নের সম্পাদক রাজীব গুপ্তের আশঙ্কা, ‘‘এই সিদ্ধান্তের সূত্রে মনে হচ্ছে, কারখানাটি ক্রমশ বেসরকারিকরণের পথে চলেছে। এর ফলে, বেকার যুবকেরা ভবিষ্যতে কাজ পাবেন না।’’ দুই শ্রমিক নেতার অভিযোগ, ২০১৯-এর গোড়াতেই এই কারখানাকে ‘কর্পোরেট’ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল মন্ত্রক।

যদিও কর্তৃপক্ষের দাবি, কারখানার ইঞ্জিনের গুণমানের সঙ্গে আপস করা হবে না। কারখানা কর্তৃপক্ষ জানান, এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে, সুলভ মূল্যে উচ্চ গুণমানের যন্ত্রাংশ পাওয়া গেলে, তা নেওয়া যেতে পারে। তাতে কারখানার লাভের পাশাপাশি, অনুসারী শিল্পগুলিও উপকৃত হবে। ইতিমধ্যে ছ’হাজার অশ্বশক্তির ইঞ্জিন তৈরি করে সুফল মিলেছে। দেশের দ্রুতগতির যাত্রী ট্রেনের ইঞ্জিন বানিয়েও সাফল্য এসেছে। মালবাহী রেলের জন্য উচ্চ ক্ষমতার ন’হাজার অশ্বশক্তির ইঞ্জিনও তৈরি করা হয়েছে। কারখানার জেনারেল ম্যানেজার দাবি করেছেন, ‘‘আগামী অর্থবর্ষে গোটা দেশের জন্য প্রায় ১,১০০ রেল ইঞ্জিন লাগবে। এর অর্ধেকেরও বেশি ইঞ্জিন তৈরি হবে চিত্তরঞ্জনের কারখানায়। শুধু ইঞ্জিনের গুণমানের কারণেই এই পরিমাণ বরাত মিলছে রেলবোর্ড থেকে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement